জলবায়ুর বদল থেকেই বিপদের মুখে জনস্বাস্থ্য

প্রায় ফি-বছরের ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গি তো আছেই। তারই মধ্যে কখনও হানা দিচ্ছে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস তো কখনও সোয়াইন ফ্লু! এত সব রোগের নিত্য হানাদারির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মতে, জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আগামী দিনে সব থেকে বড় বিপদ জলবায়ুর পরিবর্তনই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৩
Share:

প্রায় ফি-বছরের ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গি তো আছেই। তারই মধ্যে কখনও হানা দিচ্ছে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস তো কখনও সোয়াইন ফ্লু! এত সব রোগের নিত্য হানাদারির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মতে, জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আগামী দিনে সব থেকে বড় বিপদ জলবায়ুর পরিবর্তনই।

Advertisement

বুধবার কলকাতায় বিশ্ব জনস্বাস্থ্য কংগ্রেসের উদ্বোধনে এই ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, জনস্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদেই বিভিন্ন দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ দেশে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কখনও তার প্রভাব পড়েছে কৃষি ক্ষেত্রে, কখনও আবার লাগাতার দুর্যোগে বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। শুধু এগুলিই নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা ভেক্টরবাহিত রোগও বাড়ছে। এ দেশে ডেঙ্গি বা জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ চলছে কয়েক বছর ধরেই। গত বছর ইবোলার প্রকোপে আফ্রিকায় প্রচুর মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব চন্দ্রকিশোর মিশ্র এ দিনের অনুষ্ঠানে বলেন, “জলবায়ু বদলের ফলে ভেক্টরবাহিত রোগ বাড়ছে। এগুলির মধ্যে কয়েকটি ছোঁয়াচে নয়। সাম্প্রতিক তথ্যে উঠে এসেছে, দেশের মধ্যে ছোঁয়াচে নয়, এমন রোগেই ৬০ শতাংশ মানুষ মারা যান।”

Advertisement

একই সুর ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেনগিসতু আসনাকের গলায়। তিনি জানান, সারা বিশ্বেই জনস্বাস্থ্যের উপরে প্রভাব ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তন। এটা আটকানোর পথ বার করতে না-পারলে সমূহ বিপদ। কী ভাবে পথ মিলতে পারে?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরেই প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন বসছে। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আলোচনা করবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বলেন, “এ ব্যাপারে একগুঁয়ে নেতৃত্ব প্রয়োজন।” তবে আরও কিছুটা এগিয়ে আছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা পুনম ক্ষেত্রপাল সিংহ। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য পরিষেবা যাতে সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছয়, সেটা অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে। নইলে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কোনও রকম উন্নতি করা যাবে না।”

এই বিপদ রুখতে কোনও দেশ যে একা খুব বেশি সফল হতে পারবে না, তা-ও উঠে এসেছে আলোচনায়। ‘কমনওয়েলথ নেশনস’-এর মহাসচিব কমলেশ শর্মা জানান, এ ব্যাপারে একটি উন্নত কম্পিউটার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা সেই ব্যবস্থায় পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। এই যোগাযোগ-প্রযুক্তির সাহায্যে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার মোকাবিলা করা সহজ হবে। “আমরা একটি মঞ্চ তৈরি করতে চাই, যেখানে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবেন,” বলছেন কমলেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement