কিরণ রাও এবং আমির খান ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
বিবাহবিচ্ছেদের পরেও অটুট রয়েছে আমির খান এবং কিরণ রাওয়ের পেশাদার সম্পর্ক। বিচ্ছেদের আগে তাঁদের প্রযোজনায় ‘দঙ্গল’, ‘ধোবি ঘাট’, ‘পিপলি লাইভ’-এর মতো ছবি পেয়েছে বলিউড। বিচ্ছেদের পরে তাঁদের তৈরি ‘লাপাতা লেডিজ়’ এ বছর অস্কারে ভারতের প্রতিযোগী। অথচ ২০২১ সালেই ১৬ বছরের বিবাহিত জীবনে ইতি টেনেছেন দু’জনে। তার পরেও একসঙ্গে ভাল কাজ করার মতো পেশাদার তালমেল বজায় থাকল কী করে? পুরনো সম্পর্ক কি পেশাদার জীবনে কোনও প্রভাব ফেলেনি? প্রশ্ন করা হয়েছিল আমির আর কিরণকে। জবাবে কিরণ পুরো কৃতিত্বই দিয়েছেন ধৈর্যকে। আমির অবশ্য জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পরে কিরণ তাঁকে ‘ভাল স্বামী’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই পরামর্শ তিনি নিজের মোবাইলে সেভও করে রেখেছেন, কাজে লাগবে ভেবে। যদিও আমিরের আফসোস, কিরণ কখনও তাঁর কাছ থেকে ‘ভাল স্ত্রী’ হওয়ার পরামর্শ চাননি।
আমির আর কিরণ দু’জনেরই বক্তব্য, বিবাহবিচ্ছেদ সম্পূর্ণ আলাদা একটি বিষয়। তাতে তাঁদের ভিতরে থাকা দু’জন সৃষ্টিশীল মানুষের উপর কোনও প্রভাব পড়েনি। আমিরের কথায়, ‘‘আমরা একে অপরের জ্ঞান এবং মেধার অনুরাগী। হয়তো তাই আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে ভালই লাগে। আমাদের ভাবনা এবং বোধ— দুই-ই অনেকটা এক ধরনের।’’ কিরণও বলছেন, ‘‘আমাদের নান্দনিকতাবোধ এক রকম। তা বলে এই নয় যে, আমাদের মতের অমিল হয় না। তবে যখন সেটা হয়, তখন আমরা একে অপরকে নিজেদের পয়েন্ট বোঝানোর সব রকম চেষ্টা করি। একই সঙ্গে আমরা পরস্পরের মতামতকে সম্মানও করি। আমার মনে হয়, সেই জন্যই আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক এত দিন ধরে ভাল রয়েছে।’’
কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদের সঙ্গে খুব সাধারণ ভাবেই আসে কিছু তিক্ততা। সম্পর্ক সফল না হওয়ার ভার । আমির অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের বিচ্ছেদের সঙ্গে কোনও তিক্ততা ছিল না। আর বিবাহবিচ্ছেদ মানে তো দুটো মানুষের পরস্পরের থেকে দূরে সরে যাওয়া নয়। আমরা স্বামী এবং স্ত্রীর ভূমিকা থেকে সরে এসেছি। মানুষ হিসাবে এখনও একই জায়গায় আছি।’’
এ প্রসঙ্গেই আমির বলেছেন, ‘‘আমি তো বিচ্ছেদের পর কিরণের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ভাল স্বামী হতে গেলে কী কী গুণ দরকার! কিরণ আমাকে ১১ পয়েন্টের একটা লিস্ট ধরিয়ে ছিল। তার একটাতে এ-ও বলা ছিল যে, আমি বড্ড বেশি কথা বলি। পরে কাজে লাগবে ভেবে আমি ওই লিস্টটা সেভ করে রেখেছি।’’
অনলাইন আড্ডা দিচ্ছিলেন দু’জনে। সেই আড্ডায় আমির হয়তো কিরণের তালিকায় থাকা আরও কিছু কিছু বিষয় বলতেন। কিন্তু কিরণ তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘তুমি কি পুরো লিস্টটাই বলে দেবে নাকি!’’ জবাবে কিরণকে থামিয়ে দিয়ে আমির বলেন, ‘‘তু চুপ রেহ (তুই চুপ কর)।’’ তার পরে বলতে শুরু করেন, ‘‘আমি এখনও প্রতি দিন ওই লিস্টটা দেখে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার আফসোস, কিরণ কখনও আমার কাছে ভাল স্ত্রী হওয়ার পরামর্শ চায়নি। আমাকে কখনও জিজ্ঞাসা কোরো। আমিও তোমাকে লিস্ট দেব।’’
আমিরের কথায় হাসতে হাসতেই কিরণ জবাব দেন, ‘‘থাক, আমি জানতে চাইও না। ভাগ্যিস আমি এখন প্রাক্তন। আমার আর জানার দরকারই নেই।’’