শরীরের ৬৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল তাঁর। যার ৪৫ শতাংশই ছিল ‘থার্ড ডিগ্রি ডিপ বার্ন’ অর্থাৎ পোড়ার ক্ষত অনেকটাই গভীর। কোমর, হাত, পা, তলপেট-কোনও অংশই বাকি ছিল না। ইএম বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে যখন বনগাঁর অনন্যা জায়সবালকে আনা হয়েছিল, তখন তিনি প্রায় অচেতন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বাজি পোড়ানোর সময়ে গায়ে আগুন ধরে গিয়েছিল তাঁর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টা না কাটলে কিছুই বলা যাবে না। শেষ পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই নতুন জীবন পেয়েছেন ৪২ বছরের অনন্যা।
ডিসান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অনন্যার রক্তচাপ অস্বাভাবিক কমে গিয়েছিল। সংক্রমণের ভয়ও ছিল ষোলো আনা। বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হতে শুরু করেছিল। ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল তাঁকে। পাশাপাশি, তাঁর অতিরিক্ত ওজনও চিকিৎসকদের সমস্যার কারণ ছিল। পোড়ার ক্ষত সারাতে স্কিন গ্রাফটিং প্রয়োজন হয়। স্থূল ব্যক্তির মেদের কারণে চিকিৎসকদের পক্ষে স্কিন গ্রাফটিং রীতিমতো দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়।
এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও বিকল্পও ছিল না। ডিসান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসকেরা সবরকম ঝুঁকি নিয়েই কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে এবং বার্ন ইউনিটে সংক্রমণ আটকানোর যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অস্ত্রোপচার করেন। এখন অনন্যাদেবী বিপন্মুক্ত তো বটেই, এমন কী বাড়িও ফিরেছেন।
শহরের প্লাস্টিক সার্জনদের একটা বড় অংশের মতে, ৬৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার পরে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা খুবই কম। অতিরিক্ত ওজনও সুস্থ হওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে। সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে এ ক্ষেত্রে ওই মহিলা যে সুস্থ জীবনে ফিরতে পেরেছেন তা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছেন তাঁরা।