এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু

ক্ষতিপূরণ চেয়ে উত্তরকন্যা অভিযান কংগ্রেসের

এনসেফ্যালাইটিসে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সঙ্গে রাজ্য বিধানসভায় শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি তুলল কংগ্রেস। এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পরে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগে উত্তরবঙ্গের ৩ স্বাস্থ্যকর্তাকে সাসপেন্ড করেছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যা অভিযানের প্রকাশ্য সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হয়, সে সময় থেকেই রাজ্য সরকার সব তথ্য জানতেন। অধীরবাবুর দাবি এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চিঠি দিলেও রাজ্য উদ্যোগী হয়নি। রোগের প্রকোপ রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং কবে স্বাস্থ্য দফতর সব তথ্য জেনেছে সে সব জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করে কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৫
Share:

উত্তরকন্যা অভিযানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শুক্রবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

এনসেফ্যালাইটিসে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সঙ্গে রাজ্য বিধানসভায় শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি তুলল কংগ্রেস। এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পরে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগে উত্তরবঙ্গের ৩ স্বাস্থ্যকর্তাকে সাসপেন্ড করেছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যা অভিযানের প্রকাশ্য সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হয়, সে সময় থেকেই রাজ্য সরকার সব তথ্য জানতেন। অধীরবাবুর দাবি এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চিঠি দিলেও রাজ্য উদ্যোগী হয়নি। রোগের প্রকোপ রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং কবে স্বাস্থ্য দফতর সব তথ্য জেনেছে সে সব জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করে কংগ্রেস।

Advertisement

অভিযানের প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখেন প্রদেশ সভাপতি থেকে শুরু করে সাংসদ মৌসম বেনজির নূর এবং অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন, কেশব রায়, মনোজ চক্রবর্তী প্রমুখেরা। সকলেই এনসেফ্যালাইটিসে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন। রায়গঞ্জ বা উত্তরবঙ্গের অন্যত্র এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হলে উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিস বা ফরেস্ট ম্যালেরিয়ার প্রকোপ ছড়াত না বলেও তাঁদের অভিযোগ।

মূলত এনসেফ্যালাইটিসের ক্ষতিপূরণের দাবিকে সামনে রেখেই শুক্রবার শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যা অভিযান করে কংগ্রেস। তিনবাতি মোড় এলাকায় জুনিয়র হাইস্কুল মাঠে সভা করে অধীরবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেসকর্মীরা উত্তরকন্যার দিকে মিছিল করতে শুরু করেন। তিনবাতি মোড়েই পুলিশ কর্মীরা মিছিল আটকে দিলে খানিকক্ষণ ধস্তাধস্তিও হয় কংগ্রেস কর্মীদের। অধীরবাবু, শঙ্করবাবুরা সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। এরপরে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল উত্তরকন্যায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা একটি স্মারকলিপি জমা দেন। সেই দলে অধীরবাবু না থাকলেও প্রদেশ নেতা তথা বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা সহ উত্তরবঙ্গের নেতারা ছিলেন।

Advertisement

এ দিনের অভিযানের ভিড় অবশ্য আশানুরূপ হয়নি বলে দলের কিছু নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হবে বলে দলের প্রদেশ নেতারা দাবি করেছিলেন। যদিও এ দিন সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হিন্দি হাইস্কুলের মাঠের একাংশ খালি ছিল। এমনকী প্রদেশ নেতাদের বক্তব্য চলাকালীন মাঠে পেতে রাখা চেয়ারের অনেকগুলি ফাঁকাই ছিল। এ বিষয়ে সভা চলার সময়ে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারকে বারবার কর্মী সমর্থকদের সর্তক করে দিতে শোনা যায়। শঙ্করবাবু সহ অন্য নেতাদের অবশ্য দাবি, এ দিন সকাল থেকে চড়া রোদ থাকায় কর্মী সমর্থকদের একাংশ মাঠে না থেকে আশেপাশের ছায়ায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনেছেন। মূলত মালদহ এবং শিলিগুড়ি ছাড়া অন্য কোনও জেলা থেকে বেশি সংখ্যায় সমর্থকরা না আসাতেই ভিড় আশানুরূপ হয়নি বলে নেতাদের ব্যাখ্যা।


কংগ্রেসের উত্তরকন্যা অভিযান।

এ দিনের সভায় উত্তরবঙ্গের চা বাগানের পরিস্থিতি শোচনীয় বলে অভিযোগ করেছেন অধীরবাবু। নিছক লোক দেখানোর জন্য শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা তৈরি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি উত্তরকন্যা নানা দুর্নীতির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা উত্তরকন্যা থেকে খরচ হলেও তার কোনও হিসেবই নেই বলে তাঁর অভিযোগ। মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর উত্তরকন্যাকে রাজ্য সরকারের ‘সৎকন্যা’ বলে কটাক্ষ করেন। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্য এখনও উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনা করে যাচ্ছে।” রায়গঞ্জে সম্ভব না হলে, উত্তরবঙ্গেই অন্য কোথায় এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবি জানান তাঁরা।

পাল্টা কটাক্ষ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যা উদ্বোধনের পরে দিশেহারা হয়ে কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি সকলেই উত্তরকন্যাকে নানা ভাবে আক্রমণের লক্ষ করছেন। গৌতমবাবু বলেন, “যে কেউ যত ইচ্ছে চেষ্টা করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ বাসিন্দারা এ সব বিশ্বাস করছেন না। সে কারণে সমাবেশ নিয়ে যা বলা হয়েছিল, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল হয়নি।”

এ দিন মঞ্চ থেকে আগামীতে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে উত্তরবঙ্গে কনভেনশন করে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেন অধীরবাবু। সমাবেশের একেবারে শেষে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক সিপি যোশী এসে পৌঁছন। দিল্লিতে বিজেপি সরকারের প্রতি বাসিন্দাদের মোহভঙ্গ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement