দুর্গাপুর হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের কানপুরে চিকিৎসকদের উপরে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে দেশ জুড়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর ডাকা কর্মবিরতিতে সামিল হলেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালেও ডাক্তারেরাও। কিন্তু এক অভিনব পদ্ধতিতে। বহির্বিভাগের নিজস্ব কক্ষে না বসে চিকিৎসকেরা রোগীদের দেখলেন বাইরে চেয়ার-টেবিল পেতে। চিকিৎসকেরা জানান, সাধারণ মানুষ যাতে চিকৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্যই এমন উদ্যোগ। হাসপাতালের অন্য অবশ্য বিভাগে প্রতি দিনের মতো কাজ হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি কানপুরে একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরার সময়ে স্থানীয় এক বিধায়কের সঙ্গে এক চিকিৎসকের বচসার জেরে পুলিশ স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ আইএমএ-র। সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা দুর্গাপুর হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার মিহির নন্দী দাবি করেন, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ ২৬ জন জুনিয়র ডাক্তারের নামে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছে। তারই প্রতিবাদে সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। তাঁর আরও দাবি, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশে প্রায় তিনশো সিনিয়র ডাক্তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
দুর্গাপুর হাসপাতাল অবশ্য ডাক্তারের তা পালন করলেন কার্যত প্রতীকি ভাবে। মিহিরবাবু জানান, শুধু বহির্বিভাগে কর্মবিরতি হয়। চিকিৎসকেরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। কিন্তু পরিষেবা কোনও ভাবে বিঘ্নিত না করে। সব চিকিৎসক বহির্বিভাগে নিজের কক্ষ ছেড়ে বাইরে টেবিল-চেয়ার পেতে রোগী দেখেছেন। প্রয়োজন মতো রোগীদের হাসপাতালে ভর্তিও করেছেন। মিহিরবাবু বলেন, “আমাদের আন্দোলনে যেন কোনও রোগীর অসুবিধা না হয়, তাই এ ভাবে কর্মবিরতি পালন করা হল।”
এ দিন হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায় বহির্বিভাগের বাইরে পাতা চেয়ার-টেবিলের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন। তাঁদের মধ্যে এক জন রণজিৎ দাস বলেন, “হাসপাতালে এসে ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুনে চিন্তায় পড়েছিলাম। কিন্তু এই ব্যবস্থা দেখে আশঙ্কা দূর হল।” মিহিরবাবু দাবি করেন, দেশের অনেক জায়গাতেই এ দিন বহির্বিভাগ বন্ধ করে কর্মবিরতি হলেও দুর্গাপুরে এমন অভিনব উপায়ে তা পালন করা হল।
আসানসোল হাসপাতালে অবশ্য এ দিন কোনও কর্মবিরতি হয়নি বলে জানা গিয়েছে। আইএমএ-র কোলফ্লিড কমিটির চেয়ারম্যান প্রভাসচন্দ্র মাজি বলেন, “কানপুরের ঘটনা নিয়ে যে দাবি ছিল, তা মিটে গিয়েছে বলে জেনেছি। তাই এ দিন আসানসোলে আর কর্মবিরতিতে যাইনি আমরা।