Divorce Depression

কেন বিয়ে ভাঙল ইমরান-অবন্তিকার? কোন মানসিক স্থিতি ভাঙনের কারণ হতে পারে, ব্যাখ্যা দিলেন চিকিৎসক

দীর্ঘদিনের প্রেম ও সুখী দাম্পত্যের কেন এমন ইতি হল, তার কারণ হিসাবে নিজের জীবনের নানা ওঠাপড়া ও চরম অবসাদকেই দায়ী করেছেন ইমরান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ২১:০৪
Share:

কেন বিয়ে ভাঙল, জানালেন ইমরান। ছবি: সংগৃহীত।

আট বছরের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন বলিউড অভিনেতা ইমরান খান। বান্ধবী-প্রেমিকা অবন্তিকার সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদে প্রায় পাঁচ বছর পরে সেই যন্ত্রণার সময়টা নিয়ে মুখ খুলেছেন ইমরান। দীর্ঘদিনের প্রেম ও সুখী দাম্পত্যের কেন এমন ইতি হল তার কারণ হিসাবে নিজের জীবনের নানা ওঠাপড়া ও চরম অবসাদকেই দায়ী করেছেন ইমরান। বিচ্ছেদের পরবর্তী সময়টাতেও খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাঁকে।

Advertisement

আমরা যখন কোনও আবেগঘন সম্পর্কে জড়াই, তখন সঙ্গীর ভাল দিকগুলিকেই দেখি। তার দোষ-ত্রুটিগুলি দেখেও এড়িয়ে যাই। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই সম্পর্ক যখন বিয়ের পরিণতি পায়, তখন সেই না দেখা ছোট ছোট দোষত্রুটিও আমাদের চোখে বড় হয়ে দেখা দিতে থাকে। সেই সঙ্গেই শুরু হয় তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা, যা সম্পর্ককে ক্রমশ তিক্ততার দিকে নিয়ে যায়। ইমরানের ক্ষেত্রেও বিচ্ছেদের কারণ অনেকটা তেমনই ছিল। অভিনেতা বলছেন, একটা সময় গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন তাঁর জীবনের সমস্ত সমস্যা, লড়াই তাঁকে একাই লড়তে হচ্ছে। মানসিক ভাবেও তিনি একা। জীবনসঙ্গীর থেকে তাঁর আর কিছুই পাওয়ার নেই, মানসিক সমর্থনও নয়। সেই সময়টা থেকেই ভালবাসার বন্ধনে চিড় ধরতে শুরু করে একটু একটু করে।

কোন মানসিক স্থিতিতে সম্পর্কে ভাঙন ধরে?

Advertisement

ইমরান-অবন্তিকার বিচ্ছেদের প্রসঙ্গ টেনেই কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থ নাগড়া বলেছেন, ইমরান যে মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তা তাঁর সম্পর্কে ভাঙনের অন্যতম কারণ। সেই অবসাদ আসতে পারে নানা কারণে যেমন, পেশাগত ব্যর্থতা, ভুল বোঝাবুঝি, ক্রমাগত মতের পার্থক্য, সম্পর্কে তৃতীয় কারও উপস্থিতি বা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে লাগাতার তুলনা। এই অবসাদের কী ভাবে ছাপ ফেলে সম্পর্কে?

১) দিনের পর দিন নিজের মধ্যে গুমড়ে থাকা, সমস্যাগুলি সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা না করা, নিজের মধ্যেই মনগড়া চিন্তা বা বিশ্বাস আঁকড়ে থাকা যে কোনও সম্পর্ককেই জটিল করে তোলে। তখন মনের চাপ আরও বেড়ে যায় এবং তার থেকে গভীর অবসাদ তৈরি হয়। এই অবসাদের কারণে তখন নিজেকে আরও গুটিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। কথোপকথনের রাস্তাটাও বন্ধ হয়ে যায়।

২) চিকিৎসকের বক্তব্য, অবসাদ শারীরিক ও মানসিক সক্রিয়তাকেও কমিয়ে দেয়। অনেক বেশি ক্লান্ত, দুর্বল লাগে। মানসিক ক্লান্তি এতটাই বেড়ে যায় যে সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতেও আর ইচ্ছা করে না। পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিগুলি নিয়ে আলোচনা করা অথবা একে অপরকে সময় দেওয়াও হয়ে ওঠে না আর। ফলে তিক্ততা আরও বাড়তে থাকে।

৩) নিজের মানসিক অবসাদের সঙ্গে লড়তে লড়তে কখন যে আপনজনেদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়, তা বুঝেই উঠতে পারেন না অনেকে। সেই সময়ে সঙ্গী যদি পাশে থাকেন ও মানসিক ভাবে সমর্থন করেন, তা হলে হয়তো পরিস্থিতি ভালর দিকে যায়। তা না হলে সমস্যা আরও গভীরে চলে যায়। কঠিন সময়ে যদি সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়া, অশান্তি, মনোমালিন্য আরও বাড়ে তাহলে বিশ্বাস ও ভরসার বাঁধন ভাঙতে বেশি দেরি হয় না।

৪) অনেকেই এই সময়টাতে সম্পর্ক নিয়ে খুব বেশিমাত্রায় স্পর্শকাতর হয়ে ওঠেন। সঙ্গীর প্রতিটা কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সমালোচনা করেন। সঙ্গীকে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সব কিছুতে নজরদারি করার চেষ্টা করেন। অতিরিক্ত আগলে রাখতে গিয়ে ব্যাপারটা জোর জবরদস্তির পর্যায়ে চলে যায়।

৫) সম্পর্ক থেকে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি হয় মনে। ঘন ঘন বদলে যেতে থাকে মেজাজ। ব্যবহারেও পরিবর্তন আসে যা চারপাশের মানুষজনের জন্য আরও বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে।

৬) সামাজিক ভাবেও এইসব মানুষ নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন এক সময়ে। সঙ্গীর সঙ্গে ডেটে যাওয়া, অনুষ্ঠান বাড়ি বা পার্টিতে যেতেও পছন্দ করেন না। মনে ভয় থাকে যদি কেউ তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করে ফেলে। এই মানসিক বদল একাকিত্বের কারণ হয়ে ওঠে। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কগুলিও তখন দূরে চলে যেতে থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement