মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: সংগৃহীত।
মোবাইল-আসক্তির কারণে কায়িক পরিশ্রমহীন অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে খুদেরা। এই আসক্তি কাটাতে মোবাইল ব্যবহারে লাগাম রাখতে হবে খুদের মা-বাবার হাতেই, এমনটাই পরামর্শ দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
খুদের বয়স সবে এক বছর। এর মধ্যেই ফোনের আওয়াজ শুনলেই সে হাত-পা নাড়তে থাকে। চোখের সামনে ফোন না ধরলে নাওয়া, খাওয়া, ঘুমোনো কোনও কিছুই সময় মতো হয় না। মোবাইল হাতে ধরিয়ে দিলে কিছু ক্ষণের জন্য অভিভাবকেরাও নিশ্চিন্ত থাকেন। খুদেকে ভুলিয়ে রেখে বাড়ির কাজ সামলে নেওয়া যায়। তুলনায় একটু বড় খুদেদের তো আরও মজা। কারণ, তাদের পড়াশোনার অনেকটাই কম্পিউটার কিংবা মোবাইল নির্ভর। তাই চাইলেও বাবা-মায়েরা বেশি ক্ষণ এই যন্ত্রটি ছাড়া থাকতে বলতে পারেন না। বাইরে গিয়ে মাঠে-ঘাটে হাত-পা কেটে ছড়ে আসার চেয়ে তো ভাল! তবে সমস্যাও আছে। অত্যধিক মোবাইল-আসক্তির কারণে অনিদ্রা, চোখের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। অল্প বয়সেই স্থূলত্বের মতো সমস্যা গ্রাস করছে তাদের। ডিজিটাল ডিভাইসে মুখ গুঁজে বসে থাকার অভ্যাস খুদেদের মনোযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। কোনও কোনও সময় শিশুরা অনেক বেশি হিংসাত্মক আচরণ করে— এর পিছনেও অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল-আসক্তিই দায়ী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ধোনি জানান, কেন শিশুদের মোবাইল ফোন দূরে সরিয়ে রেখে মাঠে খেলতে যাওয়া উচিত। ধোনি বলেন, ‘‘এখন শিশুদেরই দেখি দিনের বেশির ভাগ সময়টা তারা ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সঙ্গেই কাটায়। তাদের কিন্তু নিজেদের রুটিন থেকে সময় বার করে বাইরে খেলতে যাওয়া উচিত। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলতে যাওয়ারও কিন্তু জীবনে যথেষ্ট প্রয়োজন আছে।’’
মোবাইলের বদলে ধোনি খেলাধূলার প্রতি শিশুদের ঝোঁক বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিচ্ছেন বাবা-মায়েদের। ধোনি বলেন, ‘‘খেলাধূলার সঙ্গে যুক্ত থকলে জীবন সম্পর্কে বুঝতে সুবিধা হবে। যে কোনও স্পোর্টস খেললে কী ভাবে ব্যর্থতার সঙ্গে লড়াই করা যায়, কী ভাবে সাফল্যের পেয়েও মাটির মানুষ হয়ে থাকা যায়, বিরোধী পক্ষকে কী ভাবে সম্মান করা যায়— জীবনের এই সহজপাঠগুলি খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলা যায়। যাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েকে ছোট থেকেই খেলাধূলার সঙ্গে যুক্ত রাখেন, আমি তাঁদের বড় ভক্ত।’’