এক বালকের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল কালনায়। বুধবার রাতে কালনা ২ ব্লকের হাসনহাটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মৃত বালকের নাম অজয় মালিক (৮)। গ্রামেরই একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত সে।
অজয়ের বাবা বিকাশ মালিক ও দাদু সনাতন মালিকের অভিযোগ, অসুস্থ ছেলেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসক ঠিকমতো চিকিৎসা করেননি। এমনকী তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন।
বিকাশবাবু জানান, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ অন্ধকারেই ভাত খাচ্ছিল অজয়। হঠাৎ ‘কিছু একটা কামড়াল’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে। আলো এনে দেখতেই সে জানায়, বড্ড জ্বালা করছে। তাঁদের দাবি, কামড়ানোর দাগ দেখতে না পেলেও পায়ের একটা জায়গা নীল হয়ে গিয়েছিল। তৎক্ষণাৎ অজয়কে স্থানীয় বৈদ্যপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে চিকিৎসক অসিতবরণ সাহাকে বিষয়টি জানানো হয়। অভিযোগ, চিকিৎসক বলেন, ‘ছেলেটির গায়ে মাটি-নোংরা লেগে রয়েছে। আগে ভাল করে স্নান করিয়ে আনুন’। সেই মতো স্নান করিয়ে আনার পরে অজয়কে দেখে অসিতবাবু জানান, ইঁদুর বা ছুঁতো জাতীয় কিছু কামড়েছে। সেই মতো ইঞ্জেকশনও দেন তিনি। অজয়কে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন বিকাশবাবুরা।
তবে বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ পরেই আবার জ্বালা করছে বলে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। অজয়। ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। তবে অজয়ের বাড়ির লোকেরা ছেলেকে সাপে ছোবল মেরেছে ভেবে তাকে এলাকারই এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সেই ওঝা জানান, ওটা সাপেরই ছোবল এবং অজয়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথাই বলেন। রাত ১টা নাগাদ হাসপাতালে ওই ছাত্রটিকে নিয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তার মৃত্যু হয়েছে। পরে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়।
বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক অসিতবরণবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কালনা ২ এর বিএমওএইচ সুজয় গুহও বলেন, “আমি দুটো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার্জে রয়েছি। এ দিন কালনায় ছিলাম না। তবে ঘটনার কথা শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেব।”
কালনা মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “যে কোনও সরকারি হাসপাতালে কোনও কিছুর কামড় খেয়ে কেউ ভর্তি হলে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। না রাখা হলে সেটি ত্রুটি তো বটেই। তবে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে আমি এখনও যোগাযোগ করতে পারিনি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।”