Tick Fever in Dogs

টিক জ্বর বাড়ছে পোষা কুকুরদের, ক্ষতি হচ্ছে লিভার-কিডনিরও, কী ভাবে বাঁচাবেন? রইল কিছু পরামর্শ

অনেক দামি প্রজাতির কুকুরেরাও ভুগছে এই অসুখে। মরসুম বদল বলে নয়, টিক পোকার সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। কী ভাবে রোগ ছড়াচ্ছে, প্রতিরোধের উপায় কী, বলে দিলেন চিকিৎসক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ১৪:২৬
Share:
Tick infestation in dogs will rise in rising temperature and to prevent it

পোষা কুকুরদের মধ্যে পরজীবীর সংক্রমণ বাড়ছে, কী ভাবে সাবধানে রাখবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

মরসুম বদলের সময় বলে নয়, সারা বছরই জ্বর, সর্দি বা কাশি হতে পারে পোষা কুকুরের। তবে সম্প্রতি পোকায় কাটা জ্বর নিয়ে চিন্তা বেড়েছে। যে কোনও প্রজাতির কুকুরই হোক না কেন, এই পোকায় কাটা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এমনকি, অনেক দামি প্রজাতির কুকুরের শরীরেও পোকার সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। ওষুধ দিয়েও এমন রোগ সারানো সম্ভব হচ্ছে না অনেক সময়েই। উপরন্তু, পরজীবীর সংক্রমণে লিভার, কিডনির ক্ষতি হচ্ছে পোষ্যের। প্রাণসংশয়ের ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই সতর্ক হতেই হবে পোষ্যের অভিভাবকদের। কী ভাবে পোকার সংক্রমণ থেকে পোষ্যকে বাঁচাবেন, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ রইল।

Advertisement

কতটা বিপজ্জনক এই জ্বর?

টিক পোকার হানায় মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে পোষ্য কুকুরেরা। আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানালেন পশুরোগ চিকিৎসক চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “টিক জ্বর বা পোকায় কাটা জ্বর নিয়ে অনেক পোষ্যকেই আনা হচ্ছে। ছোট ছোট পোকা বাসা বাঁধছে পোষ্যের শরীরে। এদের বলা হয় এক্টোপ্যারাসাইট। এই সব পরজীবীরা কুকুর বা বিড়ালের শরীরে বাসা বাঁধে ও সেখানেই বংশবিস্তার করে। এদের কামড় থেকেই আরও নানা জীবাণুর সংক্রমণ হয় শরীরে। তার থেকেই জ্বর আসে। এমনকি জীবাণু সংক্রমণ থেকে কুকুরের লিভার, কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

Advertisement

পরজীবীর সংক্রমণে টিক জ্বর ছাড়াও অ্যানাপ্লাজ়মা, হেপাটোজ়োন, বেবেসিওসিসের মতো মারাত্মক প্রাণঘাতী সব রোগ হচ্ছে কুকুরের। এমন রোগে শরীর মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ে, খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকে, ফলে রক্তাল্পতার লক্ষণও দেখা দিতে পারে কুকুরদের। প্লেটলেট বা অনুচক্রিকার সংখ্যাও কমতে থাকে কিছু ক্ষেত্রে। নাক-মুখ, প্রস্রাব দিয়ে রক্তও বার হতে পারে। জন্ডিসের উপসর্গও দেখা দেয়।

কী ভাবে ছড়াচ্ছে রোগ?

চন্দ্রকান্তবাবু জানাচ্ছেন, রাস্তার কুকুরদের গায়েও এমন পোকা বসবাস করে। তার থেকেও বাড়ির পোষ্যদের শরীরে আসতে পারে। রাস্তায় নিয়ে গেলে অথবা পোষ্যদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও পোকা ছড়াতে পারে শরীরে। তাই এমন ভাবে পোষ্যকে আগলে রাখতে হবে, যাতে কোনও ভাবেই পরজীবীর সংক্রমণ না হয়। সাম্প্রতিক নানা গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, টিকের সংক্রমণ থেকে যে বেবেসিওসিস রোগ দেখা দেয়, তা গর্ভে ভ্রূণের শরীরেও ছড়াতে পারে। অর্থাৎ, মায়ের থেকে শাবকের শরীরেও সংক্রমিত হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায় কী?

পোষ্যের জন্য পাউডার বা স্প্রে পাওয়া যায়। সেগুলি ব্যবহার করলে, পোকার সংক্রমণ চট করে হবে না। যখনই পোষ্যকে বাইরে নিয়ে যাবেন, তখন সেই পাউডার বা স্প্রে ব্যবহার করতে পারলে ভাল।

বিভিন্ন রকম ‘টিক কলার’ পাওয়া যায় বাজারে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সেগুলি গলায় পরিয়ে দিলে গায়ে পোকা আসবে না।

‘স্পট অন থেরাপি’ও আছে কিছু। এক রকম ওষুধ, যা কুকুরের গায়ে নানা জায়গায় ছড়িয়ে দিলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায়, ত্বকে এই ওষুধ লাগানো যেতে পারে।

নানা রকম খাওয়ার ওষুধও পাওয়া যায়। তবে সেগুলি খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। এই সব ওষুধ খাওয়ালে আর সতর্কতা নিলে সাধারণত ৩ থেকে ৬ মাস গায়ে পোকা হবে না। সেই সঙ্গে অ্যান্টি-টিক সাবান ও শ্যাম্পুও ব্যবহার করা যেতে পারে।

চন্দ্রকান্তবাবু জানাচ্ছেন, কুকুরের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১০২.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। জ্বর হলে তাপমাত্রা কত বাড়ছে, কী ভাবে থার্মোমিটার ব্যবহার করতে হবে, তা জানার বিশেষ পদ্ধতি আছে। তাই সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement