sleep

নাক ডাকে প্রায়ই? এই সব মানলেই সরবে অসুখ

অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোমের জন্য নাক ডাকলে ড়িঘড়ি চিকিৎসা করানো জরুরি৷

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ১৫:৩৯
Share:

নাক ডাকার সমস্যা নিয়ে অবহেলা করলে বিপদ বাড়বে। ছবি: আইস্টক।

ওয়ার্ল্ড হেল্‌থ অর্গানাইজেশন (হু)-এর হিসেব বলে, ১০ জন পুরুষের মধ্যে ৪ জন নাক ডাকেন৷ যত বয়স ও ওজন বাড়ে, নাক ডাকাও পাল্লা দিয়ে বাড়ে৷ মেয়েরাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই৷

Advertisement

তবে অধিকাংশ নাক ডাকাই নিরীহ৷ অর্থাৎ যিনি নাক ডাকছেন তাঁর বিরাট কোনও সমস্যা নেই৷ কিন্তু যদি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোমের জন্য নাক ডাকে, তা হলে তড়িঘড়ি চিকিৎসা করানো জরুরি৷

নাক ডাকে কেন

Advertisement

বয়স বাড়লে কমবেশি অনেকেরই নাক ডাকে৷ ওজন বাড়লে সমস্যা বাড়ে। অ্যালার্জি, নাকবন্ধের ধাত, নাকে পলিপ, নাকের মাঝের পর্দা বাঁকা ইত্যাদি থাকলে কম বয়সেও নাক ডাকতে পারে৷ এই সব সমস্যার কারণে শিশুরাও নাক ডাকে অনেক সময়৷ শোওয়ার আগে বেশি মদ খেলে বা ঘুমের ওষুধ খেলে নাক ডাকার পরিমাণ বাড়ে। ধূমপায়ীদের দ্বিগুণ আশঙ্কা থাকে নাক ডাকার৷ অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম থাকলে ঘুমের সময় শরীরে কম অক্সিজেন যায়, শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যায় বার বার৷ চিকিৎসা না করলে সারা দিন ক্লান্তি, কাজের মাঝে ঘুমিয়ে পড়া থেকে শুরু করে ভবিষ্যতে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে৷

চিকিৎসা

অধিকাংশ নাক ডাকাই নিরীহ৷ ফলে বেড পার্টনার চূড়ান্ত অশান্তি শুরু না করলে সমাধানের কথা ভাবেন না কেউ৷ তবে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম থাকলে, নিজের এত রকম সমস্যা হতে থাকে যে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে দেরি হয় না৷ ওজন বেশি থাকলে তা কমাতে হয়, শ্বাসের পথে বাধা থাকলে তারও চিকিৎসা হয়৷ কখনও আবার এত কিছুর পরও ঘুমনোর সময় সি–প্যাপ নামের যন্ত্রের সাহায্যে শরীরে অক্সিজেনের জোগান বজায় রেখে সামলাতে হয় সমস্যা৷

অ্যালার্জি বা নাকের কোনও সমস্যার জন্য নাক ডাকলে নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চলে রোগ সারিয়ে ফেললে বা নিয়ন্ত্রণে রাখলে নাক ডাকা কমে যায় বা সেরে যায়৷ অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়৷

ঘুমের ওষুধের অভ্যাস আস্তে আস্তে ছাড়ার চেষ্টা করুন৷

নিয়ম

ওজন ও ভুঁড়ি বেশি হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ডায়েটিং ও ব্যায়াম করে তা কমানোর চেষ্টা করুন৷ কয়েক কেজি কমাতে পারলে নাক ডাকা অনেক কমে যাবে৷ ছিপছিপে হয়ে যেতে পারলে বা ভুঁড়ি কমাতে পারলে তো কথাই নেই৷ রাতের দিকে খুব বেশি মদ খেলে নাক ডাকা বেড়ে যেতে পারে৷ কাজেই মদ খাওয়া কমান, ছেড়ে দিতে পারলে খুবই ভাল৷ প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷ এতে শরীর–স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে৷ ধূমপান কমানোর চেষ্টা করুন৷ এটিও ছেড়ে দিতে সক্ষম হলে এক কাজে অনেক উপকার পাবেন। ঘুমের ওষুধের অভ্যাস আস্তে আস্তে ছাড়ার চেষ্টা করুন৷ স্বাভাবিক ঘুম ঘুমনোর পন্থা শিখে নিন বিশেষজ্ঞের কাছে৷ চিত বা উপুড় হয়ে না শুয়ে পাশ ফিরে ঘুমোন৷ খাটের মাথার দিকের পায়ার নীচে কাঠের ব্লক বা ইট দিয়ে একটু উঁচু করে দিতে পারেন৷ ঘুমের সময় মাথা থেকে পিঠ পর্যন্ত শরীরের বাকি অংশের চেয়ে একটু উঁচুতে থাকলে নাক কম ডাকে৷ নাকের ভিতরটা যাতে শুকিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখুন৷ শোওয়ার আগে স্টিম নিলে বা নাক ভেজা রাখতে নির্দিষ্ট ড্রপ দিলে সমস্যা কম হয়৷ বালিশে দু’ফোঁটা ইউক্যালিপ্টাস অয়েল দিয়ে দেখতে পারেন উপকার হয় কি না৷ নাক বন্ধ থাকলে ন্যাজাল স্ট্রিপের সাহায্য নেওয়া যায়৷ এর জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন৷ কোনও ভাবেই কোনও কাজ না হলে নাক–গান–গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement