জলপাইগুড়ি হাসপাতালে রোগীদের ভিড়।
জাপানি এনসেফ্যালাইটিস বা অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে জেলা হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রোগীদের রক্তের নমুনাও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাতে নাজেহাল অবস্থা কর্মী সমস্যায় জেরবার এখানকার মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের। রিপোর্ট পেতেও দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। সোমবারও বিকেল নাগাদ বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল থেকে এখানে ছ’টি নমুনা পাঠানো হয় । তবে এ দিন কোনও নমুনাই পরীক্ষা হয়নি। নমুনা আরও জমলে মঙ্গলবার বা বুধবার তা পরীক্ষা করা হবে বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত বছর জেই ও এইএসের মারাত্মক সংক্রমণের পরেই রক্তের নমুনা পরীক্ষা করতে যাতে দেরি না হয় সে কারণে জেলা হাসপাতালগুলিতেও রক্ত ও সুষুম্না রস পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য কিট পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, এবারও জেলাগুলিতে ওই পরীক্ষা হচ্ছে না। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা পাঠানো হচ্ছে। এমনকী কখনও মুর্শিদাবাদ জেলার রক্তের নমুনাও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও পাঠানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত কিট মেলার অসুবিধা এবং দক্ষ কর্মীর অভাবই এর কারণ। তা নিয়ে অসন্তুষ্ট উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজির চিকিৎসক, ও কর্মীদের অনেকেই।
এমনিতে কর্মী সমস্যায় জেরবার মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজির ল্যাবরেটরি। জানা গিয়েছে, এই ল্যাবরেটরিতে ১৮ জন কর্মীর পদ রয়েছে। কিন্তু কর্মী রয়েছেন সাকুল্যে ২ জন। তার মধ্যে ১ জন ক্লার্কের কাজ করেন। হাসপাতালে প্যাথলজি ল্যাবরেটরি, ব্লাড ব্যাঙ্ক মিলিয়ে রয়েছেন ৭ জন কর্মী। কাজ চালাতে মাস খানেক আগে দৈনিক চুক্তির ভিত্তিতে ১১ জনকে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এক দু’জন করে টেকনিশিয়ান নিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে। তার উপর বিভিন্ন জেলা থেকেও পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নমুনা পাঠানোয় তাদের উপর চাপ বেড়েছে।
মেডিক্যাল চত্বরে জমেছে জল
তারমধ্যে কর্মীর সংখ্যা না বাড়িয়েই বর্তমানের জেই, এইএস পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত সময় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজির ল্যাবরেটরি খোলার রাখার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু বাস্তবে তা করা সম্ভব হচ্ছে না কর্মী সমস্যার জেরে। সোমবারও বিকেলের পর কোনও পরীক্ষা হয়নি।
বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, কিট থাকলেও, নমুনা অল্প বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অল্প কয়েকজনের নমুনা হলে কিট নষ্টের সম্ভাবনা থাকে। কেন না একটি কিটে ৯৬ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা যায়। রবিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ওয়ার্ডে জেই বা এইএস সন্দেহে ১২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পাঁচটি ক্ষেত্রে জেই মিলেছে। মেডিক্যালে জেই ও এইএস এর উপসর্গ নিয়ে বর্তমানে ১৪ জন ভর্তি রয়েছেন। তার মধ্যে মেডিসিন বিভাগে রয়েছেন ৪ জন, সিসিইউ’তে ৬ জন, শিশু বিভাগে ৪ জন। এদিন আরও অন্তত দু’জন এই রোগের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন।
ছবি: সন্দীপ পাল।