আসানসোলে অবশেষে চালু ডায়ালিসিস ইউনিট

কাজ শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে আগেই। তবে অবশেষে কাজ শেষ হয়ে আসানসোল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হওয়ায় স্বস্তিতে চিকিৎসক থেকে শহরবাসী, সকলেই। আসানসোল জেলা হাসপাতালে সম্প্রতি চালু হয়ে গিয়েছে এই ডায়ালিসিস ইউনিট। বাম আমলেই এই হাসপাতালে ডায়ালিসিস কেন্দ্র চালুর দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই সময়ে এ ব্যাপারে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আসানসোলকে স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মহকুমা হাসপাতাল জেলা হাসপাতালে উন্নীত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
Share:

জেলা হাসপাতালে নতুন ইউনিট। নিজস্ব চিত্র।

কাজ শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে আগেই। তবে অবশেষে কাজ শেষ হয়ে আসানসোল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হওয়ায় স্বস্তিতে চিকিৎসক থেকে শহরবাসী, সকলেই।

Advertisement

আসানসোল জেলা হাসপাতালে সম্প্রতি চালু হয়ে গিয়েছে এই ডায়ালিসিস ইউনিট। বাম আমলেই এই হাসপাতালে ডায়ালিসিস কেন্দ্র চালুর দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই সময়ে এ ব্যাপারে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আসানসোলকে স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মহকুমা হাসপাতাল জেলা হাসপাতালে উন্নীত হয়। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতর এখানে ডায়ালিসিস ইউনিটটি তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগী হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ইউনিটের কাজ শুরু হয়। তবে কাজ চলছিল বেশ ঢিমে তালে। সময় মতো কাজ না শেষ হওয়ায় সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় স্বাস্থ্য বিভাগকে। কিছু দিন আগে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এ নিয়ে ক্ষোভ চেপে রাখেননি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব ওঙ্কার সিংহ মিনাও। যত শীঘ্র সম্ভব এই ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়ে যান তিনি। তার পরেই দ্রুত কাজ শেষ করে ইউনিটটি চালু করা হয়। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, “এ বার থেকে অনেক কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন আসানসোল ও আশপাশের জেলার রোগীরা।”

Advertisement

সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা গেল না কেন? স্বাস্থ্য দফতরের কিছু কর্তার দাবি, হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক রোগীদের বেসরকারি কেন্দ্রে ডায়ালিসিস করতে পাঠিয়ে সেখান থেকে কমিশন নেন। সেই চিকিৎসকদের একাংশ চাইছিলেন না, সরকারি উদ্যোগে ডায়ালিসিস কেন্দ্র চালু হোক। তাই কাজ হচ্ছিল ঢিমে তালে। শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তারা বিষয়টি নিয়ে নড়াচড়া শুরু করার পরে কাজ শেষ হয়। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস অবশ্য দাবি করেন, “ডাক্তারদের অভিযোগ ঠিক নয়।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্র তৈরির জন্য স্বাস্থ্য দফতরের খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। বেসরকারি সংস্থার তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ খরচেই এখানে পরিষেবা পাবেন রোগীরা। ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, ঝাঁ চকচকে বাতানুকূল কামরায় এক সঙ্গে পাঁচ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থেকে এসেছিলেন পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আগে বাইরে থেকে এই চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা খরচ করেছি। এখন সরকারি হাসপাতালে এসে সুরাহা হচ্ছে।”

হাসপাতালের সুপার নিখিলবাবু দাবি করেন, আসানসোলে এত উন্নত মানের যন্ত্র আর কোথাও নেই। তিনি জানান, কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট বিভাগের প্রধান রাজেন পাণ্ডের সঙ্গে এখানকার চিকিৎসকেরা যোগাযোগ রেখে চিকিৎসা করছেন।

ডায়ালিসিস কেন্দ্রটির পাশাপাশি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) কাজও প্রায় শেষের পথে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা। তিনি জানান, বিদেশ থেকে কিছু যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে। সেগুলি এলেই এই ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে। ইউনিটের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের সহকারী সুপার কঙ্কন রায় জানান, ১২ শয্যার কেন্দ্র তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। আট জন চিকিৎসক সেটির তত্ত্বাবধানে থাকবেন। হাসপাতালের ডাক্তারদের দাবি, এই ইউনিটটি চালু হলে বর্ধমান-সহ চার জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement