মৃত প্রেমিককে বিয়ে করতে চান তাইওয়ানের তরুণী। ছবি: সংগৃহীত
ভালবাসার জন্য, প্রিয়তম মানুষের জন্য ঠিক কী কী করা যায়? এ নিয়ে হরেক নজির রয়েছে বিশ্ব জুড়ে। যেমন বলা হয়, শাহজাহান তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী মুমতাজের জন্য তাজমহল বানিয়েছিলেন। যা এখন বিশ্বের কাছে বিস্ময়! প্রাণের মানুষটি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলে, তাঁর স্মৃতিতেও অনেকে অনেক কিছু করেন। যেমন করোনাকালে স্ত্রী বিয়োগের পর তাঁর উপস্থিতি অনুভব করতে সিলিকনের মূর্তি বানিয়েছিলেন কৈখালির বাসিন্দা।
তাই বলে মৃত মানুষকে বিয়ে! এমনটাই পরিকল্পনা করেছেন তাইওয়ানের এক তরুণী। তাঁরা যে বিয়ে করবেন, তা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তার আগেই আচমকা প্রেমিকের মৃত্যু। বরাতজোরে দুর্ঘটনায় রক্ষা পান সেই তরুণী। দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও তিনি সিদ্ধান্ত নেন প্রিয়তম মানুষটিকে তিনি বিয়ে করবেন, হোক সে মৃত। এর কারণও আছে। চিনে প্রচলিত ধারণা রয়েছে কোনও মানুষ কোনও কাজ অসম্পূর্ণ রেখে মারা গেলে, তাঁর আত্মার শান্তি হয় না। সেই ভাবনা থেকেই এ দেশে প্রচলিত রয়েছে ‘ভূতুড়ে বিবাহ’। চিনের এ এক প্রাচীন প্রথা। তবে শুধু পুরনো প্রথাকে সম্মান জানাতে নয়, প্রয়াত প্রেমিকের বয়স্ক মায়ের দেখভালের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আর পাঁচ জনের মতোই ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করে সুখে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন তরুণী। কিন্তু একটি গাড়ি দুর্ঘটনা তাঁর সমস্ত স্বপ্ন ওলটপালট করে দেয়। গাড়িতে পাঁচ জন ছিলেন। প্রেমিকের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোনও। সেই দুর্ঘটনায় মারা যান প্রেমিক ও তাঁর সহোদরা। চোট পেয়েছিলেন তরুণীও। তবে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। এক দিকে তিনি যখন প্রেমিককে হারিয়ে শোকগ্রস্ত, তখন তাঁর মনে দাগ কাটে প্রেমিকের মায়ের দুঃখও। বয়স্ক মানুষটি শুধু ছেলেকেই নয়, হারিয়েছেন মেয়েকেও। একসঙ্গে দুই সন্তাকে হারানোর শোক। তরুণী ঠিক করেন, প্রয়াত প্রেমিককেই বিয়ে করবেন। প্রয়াত প্রেমিকের ছবি, জামাকাপড় সামনে রেখেই এই ধরনের বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হবে।
চিনের ‘ভুতূড়ে বিবাহ’ প্রথায় দুই রকম বিবাহের প্রচলন রয়েছে। বাগ্দানের কথা হয়ে যাওয়ার পর কোনও কারণে দু’জনের মৃত্যু হলে তাঁদের বিবাহের আয়োজন করেন অভিভাবকরা। দু’জনকে একত্রে সমাধিস্থ করা হয়। আবার এমন বিশ্বাসও আছে, অবিবাহিত অবস্থায় কারও মৃত্যু হলে তাঁর আত্মা অতৃপ্ত থাকে। পরিবারে দুর্ভাগ্য নেমে আসে। সে কারণে, অবিবাহিত মৃত পুরুষ বা কন্যার সঙ্গে তাঁর বিপরীত লিঙ্গের মৃত কারও বিয়ে দেওয়া হয়।