রকমারি রঙিন পানীয়ে চুমুক দিতে চায় খুদে! তাতে গ্লিসেরল থাকলেই বিপদ

ঠান্ডা রঙিন পানীয় শুধু ছোট নয়, বড়দেরও পছন্দ। চড়া রোদে গলা ভেজাতে তার জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু এতে গ্লিসেরল রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খবর রাখেন? শিশুর জন্য তা অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩০
Share:
রঙিন পানীয়ে গ্লিসেরল থাকলে ক্ষতি হতে পারে শিশুর স্বাস্থ্যের।

রঙিন পানীয়ে গ্লিসেরল থাকলে ক্ষতি হতে পারে শিশুর স্বাস্থ্যের। ছবি: ফ্রিপিক।

শীত ফুরিয়েছে আগেই। বসন্তেই গরমের দাপট। রোদ চড়তেই বাড়ছে তেষ্টা। এমন সময় রাস্তাঘাটে বরফ মেশানো রঙিন পানীয় দেখলে খুদে বায়না করবে স্বাভাবিক। সব সময় তাকে আটকানোও যায় না।

Advertisement

তবে, সেই পানীয়ে গ্লিসেরল থাকলেই বিপদ। তেষ্টার মুখে এমন পানীয়ে চুমুক দিলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি অনিবার্য, বলছে গবেষণা।

কী এই গ্লিসেরল?

Advertisement

এটি হল বর্ণহীন এক যৌগ। বর্ণহীন, গন্ধহীন মিষ্টি এক রকম তরল। উদ্ভিজ্জ তেল, প্রাণিজ চর্বিতে এটি মেলে। বরফ যাতে স্ফটিকের মতো জমাট না বাঁধে, সে কারণে পানীয়ে তা মেশানো হয়। এই যৌগ শরীরে জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে কখনও কখনও দৌড়বিদদের গ্লিসেরল মেশানো পানীয় দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে ‘নিউট্রিশন রিভিউজ়’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র থেকে জানা যাচ্ছে, শরীরচর্চার সময় জলে ধরে রাখার জন্য এই যৌগের ব্যবহার হয়। তা সত্ত্বেও শিশুর জন্য এমন পানীয় ক্ষতিকর, কেন বলছেন চিকিৎসকেরা?

ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডে গত ১৫ বছরে স্লাস পানীয় খেয়ে ২১ জন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার পরেই শিশুর স্বাস্থ্যের উপর গ্লিসেরলের প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।২০২৫ সালে ‘আর্কাইভস অফ ডিজ়িজ় ইন চাইল্ডহুড’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র বলছে, আট বছরের কম বয়সি শিশুদের এই ধরনের যৌগ মিশ্রিত পানীয় খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। গবেষণা বলছে, ৯৪ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়েছে। অধিকাংশেরই ‘গ্লিসেরল ইনটক্সিকেশন সিন্ড্রোম’ দেখা গিয়েছে। কারও ক্ষেত্রে অম্বলের সমস্যা দেখা দিয়েছে, কারও আবার রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে গিয়েছে।

ব্রিটেনের কারেন্ট ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি ৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের গ্লিসেরল যুক্ত পানীয় খেতে নিষেধ করেছে।

কোন ধরনের সমস্যা এতে হতে পারে?

চিকিৎসকেরা বলছেন, যে সমস্ত শিশুর ওজন কম তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের যৌগ ‘গ্লিসেরল ইনটক্সিকেশন’-এর কারণ হতে পারে, জানাচ্ছেন শিশু চিকিৎসক অভিষেক চোপড়া। এমন হলে বমিভাব, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, অবসন্ন হয়ে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

গ্লিসেরল যুক্ত পানীয় ‘ডাই ইউরেটিক’ হিসাবে কাজ করতে পারে। এর ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। শরীর থেকে জল বেরিয়ে গেলে হঠাৎ করে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

শিশুর হজমশক্তির উপরেও আঘাত হানতে পারে গ্লিসেরল। পেটফাঁপা, অম্বল, বদহজম হতে পারে বলছেন পুষ্টিবিদ হরিপ্রিয়া এন। পুষ্টিবিদের কথায়, চিনির মতো এই ধরনের পানীয় সরাসরি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। বরং এই ধরনের পানীয়ে শরীর ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স হতে পারে, অর্থাৎ ইনসুলিন হরমোন আর সঠিকভাবে কাজ করবে না। ওজনও বাড়তে পারে এই ধরনের যৌগ থেকে।

কোন বয়সে কতটা পানীয় খাওয়া চলে?

গ্লিসেরল যুক্ত পানীয় শিশুদের খাওয়ানোর প্রশ্নই নেই, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে রঙিন পানীয় বড়জোড় আধ কাপ তাদের দেওয়া যেতে পারে। কিশোর বয়স্ক কাউকে এক কাপ এমন পানীয়ে দিনে দেওয়া যেতে পারে। বড়রা খেতে পারেন তার চেয়ে আর একটু বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement