বাড়ির বয়স্ক মানুষদের যত্ন নেবেন কী ভাবে। ছবি: ফাইল
বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়। বয়স্ক মানুষদের জন্য তা হতে পারে আরও কঠিন। তাই বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তাঁরা সুস্থ, সুখী এবং নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারেন।
শারীরিক যত্ন
নিয়মিত চিকিৎসা ও পরীক্ষা: বাড়ির বয়স্ক সদস্যের নিয়মিতভাবে শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত, প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হতে পারে। রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ, ট্রাইগ্লিসারাইড প্রভৃতি যেন সঠিক মাত্রায় থাকে, সেদিকে নজর দিন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য: বয়স্ক মানুষদের স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্য পরিবেশন করতে হবে। প্রচুর ফল, শাকসব্জি, বাদাম, দুধ এসব খাওয়া প্রয়োজন। বেশি তেল মশলা নিয়মিত এড়িয়ে চলা অবশ্য প্রয়োজন।
নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম বয়স্ক মানুষদের শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল থাকতে সাহায্য করে। কার জন্য কোন ব্যায়াম উপযুক্ত জেনে নিন।
ওষুধ: বয়স্কদের যদি একাধিক ওষুধ খেতে হয়, তবে তাঁদের ওষুধ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সেগুলি সঠিকভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের সঙ্গ দেওয়া জরুরি। — প্রতীকী ছবি
মানসিক যত্ন:
সামাজিক সংযোগ: বয়স্কদের সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকা এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। নাহলে একাকিত্ব বোধ হবে। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে যাতে, তাঁরা মানসিকভাবে একাকী না বোধ করেন।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: বয়স্ক ব্যাক্তির যদি বিষণ্ণতা বা উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। প্রয়োজনে, বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পছন্দের কাজে নিযুক্ত থাকা: বয়স্ক মানুষদের তাঁদের মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখার জন্য কোনও প্রিয়, ভাল লাগার কাজে জড়িয়ে থাকা উচিত, যেমন বই পড়া, ধাঁধা সমাধান করা, বা নতুন কিছু শেখা।
মানসিক চাপ কমানো: বয়স্কদের মানসিক চাপ মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজে বের করা উচিত, যেমন যোগব্যায়াম বা ধ্যান।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
আর্থিক নিরাপত্তা: বয়স্কদের অবসরের জন্য পরিকল্পনা করা এবং তাঁদের আর্থিক বিষয়গুলির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
আইনি বিষয়: বয়স্কদের আইনি বিষয়গুলি, যেমন তাঁদের ‘উইল’ এবং স্বাস্থ্য বিমা ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
সহায়ক ব্যবস্থা: বয়স্কদের জন্য অনেকগুলি সহায়ক ব্যবস্থার আজকাল চল রয়েছে, যেমন ‘হোম হেলথ কেয়ার’ এবং ‘অ্যাডাল্ট ডে কেয়ার’। দরকারে এগুলির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
সহায়ক প্রযুক্তি: বয়স্কদের দৈনন্দিন কাজে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়ক প্রযুক্তি রয়েছে, যেমন হুইলচেয়ার, ওয়াকার – এগুলি তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
ঘরের পরিবর্তন: অসাবধানে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে, তাঁদের বাড়িতে কিছু পরিবর্তন করা যেতে পারে, যেমন মেঝেতে নন-স্লিপ ম্যাট রাখা বা সিঁড়িতে হাত রেল লাগানো। এসব বিষয়ে একটু নজর রাখাও প্রয়োজন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, আমাদের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পরিবর্তিত হয়। বয়স্কদের জন্য, এই পরিবর্তনগুলি আরও বেশি কঠিন হতে পারে। তাই, তাঁদের পাশে থাকুন, যাতে তাঁরা সুস্থভাবে এক পরিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারেন।