Parenting Tips

বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের কথা সন্তানকে জানাবেন কী ভাবে? শিশুকে যত্নে রাখার উপায়ই বা কী?

বাবা-মা ও সন্তান। সুন্দর সংসার হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদে। ভেঙে যাওয়া পরিবারে সন্তানকে বড় করবেন কী ভাবে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ১২:১০
Share:
How to face your child and take care of them after the parents are divorced

বিচ্ছেদের পর সন্তানের লালনপালন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

বাবা-মায়ের হাত ধরে বড় হবে সন্তান। এমনটাই হওয়ার কথা। কিন্তু কখনও পরিচিত সেই সমীকরণ বদলে যায় জীবনে। বোঝাপড়ার অভাব, মানিয়ে নিতে না পারা আর রোজের দাম্পত্য কলহ শেষ হয় বিচ্ছেদে। স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব এসে পড়ে খুদে সদস্যের উপর। বাবা-মায়ের আলাদা হয়ে যাওয়া সন্তানের জীবনেও ঝড় তোলে।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে গুরুদায়িত্ব সন্তানকে সুস্থ ভাবে বড় করার। সেই দায় কার? যিনি সন্তানের দায়িত্ব পেলেন তাঁর, না কি দু’জনেরই!

প্রথম যে সমস্যার অসুবিধার সম্মুখীন হন অভিভাবকেরা-

Advertisement

কী ভাবে সন্তানকে বলবেন, তাঁরা একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। সন্তানকে হয় মা, নয় তো বাবার কাছে থাকতে হবে।

এ বিষেয় পেরেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষের পরামর্শ, ‘‘বিষয়টি কঠিন হলেও বাবা-মা দু’জনকে একসঙ্গে সেই কাজ করতে হবে। সন্তানকে বোঝাতে হবে বাবা-মা আর একসঙ্গে ভাল নেই। ভাল থাকতে পারছেন না। তাই আপাতত তাঁরা আলাদা থাকবেন। তবে তার আদর-ভালবাসা কমবে না কোনওমতেই।’’

সন্তানের উপর বিচ্ছেদের প্রভাব

১. বয়স অনুযায়ী সন্তানের মনে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব বিভিন্ন ভাবে পড়ে। খুব ছোট যে, তার যদি দৈনন্দিন রুটিন বদলে যায়, তখনই তার মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হতে থাকে।

২. ছয়, সাত বা তার বেশি বয়সিদের মধ্যে বোঝার ক্ষমতা তুলনায় বেশি। তারা হয়তো পড়াশোনা বাবা-মা দু’জনের কাছেই করত। তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ এক জনের না থাকা মন তো বটেই, পড়াশোনাতেও প্রভাব ফেলে। শুধু তা-ই নয়, পুরনো কোনও সুখস্মৃতি তাদের মধ্যে চোরা মনখারাপ তৈরি করে।

৩. সন্তান যদি কৈশোরে পৌঁছয়, তাদের মনে প্রভাবটা বেশ জটিল হতে পারে। স্কুল থেকে গৃহশিক্ষক, বন্ধু, আত্মীয় সকলের প্রশ্নের মুখে পড়ার ভয় থাকে। লোকে কী বলবে, আর সে কী বলবে, সেই দ্বন্দ্ব তাড়া করে বেড়ায়।

বয়স অনুযায়ী সন্তানের মনে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব বিভিন্ন ভাবে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত।

অভিভাবকের সঠিক মানসিকতা

স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের পরেও কিন্তু সন্তানকে সুস্থ ভাবে বড় করে তোলা সম্ভব। বুঝতে হবে, দাম্পত্য সম্পর্ক শেষ হলেও বাবা-মায়ের দায়িত্ব শেষ হয়নি। সন্তানকে তো বাবা-মা দু’জনেই ভালবাসেন।

সরকারি চাকরিজীবী সানন্দা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়, তখন ছেলের বয়স ছিল সাত। এখন সে অনেকটাই বড়। ছেলের যখন ইচ্ছা হয়, সে বাবা ও ঠাকুরমার সঙ্গে থাকে। আবার সপ্তাহ শেষে মায়ের ছুটির দিনগুলিতে মায়ের সঙ্গে থাকে। বেড়াতে যায়। তার পড়াশোনাও বাবা-মা দু’জনেই যতটা পারে দেখে।

বিচ্ছেদের পর সন্তানকে বড় করতে হলে তার মনের দিকটা বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে, বলছেন পায়েল। তাঁর কথায়, ‘‘মা অথবা বাবা, যাঁর কাছেই সন্তান থাকুক, একে অন্যের বিষয়ে খারাপ কথা বলা অনুচিত। বরং সন্তান যাতে মা ও বাবা দু’জনকেই ভালবাসতে পারে, সে দিকটাই দেখা দরকার। সন্তানের স্বার্থে বাবা-মা একসঙ্গে কোথাও খেতে পারেন, আইনি সমস্যা না থাকলে ঘুরতেও যেতে পারেন।’’

আসলে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হলেও বাবা-মায়ের পরিচয়টা যে বদলে যায় না, সেটাই সন্তানকে বড় করার সময়ে মাথায় রাখা খুব জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement