ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন থাকে। ফাইল ছবি।
ছোট থেকেই অ্যালবুমিন কথাটির সঙ্গে কম-বেশি পরিচিত আমরা সবাই। ডিমের সাদা অংশে থাকে অ্যালবুমিন, যা শরীরের অন্যতম একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। কিন্তু অ্যালবুমিন কী এবং তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকে না অনেকেরই। পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরীর কথায়, শরীরে অ্যালবুমিনের ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটলে কী সমস্যা হয় তা জেনে রাখা প্রয়োজন সকলের। তাতে অনেক গুরুতর শারীরিক অসুস্থতা এড়ানো যায় গোড়াতেই।
অ্যালবুমিন কী?
মানবশরীরের অপরিহার্য প্রোটিন উপাদান অ্যালবুমিন, শরীরের কোষগুলিকে সুস্থ রাখতে, রক্তক্ষরণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। অ্যালবুমিন পাওয়া যায় রক্তে। শরীরে রক্ত বা অন্য যে কোনও তরল, ওষুধ ইত্যাদিকে এক কোষ থেকে অন্য কোষে পরিবহনে সাহায্য করে অ্যালবুমিন। সাধারণ ভাবে অ্যালবুমিন জলে মিশে যেতে পারে। তবে তাপ পেলে তা জমাট বেঁধে যায়। কোয়েলের মতে, মানুষের শরীরে অ্যালবুমিনের চাহিদা মেটানো সহজ। ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন থাকে। তা ছাড়া, দুধ থেকেও শরীরের প্রয়োজনীয় অ্যালবুমিন পাওয়া যায়। তবে ভিগানদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সামান্য কঠিন। এ ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় হল অ্যালবুমিনের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেও ‘হিউম্যান অ্যালবুমিন’ সাপ্লিমেন্টসের জোগান থাকে। তবে, পুষ্টিবিদ কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিন্তু বাজারচলতি অ্যালবুমিন সাপ্লিমেন্টস নেওয়া একেবারেইউচিত নয়।
অ্যালবুমিনের ভাল-মন্দ
একজন সুস্থ মানুষের রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৪ থেকে ৫.৪ গ্রাম অ্যালবুমিন থাকা উচিত। শরীরে অ্যালবুমিনের পরিমাণ এর চেয়ে বেশি বা কম হওয়া ক্ষতিকর। অ্যালবুমিন শরীরে কোলয়েড অসমোটিক চাপ বজায় রাখে, যা অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। বিলিরুবিন, এনজ়াইম, হরমোন, ফ্যাটি অ্যাসিড, ওষুধ ইত্যাদির বিপাকে সাহায্য করে অ্যালবুমিন। এক কথায়, এটি শরীরের নিজস্ব ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ার অন্যতম উপাদান। শরীরে অ্যালবুমিনের মাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি, কিডনি ও যকৃতে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধার সম্ভাবনাকেই নির্দেশ করে। অ্যালবুমিনের ভারসাম্যের অভাবে হাত-পা ফুলেও যেতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
কোয়েল জানালেন, অ্যালবুমিন নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক রকমের ভ্রান্ত ধারণা থাকে। অ্যালবুমিনের মাত্রা কমে যাওয়াকে অনেকেই অপুষ্টির লক্ষণ বলে মনে করেন। আদতে অ্যালবুমিন কমার অর্থ শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি তৈরি হওয়া। সুতরাং, সাপ্লিমেন্টস নয়, রোজকার খাবারের মাধ্যমেই শরীরে এই চাহিদা পূরণ করা দরকার।