পুজো আসছে— এই শব্দদুটোর প্রতি বাঙালির অমোঘ আকর্ষণ। তিনি সাধারণ হোন বা খ্যাতনামা, সাজগোজ, পোশাকআসাক, খাওয়াদাওয়া সব কিছু ঘিরে কত যে পরিকল্পনা চলতে থাকে। নুসরত জাহানের কাছে পুজো মানে কলকাতা। এখানকার আকাশে বাতাসে যে আমেজ, তাকে ভরপুর উপভোগ করতে চান নায়িকা। সারা বছর পোশাকে যত রকম বৈচিত্রই থাকুক না কেন, পুজোর সময় বাঙালির চিরকালীন বেশ শাড়িকেই আপন করে নেন তিনি।
পেশার কারণে সারা বছরই নতুন পোশাক কেনা ও পরা চলতেই থাকে নায়িকার। “তবে এ বার যেহেতু কিছু দিন আগে বারাণসী গিয়েছিলাম, তাই ওখান থেকেই পুজোর কেনাকাটা হয়ে গিয়েছে। আর যশকে আমি নিজে পছন্দ করে পুজোয় কিনে দিই। কাজের জন্য দিল্লি গিয়েছিলাম, ওখান থেকে ঈশানের জন্য শপিং করেছি,” হেসে বললেন নায়িকা। পত্রিকার পুজোর ফ্যাশনে এ বারের ট্রেন্ডকে মাথায় রেখে শিফন, জর্জেট এবং অর্গাঞ্জাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নুসরতকে নানা কায়দায় শাড়ি পরিয়ে দিয়েছেন এ শহরে তো বটেই, গোটা দেশেই শাড়ি ড্রেপিংয়ে যাঁর সুনাম, তিনি— ডলি জৈন। নীতা অম্বানী থেকে শুরু করে আলিয়া ভট্ট, ক্যাটরিনা কাইফ, কিয়ারা আডবাণী সকলেই যাঁকে নিশ্চিন্তে দায়িত্ব দেন শাড়ি পরানোর। “ড্রেপিং নিয়ে অনেকরকম পরীক্ষানিরীক্ষা করা যায়, যিনি শাড়ি পরছেন তিনি যদি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং সেই শাড়ি যদি তাঁর উপযুক্ত হয়। নুসরত এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালবাসে, তাই নতুন স্টাইলে ওকে শাড়ি পরিয়েছি,” বললেন ডলি।
শিফন, জর্জেট এবং অর্গাঞ্জা তিন রকম ফ্যাব্রিকেই পিয়োর সিল্কের সুতো ব্যবহার হয়। “বুননের তফাতের জন্য আলাদা টেক্সচার আসে শাড়িতে। শিফন ও জর্জেটের মধ্যে তফাত রয়েছে, সেটা অনেকে গুলিয়ে ফেলেন। শিফনের মধ্যে হালকা রিঙ্কল থাকে, জর্জেট পুরোপুরি মসৃণ। আবার অর্গাঞ্জায় সুতো আলাদা ভাবে ট্রিটমেন্ট করা হয়, তাই শাড়ির মধ্যে হালকা ফোলা ভাব এবং স্বচ্ছতা আসে,” বললেন শাড়িশিল্পী নয়না জৈন।
হালকা গোলাপি রঙের জর্জেট শাড়ির সাহসী ড্রেপিং মনে করিয়ে দেয় কান উৎসবে সারা আলি খানের শাড়ির অভিনব ড্রেপিং। এই কায়দায় শাড়ি পরতে গেলে গুরুত্ব দিতে হবে ব্লাউজ়কে, সেই সঙ্গে মেদহীন চেহারা তো বটেই। শাড়ি জুড়ে রয়েছে চিকন ও বাঁধনীর কারুকাজ, তার সঙ্গে নুসরত বেছে নিয়েছেন হিরের গয়না। লাল ও নীল রঙের দু’টি শিফন শাড়িকে একসঙ্গে পরানো হয়েছে সম্পূর্ণ নতুন কায়দায়। ঘন নীল শিফনে বাঁধনী ও মুকেশের কাজ, অন্য দিকে লাল শিফনে বাঁধনীর সঙ্গে মিরর ওয়ার্ক এনেছে উৎসবের ঔজ্জ্বল্য। সেই আবহে মানিয়ে গলায় ভারী হার ও সাবেক খোপা। আবার হলুদরঙা এবং হালকা বেগুনি ও গোলাপি মেশানো অর্গাঞ্জার ড্রেপিংয়ে নেই বিশেষ কোনও কায়দা। গলায় সোনার নেকলেস, খোলা চুলেই বাজিমাত। শুটিং শেষে নুসরত বললেন, “পুজোয় ট্র্যাডিশনাল ভারী শাড়ি তো আমরা পরেই থাকি, কিন্তু এ ধরনের হালকা শাড়ি পরতে সুবিধে এবং নানা ভাবে স্টাইলিং করা যায়। বিশেষ করে এ বার পুজোর সময়ে বেশ গরম, তাই এ ধরনের শাড়ি পরে ফুরফুরে থাকা যায়।” তাই এ বার পুজোয় শাড়ি তো বটেই ড্রেপিং স্টাইলেও আসুক নতুন ধরন।
শুটিং কো অর্ডিনেশন: ঈপ্সিতা বসু; ছবি: সোমনাথ রায়; ড্রেপিং: ডলি জৈন; মেকআপ: বাবুসোনা সাহা; হেয়ার: গিনি হালদার; শাড়ি: নয়না জৈন, সেক্টর ওয়ান, সল্ট লেক; ব্লাউজ়: ঘরোয়া বাই জয়িতা মুখোপাধ্যায়, চিত্রি বাই পিয়ালী গঙ্গোপাধ্যায়, অর্চিশা; গয়না: আভামা; লোকেশন অ্যান্ড হসপিটালিটি: দ্য ওবেরয় গ্র্যান্ড, কলকাতা; ফুড পার্টনার: চ্যাওম্যান