প্রতারিত হয়েছেন মনে হলে সিদ্ধান্ত নিন খুব ঠান্ডা মাথায়। ছবি: শাটারস্টক।
আপনি নিশ্চয়ই ভাবেন, ঠগ ধরা আপনার ‘বাঁয় হাত কা খেল’। হয়তো এমনটাও ভাবেন যে, আপনার সঙ্গীকে আপনি খুব ভাল চেনেন। কিন্তু দেশ-বিদেশের নানা সমীক্ষা ঠিক এর উল্টো কথা বলছে। সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই প্রতারিত হওয়াই মূল কারণ।
‘আমেরিকান স্কুল অব প্রফেশনাল সাইকোলজি’-র একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই একই সঙ্গে দু’টি সম্পর্ক বজায় রাখছেন। শুধু তা-ই নয়, তার মধ্যে অন্তত যৌন সংসর্গের ক্ষেত্রে ভাল ভারসাম্য বজায় রাখতেও পারেন।
এমন কোনও ঘটনা বা অন্য কোনও কারণেও কিন্তু ঠকে যেতে পারেন আপনি। কিন্তু তার পর কী? সঙ্গীর বিশ্বাসভঙ্গের সাজা কী? বিশ্বাসঘাতকতা ঠিক কত দূর গেলে আর এক বার সুযোগ দেওয়া যায়?
আরও পড়ুন: শ্যাম্পুর আগেই কন্ডিশনার! চুলের যত্নে ‘রিভার্স ওয়াশিং’ এই দাওয়াই জানেন?
মনোবিদ অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘প্রতি দিনই এই রকম মানুষের মুখোমুখি হতে হয় যারা প্রিয় জনের বিশ্বাসঘাতকতায় পায়ের তলায় জমি হারিয়ে ফেলেছেন, কী ভাবে ফের শুরু করা যায়, সেটুকুও ভেবে উঠতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে। অ্যাংজাইটিতে ভুগতে শুরু করেন বিশ্বাসঘাতকতায় স্তম্ভিত মানুষটি। আমরা জানি বিষয়টা কঠিন, তবু আমরা এই ধরণের অসুবিধায় যাঁরা আছেন, তাঁদেরকে সমস্যাটিকে বাইরে থেকে দেখতে বলি। নিস্পৃহ দৃষ্টিতে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পথে এগবো। অনেকেই পুরনো সম্পর্কটি থেকে বেরিয়ে যান। অনেকে আবার ক্ষত মেরামত করে নেন।’’
সঙ্গীর বিশ্বাস ভাঙলে ক্ষত মেরামতের দায়িত্ব নিন নিজেই।
কী ভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন
দেখতে হবে, প্রতারণাটি সম্পর্কে প্রতারকের স্পষ্ট ধারণা আছে কি না। অনেক সময় আপনার ধারণায় যা প্রতারণা, তা নিয়ে তাঁর অন্য মত ও ব্যাখ্যাও থাকতে পারে। একগাদা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে জেনেও সে যদি প্রস্তুত থাকে সততার সঙ্গে তার মোকাবিলা করার, তাঁকে একটি সুযোগ দিন। খুঁজুন ভুলের মূলটা ঠিক কোথায়। যদি ধরতে পারেন, তবে দেখুন, সেই জায়গাটায় শুশ্রূষা সম্ভব কিনা। যদি সম্ভব হয়, দু'জনেই ক্ষত মেরামতের দায়িত্ব নিন।
আরও পড়ুন: ভারতের জন্য হু-র থ্রেট লিস্টে এই সাত অসুখ! সাবধান হোন আজই
যদি মেনে নেওয়ার মতো অবস্থায় আসেন, তবে জীবনটা শুরু করুন একটা নতুন সাদা বোর্ডের মত। অর্থাৎ ভুলের মাশুল লম্বা সময় ধরে পার্টনারকে দিতে হবে, তেমনটা হলে আপনাদের রসায়নটা কিন্তু মাঠে মারা যাবে। কাজেই পুরনো ভুল আর ধরে থাকবেন না। অকারণ সন্দেহও করবেন না, তবে সচেতন থাকুন। একটা পরিষ্কার সীমারেখা টানুন। দু’জনেই খোলামেলা আলোচনা করে স্পষ্ট করে বুঝে নিন পরস্পরের থেকে কী চান, আর কী চান না। মনে রাখবেন, সম্পর্কে থাকা মানে সঙ্গীর সমস্তটায় নাক গলানোর অধিকার জন্মায় না। অনধিকার চর্চা থেকেই জন্ম নেয় গোপন করার অসুখ। একে অপরকে স্পেস দিলে বরং আকর্ষণ বাড়বে।