প্রথমবার মাছ রাখছেন? বুঝতে পারছেন না কেমন ট্যাঙ্ক কিনবেন? কী ভাবে সাজাবেন পছন্দের অ্যাকোয়ারিয়াম? — রইল কিছু পরামর্শ।
১। যেখানে থাকেন সেখানকার জল কেমন সেটা আগে জানতে হবে। জলে যদি আয়রন বা ক্লোরিন বেশি থাকে তা হলে ট্যাঙ্কের ভেতরের দেওয়ালে খুব দ্রুত সাদা পরত পড়তে পারে। এমনকী জল দ্রুত ঘোলা হয়ে যায়। এমনটা হলে সপ্তাহে একবার পাতলা কাপড় দিয়ে কাঁচের দেওয়াল মুছতে হবে। পাশাপাশি সপ্তাহে দু’বার জল বদলাতে হবে। সমস্যার সমাধানে যে কোনও অ্যাকোয়ারিয়ামের দোকানে পাবেন জল পরিষ্কার রাখার মিশ্রণ। পরিমাণমতো এই মিশ্রণ জলে দিলে সমস্যা অনেকটাই কমবে।
২। গোল কাঁচের পাত্রের বদলে ছোট অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ রাখুন। গোল কাঁচের জায়গায় মাছ সচরাসাচর ভালোভাবে ঘোরাফেরা করতে পারে না। এতে বিঘ্নিত হয় জলের নিজস্ব বাস্তুতন্ত্রও। ফলে মাছ সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
৩। বাড়ি কত বড় তার উপর নির্ভর করছে অ্যাকোয়ারিয়ামের ট্যাঙ্কের আয়তন। যদি ঘর ছোট হয়, তা হলে বড় অ্যাকোয়ারিয়াম না রাখাই ভাল। ১ ফুট বাই ১ ফুট থেকে শুরু করে ৮-১০ ফুটের অ্যাকোয়ারিয়ামও রাখতে পারেন। অনেকে শখ করে দেওয়াল জোড়া অ্যাকোয়ারিয়ামও রাখেন। এটা পুরোপুরি আপনার সিদ্ধান্ত ও শখের বিষয়।
৪। অ্যাকোয়ারিয়াম কেনার সঙ্গে সঙ্গেই অক্সিজেন পাম্প, ফিল্টার (বেড, পাওয়ার আর স্পঞ্জ, টপ) কিনতেই হবে। বেড ফিল্টার সাধারণত পাথরের তলায় অর্থাৎ ট্যাঙ্কের নীচে রাখা হয়। পাওয়ার ফিল্টার অ্যাকোয়ারিয়ারমের দেওয়ালে লাগিয়ে রাখতে পারেন। স্পঞ্জ ফিল্টার ট্যাঙ্কের কোণে আর টপ ফিল্টার ট্যাঙ্কের উপরে লাগাতে হবে। তবে অ্যাকোয়ারিয়াম ছোট হলে বে়ড ফিল্টার সব থেকে ভাল। বড় ট্যাঙ্কের জন্য রাখতে পারেন ক্যানিস্টার ফিল্টার।
৫। চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব মাছেদের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে। মোজাইক বা কৃত্রিমভাবে রং করা পাথরের বদলে বালি চালা পাথর রাখুন। এটা দামেও কম আর মাছেদের স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল। মাছ খুব স্বচ্ছন্দ বোধ করে ড্রিফ্ট উড (গাছের শুকনো ডালপালা) আর বগ উড (গাছের মূল) –এর মধ্যে। সবুজের ছোঁয়া আনতে লাগাতে পারেন বাহারি গাছও। শুরুর দিকে অ্যামাজন, ব্রড লিফ আর ক্রিপটোকোরিন লাগাতে পারেন।
৬। গাছ লাগালে দিনে সাত-আট ঘণ্টা আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে। এটা গাছ ও মাছ-উভয়ের স্বাস্থ্যের পক্ষেই প্রয়োজনীয়। আর মনে রাখবেন, বাড়ির যে জায়গায় সরাসরি রোদ আসে সেখানে কখনওই অ্যাকোয়ারিয়াম রাখবেন না। তাতে ট্যাঙ্কে খুব তাড়াতাড়ি শ্যাওলা পড়ে। আর যে কোনও অ্যাকোয়ারিয়ামই ১৫ দিন অন্তর পরিষ্কার করলে ভাল। এতে সুস্থ থাকবে মাছও।