লন্ডনের ‘ব্রিটিশ উইমেন ইন সারিস’ নামে মহিলাদের একটি সংগঠন এই ‘শাড়ি ওয়াকাথন’-এর আয়োজন করেছেন। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গললনার কাছে সাবেক সাজ মানেই শাড়ি। আর সেই শাড়ি যদি হ্যান্ডলুমের হয়, তা হলে তো কথাই নেই। ভারতের ঐতিহ্য আর আধুনিকতা মিশে আছে হ্যান্ডলুম শাড়িতে। হ্যান্ডলুম শাড়ির বাহারি রং, সুতোর বুনোট, কারুকাজে ভারতকে টেক্কা দেওয়ার সাধ্যি আর কোনও দেশেরই নেই। হ্যান্ডলুম শাড়ির প্রতি প্রেম দেশের গণ্ডীতেই সীমাবদ্ধ নেই। বিদেশিদের মধ্যেও এই শাড়ির প্রতি আগ্রহ ইদানীং বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নানা রকম সুতির কাজ ফুটে ওঠে বারো হাতের কাপড়ে। ভারতে ৭ অগস্ট বিশ্ব হ্যান্ডলুম দিবস হিসাবে পালন করা হয়। সেই উপলক্ষেই ৬ আগস্ট হ্যান্ডলুম শাড়ি পরে লন্ডনের রাস্তায় হাঁটবেন ৫০০ জন প্রবাসী ভারতীয় মহিলা।
লন্ডনের ‘ব্রিটিশ উইমেন ইন সারিস’ নামে মহিলাদের একটি সংগঠন এই ‘শাড়ি ওয়াকাথন’-এর আয়োজন করেছেন। ওয়াকাথনটিতে ট্রাফালগার স্কোয়ার থেকে পার্লামেন্ট স্কোয়ারের দিকে যাত্রা করবেন মহিলারা। সংগঠনের চেয়ারপারসন দীপ্তি জৈন বললেন, ‘‘শাড়ির মাধ্যমেই আমরা ভারতীয় মহিলারা বিদেশে থেকেও কোথাও যেন একটা মায়ের আঁচল আর দেশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকি। যে সকল শিল্পী দিন-রাত পরিশ্রম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এত বারো হাতের কাপড়ে এত সুন্দর নকশা ফুটিয়ে তোলেন এই ওয়াকাথনের মাধ্যমে আমরা ওঁদের শ্রদ্ধা জানাতে চাই। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকেদের কাছে ভারতীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন দেখাতে চাই। বিদেশে থেকেও যে আমরা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ভাবনাতেই বিশ্বাসী, এই ওয়াকাথন তারই পরিচয়। বিশ্ববাসীর কাছে ভারতীয় হ্যান্ডলুম শাড়ির এত রকম বৈচিত্র, নকশা তুলে ধরার একটা প্রচেষ্টা এই ওয়াকাথন। ব্রিটেনের মাটিতে আমরা শাড়ি বিপ্লব আগেও ঘটিয়েছি। গত বছরের জুন মাসে ইংল্যান্ডের বার্কশায়ারে রয়্যাল অ্যাসকটে ১০০ জন মহিলা শাড়ি পড়ে হেঁটেছিলেন। এ বার আরও বড় আকারে ভারতীয় ঐতিহ্য হ্যান্ডলুম শাড়ির প্রদর্শন করব আমরা।’’
গত বছরের জুন মাসে ইংল্যান্ডের বার্কশায়ারে রয়্যাল অ্যাসকটে এরকমই এক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র।
ওয়াকাথনে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের মধ্যে ৬০ জন পশ্চিমবঙ্গের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ‘ব্রিটিশ উইমেন ইন সারিস’ গ্রুপের মিডিয়া কোয়ার্ডিনেটর পৌষালী দে রায় বলেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য হল বিশ্বের দরবারে বাংলা, বাংলার সংস্কৃতি আর বাঙালিয়ানার প্রতিনিধিত্ব করা। যে শাড়িগুলি আমরা সব সময়ে মা-দিদিমা-ঠাকুরমাদের পরতে দেখেছি, যেগুলি বাঙালি সংষ্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত, যেমন ধনেখালি, বেগমপুরী, শান্তিপুরী, ফুলিয়ার তাঁত— সেগুলি পরেই রাস্তায় হাঁটব আমরা। বাংলার তাঁতি ভাইদের গল্প বিশ্ববাসীকে শোনাব, তাঁদের হাতের কাজের প্রদর্শন বিশ্ববাসীর কাছে করতে পারব এ কথা ভেবেই আমরা গর্বিত।’’