হোয়াট্সঅ্যাপে কি বিপদ ঘনাচ্ছে ? কী ভাবে হ্যাক্ড হচ্ছে অ্যাকাউন্ট? ফাইল চিত্র।
হোয়াট্সঅ্যাপে যে কোনও সময়ে ঢুকে যেতে পারে স্পাইঅয়্যার। কোনও অজানা বা সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক না করলেও হ্যাকাররা কব্জা করে নিতে পারে আপনার অ্যাকাউন্ট। গত এক মাসে প্রায় ২৪টি দেশের শতাধিক মানুষ বিপদে পড়েছেন। তাই বারে বারেই সতর্ক করছে হোয়াট্সঅ্যাপ।
কী সমস্যা দেখা দিচ্ছে?
হোয়াট্সঅ্যাপের তরফে জানানো হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হোয়াট্সঅ্যাপের অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে সাইবার প্রতারকেরা। তার জন্য কোনও লিঙ্কের মাধ্যমে ম্যালঅয়্যার বা স্পাইঅয়্যার পাঠানো হচ্ছে না। কেবল যাঁদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে হবে, তাঁদের ফোনে বিশেষ এক প্রযুক্তির সাহায্যে স্পাইঅয়্যার ইনস্টল করে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেই কেবল হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি নয়, গোটা ফোনের সিস্টেমেরই দখল নিয়ে নিচ্ছে হ্যাকাররা। এই পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘জ়িরো-ক্লিক স্পাইঅয়্যার’।
অনুমান করা হচ্ছে, ইজ়রায়েলি সংস্থা প্যারাগন সলিউশন এই ধরনের স্পাইঅয়্যার বানিয়েছে। তাদের নিশানায় রয়েছেন বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মচারী ও সাংবাদিকেরা। প্রযুক্তিবিদেরা জানাচ্ছেন, এক বার যদি এই স্পাইঅয়্যার ফোনে ঢোকে তা হলে সব রকম ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য বেহাত হয়ে যাবে। কেবল তা-ই নয়, আপনি কার সঙ্গে কথা বলছেন, কাকে মেসেজ পাঠাচ্ছেন, কী কী লেখা হচ্ছে, এমনকি ফোনের যাবতীয় অডিয়ো ও ভিডিয়ো— সবই হ্যাকারদের জিম্মায় চলে যাবে। এই স্পাইঅয়্যারের মাধ্যমেই আপনার উপর নজর রাখবে হ্যাকারেরা।
হোয়াট্সঅ্যাপ জানিয়েছে, ৯০ জন এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এর জন্য ওই ইজ়রায়েলি সংস্থাই যে দায়ী, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানানো হয়নি। তবে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করলে বিপদ বাড়তে পারে। ফ্রি ওয়াইফাইয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হলে সেই ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারেরা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারে। তা ছাড়া পাবলিক চার্জিং স্টেশনে ফোন চার্জ করতেও বারণ করা হচ্ছে। ভারতের জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, পাবলিক চার্জিং স্টেশনেও হানা দিচ্ছে হ্যাকারেরা। যে ইউএসবি পোর্টে ফোন চার্জ করছেন, সেটির মাধ্যমেই ফোনে ঢুকে পড়তে পারে ম্যালঅয়্যার।
উল্লেখ্য, পেগাসাস ম্যালঅয়্যার নিয়েও এক সময়ে হইচই হয়েছিল। ইজ়রায়েলি সংস্থা এনএসও গোষ্ঠীর তৈরি পেগাসাস স্পাইঅয়্যার দিয়ে ১৪০০ হোয়াট্সঅ্যাপ ব্যবহারকারীর ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল বলে অভিযোগও ওঠে। এ দেশে অনেক সরকারি কর্মচারী, সংবাদিক, নেতা-মন্ত্রীদের ফোন হ্যাক্ড হয়েছিল বলে খবরও ছড়ায়। এ বারেও নাম জড়িয়েছে এক ইজ়রায়েলি সংস্থার।