জেনারেটর নেই, নাকাল রোগীরা

জেলার সব হাসপাতালে নেই জেনারেটর। থাকলেও সব সময় চালান না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে অসহ্য গরমে নাজেহাল রোগীরা। এমনিতেই যে রকম গরম পড়েছে তাতে উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদ্‌রোগীদের করুণ অবস্থা। তার উপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা আরও নাজেহাল। কারণ লোডশেডিং। দিনে দুপুরে লোডশেডিং হলে বসে বসে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০২:১২
Share:

জেলার সব হাসপাতালে নেই জেনারেটর। থাকলেও সব সময় চালান না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে অসহ্য গরমে নাজেহাল রোগীরা।

Advertisement

এমনিতেই যে রকম গরম পড়েছে তাতে উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদ্‌রোগীদের করুণ অবস্থা। তার উপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা আরও নাজেহাল। কারণ লোডশেডিং। দিনে দুপুরে লোডশেডিং হলে বসে বসে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।

কারণ সব হাসপাতালে নেই জেনারেটরের ব্যবস্থা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা সে কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “যে হাসপাতালে জেনারেটর রয়েছে, সেখানে লোডশেডিং হলেই জেনারেটর চলছে। কিন্তু যেখানে নেই, সেখানে কিছু করার নেই।” তবে তাঁর আশ্বাস এই গরমের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত জল, ওআরএস মজুত রাখা হয়েছে।

Advertisement

বাস্তবটা অন্য রকম। জেনারেটর থাকলেও অনেক জায়গায় জেনারেটর চালানো হয় না। চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি উত্তম মণ্ডল হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত। তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘‘চিকিৎসা ভালই হয়েছে। কিন্তু দুপুরে ঘণ্টা খানেকের বেশি লোডশেডিং হচ্ছে ঘনঘন। জেনারেটর চলেনি। গরমের আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগীরা।”

ওই হাসপাতালের সুপার গোপাল দেও বলেন, “নিয়মানুযায়ী, অস্ত্রোপচার বা জরুরি কোনও সমস্যা হলে তবেই দুপুরে লোডশেডিং-এর সময় জেনারেটর চালানো হয়। আমদের জেনারেটরের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা ও তেল দেওয়া হয়। ফলে লোডশেডিং হলেই যে জেনারেটর চালানো সম্ভব হয় না।”

একই চিত্র চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালেও। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই সময় ডায়েরিয়া, হৃদ্‌রোগ, রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে রোগীরা বেশি ভর্তি হন। এমন রোগী প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছেন আবার ছাড়াও পাচ্ছেন।

মনোহরপুরের বাসিন্দা অহনা ভৌমিক জানান “আমার এক আত্মীয় ক্ষীরপাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একে গরম, তার উপর ঘনঘন লোডশেডিং। রোগী সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’’ এই চিত্র কমবেশি সব হাসপাতালেই।

তবে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে এখন দিনের বেলায় লোডশেডিং হলে জেনারেটর চলছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বারেও বহির্বিভাগের বাইরে কোনও পাখা লাগানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। ফলে প্রবল গরমে কষ্ট পাচ্ছেন চিকিৎসা করাতে আসা রোগী এবং তাঁদের আত্মীযরা। ঘাটালে মেডিসিন ও প্রসূতি বিভাগে প্রতিদিনই বহু রোগীর আসেন বহির্বিভাগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় চিকিৎসার জন্য।

ঘাটালের মনসুকার সুকদেব পণ্ডিত, আশালতা ঘোষেরা বলেন, “এত গরম। তারপর দু’থেকে আড়াই ঘণ্টা লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা। বহু বার কর্তৃপক্ষকে বলেও কোনও লাভ হয়নি।’’

এ বিষয়ে ঘাটাল হাসপাতাল সুপার অনুরাধা দেব বলেন, “যেখানে পাখার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে সব পাখাই সব সময় চলছে। কিন্তু সর্বত্র পাখা নেই। ফলে আউটডোরে অপেক্ষারত রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা দেখছি কী করা যায়। তবে আমাদেরও তো সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’’

সীমাবদ্ধতা সকলেরই রয়েছে। তবে সেই সীমা মানে না জৈষ্ঠ্যের প্রখর সূর্য। তাই ভোগান্তি ছাড়া আর কিছু থাকে না সাধারণ মানুষের হাতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement