ব্যবহারকারীর বহু গোপন তথ্য তাঁদের অজান্তেই জেনে নেয় হোয়াটসঅ্যাপ।—গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ বা তার মতো কোনও মেসেজিং অ্যাপ ইনস্টল করছেন? জানেন কি ‘প্রায়’ আপনার অজান্তেই এই মেসেজিং অ্যাপ বা অন্য অ্যাপ আপনার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জেনে নিচ্ছে? ‘প্রায়’— তার কারণ, ডাউনলোড করার শুরুতেই যে পলিসির সঙ্গে একমত হয়ে আপনি অ্যাপটি ডাউনলোড করেন, সেই বিরাট তালিকায় কী কী লেখা আছে, তা খুঁটিয়ে পড়েন না অনেকেই। বেশির ভাগ ব্যবহারকারী ওই এগ্রিমেন্ট ফর্ম-টি না পড়ে, তাতে নিজের সহমত দিয়ে দেন। আর প্রতিটা অ্যাপই আপনার ফোন থেকে জেনে নেয় বেশ কিছু ব্যক্তিগত তথ্য। যা তারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে।
অ্যাপস্টোর বা গুগ্ল প্লে স্টোর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য মেসেজিং অ্যাপ ডাউনলোড করতে গেলেই এই ঘটনা ঘটে। হালে হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পরে তাদের নানা পলিসি এবং যে ভাবে তারা ব্যবহারকারীর তথ্য জানতে চায়, তা সামনে এসেছে। কিন্তু এর আগেও অন্য মেসেজিং অ্যাপের তুলনায় হোয়াটসঅ্যাপ অনেক বেশি তথ্য চেয়ে এসেছে তার ব্যবহারকারীদের থেকে।
হোয়াটসঅ্যাপের তরফে জানতে চাওয়া এই তথ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর অনলাইন কেনাকাটা থেকে বিজ্ঞাপন ঘাঁটা পর্যন্ত সব কিছুই। যা তারা বিশ্লেষণ করে ব্যবহার করে নিজেদের প্রয়োজনে। মানে ধরুন, কোনও ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আপনি যদি নতুন ফোন খোঁজেন, তা হলে সেই তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের কাছে। হোয়াটসঅ্যাপ সেই তথ্য পাঠিয়ে দিচ্ছে ফেসবুকের কাছে। আর এরপর আপনি যখনই ফেসবুক খুলছেন, বিজ্ঞাপন হিসেবে ভেসে উঠছে বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পাতা, যেখানে দেখা যাচ্ছে রকমারি ফোন। ওখান থেকে আপনি যদি কোনও ফোনের ছবিতে ক্লিক করেন, এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইটে গিয়ে পড়েন, তা হলে তা থেকে মুনাফা করবে ফেসবুক। এ ভাবেই ক্রমশ নিজেদের ব্যবসা বাড়িয়ে এসেছে হোয়াটসঅ্যাপ এবং তাদের মূল কোম্পানি ফেসবুক।
অন্য দিকে, টেলিগ্রাম বা সিগন্যাল এ ধরনের কোনও তথ্যই প্রায় জানতে চায় না ব্যবহারকারীর থেকে। বহু ক্ষেত্রেই তাদের চাহিদা ফোন নম্বর এবং ফোনের কনট্যাক্ট লিস্টেই সীমিত। এ বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরুর পরেই জনপ্রিয়তা বেড়েছে অন্য মেসেজিং অ্যাপগুলোর।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপ না সিগন্যাল নাকি টেলিগ্রাম নাকি ভাইবার, জেনে নিন
আরও পড়ুন: শুধু ভারতীয়দের ফোনেই আড়ি হোয়াটসঅ্যাপের, দু’মুখো নীতিতে বিতর্ক