মাছ খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। প্রতীকী ছবি।
সামুদ্রিক মাছ খেয়ে মারা গেলেন ৮৩ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা। ওই একই মাছ খেয়ে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তাঁর ৮৪ বছর বয়সি স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে। মাছ খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
ওই দম্পতির মেয়ে এন জি লি জানিয়েছেন, সামুদ্রিক একটি মাছ খাওয়ার ফলেই তাঁদের পরিবারে এমন দুর্যোগ নেমে এসেছে। দুপুরে তিনি বাড়িতে না থাকায় মাছ খাননি। সে কারণেই সুস্থ আছেন তিনি। এন জি লি আরও জানান, তাঁর বাবা বাজার থেকে এই মাছটি কিনে এনেছিলেন। তাঁদের এক জন ধরাবাঁধা মাছ বিক্রেতা আছেন, তাঁর কাছ থেকেই মাছ কেনেন। অনেক বছর ধরে ওই দোকান থেকেই মাছ আসে বাড়িতে। ফলে বিক্রেতা যা দিয়েছেন, সেটাই ভরসা করে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এমন হবে কে জানত!
স্বামী মাছ কিনে আনার পর মৃত বৃদ্ধা লিম সিউ গুয়ান সেগুলি ধুয়ে পরিষ্কার করে রান্না চাপান। রান্না শেষ হওয়ার পর একসঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করেন সকলে মিলে। কিছু ক্ষণ পরেই লিম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে প়ড়েন। কাঁপতে থাকেন। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় লিমকে। লিম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে একই রকম লক্ষণ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর স্বামীও। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আইসিইউতে ভর্তি করে নেন। সে দিনই বিকেল মারা যান লিম।
ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে লিমের। ‘সিগুয়েটর টক্সিন’ নামে এক ধরনের জীবনঘাতী বিষ পাওয়া গিয়েছে লিমের দেহে। এটি মূলত বিষাক্ত সামুদ্রিক মাছ পাফারের দেহে থাকে। এর পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়।
‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর মতে, পাফার মাছে রয়েছে শক্তিশালী এবং মারাত্মক টেট্রোডোটক্সিন এবং স্যাক্সিটক্সিন, যা আগুনের সংস্পর্শে এসেও নষ্ট হয় না। এফডিএ জানাচ্ছে, সায়ানাইডের চেয়েও বেশি মারাত্মক এই যৌগগুলি। এ কারণে আমেরিকাতে পাফার মাছের বাণিজ্যিক আমদানি এবং রফতানির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।