ভাইফোঁটা জমুক আমিনিয়ার বিরিয়ানি দিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
উৎসবের পর্ব এখনও শেষ হয়নি। রাত পোহালেই আলোর উৎসব দীপাবলি। আলোর মালা, মোমবাতি, মাটির প্রদীপ, মিনিয়েচার টুনিতে সেজেছে শহর। তবে শুধু আলো দিয়ে নয়, দীপাবলি, ভাইফোঁটা উদ্যাপনের জন্য মন ভাল করা, সুস্বাদু সমস্ত খাবারের পসরা সাজিয়ে প্রস্তুত শহরের রেস্তরাঁগুলি। বন্ধুদের সঙ্গে দীপাবলির রাত আরও রঙিন করে তুলতে কিংবা ভাই-বোনেদের সঙ্গে সময় কাটাতে চলে আসতেই পারেন যে কোনও একটিতে।
১) আমিনিয়া
আমিনিয়ার স্পেশাল পুডিং। —নিজস্ব চিত্র।
বাঙালির তেরো পার্বণের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে বিরিয়ানির নাম। বিরিয়ানির জগতে আমিনিয়া একটি নক্ষত্র। ৯৫ বছরে পা দেওয়া এই প্রতিষ্ঠান দীপাবলি উপলক্ষে সাজিয়েছে তাদের মুঘল খানার সম্ভার। বিরিয়ানি তো বটেই, সঙ্গে রয়েছে মুরগি, খাসির নানা রকম পদ। শেষ পাতে ফিরনি, কুলফির পাশাপাশি স্পেশাল পুডিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। সকাল ১১টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকবে আমিনিয়ার সমস্ত শাখা। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৮০০ টাকার আশপাশে।
২) ব্লু অ্যান্ড বিয়ন্ড
ব্লু অ্যান্ড বিয়ন্ড-এর আজওয়াইনি ঝিঙ্গা। —নিজস্ব চিত্র।
আকাশভরা তারার আলোয় দীপাবলির রাত উদ্যাপন করতে চাইলে এক বার আসতেই হবে এই কলকাতার প্রথম স্কাই লাউঞ্জ, রুফটপ রেস্ট-বার-এ। সেজ়ুয়ান প্রন, বার-বি-কিউ কয়েন, হট গার্লিক ল্যাম্ব ছাড়াও রয়েছে আরও অনেক খাবার। ককটেল, মকটেলের অফুরন্ত সম্ভার। নিউ মার্কেট চত্বরে এলে এই রেস্তরাঁয় ঘুরে যেতেই পারেন। দুপুর ১টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে এই রেস্তরাঁ। দু’জনের জন্যে খরচ পড়বে ১৯০০ টাকা। পানীয়ের খরচ আলাদা।
৩) ডবল ডাউন ব্রিউ পাব অ্যান্ড ক্যাফে
ডবল ডাউন ব্রিউ পাব অ্যান্ড ক্যাফের চিকেন কবাব। —নিজস্ব চিত্র।
বন্ধুরা বিয়ার খেতে ভালবাসেন? এই ক্যাফেতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের পানীয়। সঙ্গে মুরগির বিভিন্ন কবাব তো রয়েছেই। মিষ্টিমুখ করতে চাইলে চেখে দেখতেই পারেন এখানকার চিজ় কেক। গড়িয়াহাটের কাছাকাছি এলে ঘুরে যেতে পারেন এই ক্যাফে থেকে। দুপুর ১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৮০০ টাকা। পানীয়ের খরচ আলাদা।
৪) সম্পন্ন ক্যাফে
সম্পন্ন ক্যাফের বাঙালি থালি। —নিজস্ব চিত্র।
আলিপুর অঞ্চলের আশপাশে থাকলে ঢুঁ মারতে পারেন সম্পন্ন ক্যাফেতে। নামে ক্যাফে হলে কী হবে, খাদ্যতালিকা বিরাট লম্বা। বাঙালি থেকে চাইনিজ়— সবই পাবেন এখানে। তবে ভাইফোঁটা উপলক্ষে থাকছে পোলাও-মাংস, লুচি-ছোলার ডাল, পোস্ত, মাছ আরও অনেক কিছু। শেষপাতে থাকবে পায়েস, মিহিদানা, ভাপা দই, ছানা পোড়া। খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে এবং সন্ধে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১০৯৮ টাকা।
৫) কপার কারিজ়
ভিন্ন স্বাদের পনির তুলসী টিক্কা পাওয়া যাবে কপার কারিজ়ে। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোর সময় বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। তাই খুব বেশি কিছু খাওয়ার পরিকল্পনা নেই। বন্ধুদের সঙ্গে তাই সান্ধ্য আড্ডা দিতে চলে আসতেই পারেন কপার কারি্জ-এ। আমিষ, নিরামিষ— বিভিন্ন স্বাদের কবাবের জন্য বিখ্যাত এই রেস্তরাঁ। চাইলে কাকোরি, গালৌটি, কালিমির্চ কোনটা ছেড়ে কোনটা খাবেন, মনস্থির করতেই দিন কেটে যেতে পারে।
৬) ব্যাকস্টেজ গোরমে
সল্টলেকের দিকে যদি কোনও ভাল রেস্তরাঁর খোঁজ চান, তা হলে পছন্দের তালিকায় যোগ করতে পারেন আরও একটি নাম। ভেজটেবিল স্যাসলিক, মাহি আফগানি, মুর্গ কা সুলা, মটন চাপলি কবাব থেকে বিরিয়ানি— সবই পাবেন। দুপুর ২টো থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে রেস্তরাঁ। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১৫০০ টাকা। পানীয়ের খরচ আলাদা।
৭) মোটর ওয়ার্কস ব্রিউইং কোম্পানি
ভাইফোঁটায় আলাদা করে ছুটি নেই। তাই ভাইকে খাওয়াতে চলে আসতে পারেন তাঁর অফিসের কাছে, সেক্টর ফাইভে। সেখানে রয়েছে মোটর ওয়ার্কস ব্রিউইং কোম্পানি। দুপুর ২টো থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকছে এই রেস্তরাঁ। মাছ, মাংসের কবাব থেকে রুটি, কাঠিরোল— যা খুশি খেতে পারেন। রয়েছে পানীয়ের ব্যবস্থাও। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১৮০০ টাকা। পানীয়ের খরচ আলাদা।
৮) এলএমএনওকিউ
এলএমএনওকিউয়ের তিরামিসু। —নিজস্ব চিত্র।
দীপাবলি এবং ভাইফোঁটা উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিটের এই রেস্তরাঁ খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত। নিরামিষ পনির থেকে মুরগি, মটনের রকমারি পদ রয়েছে এখানে। থাকবে গানবাজনার ব্যবস্থাও। দু’জনের জন্যে খরচ পড়বে ১২০০ টাকা। পানীয়ের খরচ আলাদা।
৯) বাটারফিঙ্গার্স বাই প্রীতাঞ্জলি
বিভিন্ন রকম কেক দিয়ে সাজানো হ্যাম্পার পাওয়া যাবে বাটারফিঙ্গার্স বাই প্রীতাঞ্জলিতে। —নিজস্ব চিত্র।
দীপাবলিতে আত্মীয়, বন্ধুদের উপহার দেওয়ার চল রয়েছে অবাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে। খাওয়াদাওয়া তো থাকছেই, সঙ্গে যদি চকোলেট বা ছোটখাটো উপহার দিতে চান, চলে আসতে পারেন বাটারফিঙ্গার্স বাই প্রীতাঞ্জলিতে। চকোলেট, প্রদীপ, শুকনো ফল, আতশবাজি, বিভিন্ন রকম কেক দিয়ে সাজানো হ্যাম্পার রয়েছে সেখানে। খরচ শুরু হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে।
১০) চকিওকি
চকিওকির গিফ্ট হ্যাম্পার। —নিজস্ব চিত্র।
চকোলেট, ব্রাউনি, শুকনো ফল, কাপকেক, পাউরুটি, পপকর্ন, মশলা মাখানো বাদাম, মাখানা, কুকিজ়, আতশবাজি— একসঙ্গে সাজিয়ে উপহার দিতে পারেন বন্ধু কিংবা আত্মীয়দের। এমন হ্যাম্পার পেতে চলে আসতে পারেন আলিপুরের চকিওকিতে। ছোট থেকে বড় নানা রকম হ্যাম্পারের মূল্য শুরু হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে।
১১) লা ম্যাকারিও ক্যাফে
নানা ধরনের মেনুতে সাজানো লা ম্যাকারিও ক্যাফের প্ল্যাটার। —নিজস্ব চিত্র।
মল্লিক বাজারের কাছাকাছি থাকলে ভাইফোঁটা উদ্যাপন করতে চলে আসতেই পারেন এই ক্যাফেতে। বিভিন্ন প্ল্যাটারে সাজানো মেনুতে চোখ রাখতে এবং স্বাদ নিতে গেলে আসতেই হবে এখানে। প্রতি প্ল্যাটারের জন্য খরচ পড়বে ১৫০০ টাকা। তবে, এখানে কিন্তু সবই নিরামিষ।