খাওয়া এবং খাবার নিয়ে কী মত মুধা মূর্তি এবং রুজুতা দিবেকরের? ছবি: আনন্দবাজার ডট কম
একজন রাজ্যসভার সাংসদ, লেখিকা, ইনফোসিস-কর্তা নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী সুধা মূর্তি। অন্য জন, বি-টাউনের নায়িকা করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর। কোনও নামী-দামি খাবার নয়, বিদেশি খানাও নয়— এঁদের দু’জনেরই বিশ্বাস, সুস্থ থাকার চাবিকাঠি লুকিয়ে ঘরোয়া খাবারে। একেবারে চেনা যে খাবার মা, ঠাকুরমারা বংশ পরম্পরায় রান্না করেন, সেই খাবারেই ভাল থাকা যায়।
সব হিসাব কি উল্টে যাচ্ছে? বি-টাউনের বহু নায়ক-নায়িকা জীবন থেকে ভাত, ডালের মতো খাবার বাদ দিয়েছেন। আর তাঁদের দেখে, সমাজমাধ্যম থেকে পাওয়া বিভিন্ন রকম পরামর্শ শুনে অনেকেই জীবন থেকে বাদ দিয়েছেন চিরপরিচিত খাবারগুলি। ভাত-প্রিয় বাঙালির অনেকেই মেদ ঝরাতে ভাত ছেড়ে দিনভর ওট্স, ডালিয়া খেয়ে থাকেন। কারও ডায়েটে থাকে এমন সব খাবার, যা আদতে এ দেশের নয়। কেউ কেউ এমন খাবারও খান, যেগুলির নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে দাঁত ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হয়।
অথচ করিনার পুষ্টিবিদ মনে করেন, সুস্থ থাকতে, ওজন বশে রাখতে এই সব খাবারের প্রয়োজনই নেই! রুজুতার পরামর্শ শুধু করিনা নন, মেনে চলেন বি টাউনের বহু তারকাই। সুধা মূর্তির মতো গুণী, প্রতিপত্তিশালী পরিবারের বধূও খান ঘরোয়া খাবার। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে এসেছে খাবার নিয়ে তাঁদের ভাবনা। রুজুতা জানান, সুস্থ থাকতে ঘরের খাবারই খাওয়া উচিত। তাতেই সহমত প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের শাশুড়ি মা। সুধা জানান, তিনি ঘরের খাবারই খান, তবে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত পদ সামনে থেকে সরিয়ে ফেলেন।
ঘরের খাবার খেলেও অনেকেই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের লোভ ছাড়তে পারেন না। পাঁঠার মাংস, মনের মতো মিষ্টি দেখলেই অনেকেরই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়। একই সমস্যা হয় সুধারও। তিনি বলছেন, ‘‘আমি উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত লোভনীয় খাবার চোখের সামনে থেকে সরিয়ে রাখি। ভয় হয়, যদি জিভকে বশে রাখতে না পারি! আরও একটি বিষয় হল, আমরা মানুষ। সব সময় খাওয়ার ইচ্ছা সম্বরণ করা যায় না। অথচ মাইসোর পাক, পেঁড়া— এই সব রোজ খেলেই মুশকিল। তাই সেগুলো আমি অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখি। যখন ইচ্ছা হয়, একটা বার করে নিই। তবে সেটা নিয়ম মেনে।’’
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ওট্স, কিনোয়া-সহ অনেক ভিন্দেশি খাবারই এখন হেঁশেলে জায়গা করে নিয়েছে। তবে রুজুতা মনে করেন, ভারতে এত রকম খাবার আর এত বেশি বৈচিত্র রয়েছে যে শরীর ভাল থাকতে বিদেশের প্রচলিত খাবারের প্রয়োজন পড়ে না। তাঁর মতে, যে খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই, দূর দেশের সেই খাবার জোর করে ডায়েটে যোগ করা অর্থহীন।
তবে সুধা মনে করাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ ক্যালোরির খাবার ১৫-১৭ বছর বয়সে সহ্য হলেও, তাঁর মতো ৭৫-এ এসে কিন্তু আর খাওয়া যাবে না। তাই শুরু থেকেই খাবার নিয়ে সহজ রুটিনে থাকা ভাল।