প্রতীকী ছবি
বর্তমানে কাজের চাপের ফলে বেশির ভাগ সময়ই বাবা-মায়ের সঙ্গ পায় না এখনকার শিশু-কিশোররা। আর এই খামতি পূরণের জন্য কেউ আবার নিজের ছেলেমেয়েকে অতিরিক্ত প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর ফলে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের যে দূরত্ব তৈরি হয় তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠে ফাটলের মতো। এ বিষয়ে অভিভাবকদের নজর দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে যখন শিশুটি তার কৈশোরে থাকে, তখন মা-বাবার সঙ্গে এই দূরত্ব তার মধ্যে তৈরি করতে পারে নানা বদভ্যাস। ফলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শুধু প্রশ্রয় বা উপহার এই সমস্যার সমাধান নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে বাবা-মা যখন বাচ্চাদের শাসন করেন, তখন এটি তাদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শিখতে সাহায্য করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা যা তারা নীজের জীবনের পরবর্তী ক্ষেত্রে কাজে লাগতে পারে।
১। দিনে অন্তত একবেলা খাবার খান। একটি পরিবার হিসাবে একসঙ্গে খাওয়া আপনার সন্তানের অনেকটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে। এই সময় পরিবারের প্রত্যেককে তাদের ফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট দূরে রাখতে এবং একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করতে উত্সাহিত করুন। খাওয়ার সময় বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্যের গুরুত্ব শেখানোর সুযোগ পাওয়া যায়। একসঙ্গে কাটানো এই সময় কিন্তু তাদের সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে।
ধৈর্য ধরে আপনার সন্তানের কথা শুনুন
২। মাঝেমধ্যেই একসঙ্গে শরীরচর্চার জন্য নাচ-গানের চেষ্টা করুন। এটি আবার খেলারও সবচেয়ে সহজ কিন্তু সবচেয়ে আকর্ষক একটি উপায়। আপনি যদি আপনার সন্তানের সঙ্গে কী খেলবেন তা স্থির করতে সমস্যায় পড়েন, তা হলে এমন কিছু গান বা বাজনা চালিয়ে দিন যা আপনার সন্তানও উপভোগ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই প্রক্রিয়া থেরাপির মতো কাজ করে। এবং সন্তানকে মানসিক ভাবে আপনার কাছাকাছি এনে দিতে ভীষণ ভাবে সহায়ক।
৩। সব সময় প্রশ্রয় নয়, কড়া নিয়মকানুনও প্রয়োজন। একটা বয়সের পর ভাল-খারাপ সম্পর্কে ধারণা তৈরি শুরু করুন আপনার শিশুর। কোন কাজ করা উচিত বা উচিত নয় এই নিয়ে তার মতামত স্পষ্ট ভাবে গড়ে উঠতে সহায়ক হন। সামাজিক দায়দায়িত্ব সম্পর্কেও কিন্তু তাকে সচেতন করে তোলার দায়িত্ব আপনারই। এই প্রক্রিয়া বিবর্তনশীল এবং এর মাধ্যমে বন্ধু হিসেবেও আপনি আপনার সন্তানের মনের কাছাকাছি যেতে পারবেন।
৪। ধৈর্য ধরে আপনার সন্তানের কথা শুনুন। ইদানীং কাজের চাপের ফলে এমন অনেক কথাই আপনার সঙ্গে বাড়ির ছোট্ট সদস্য হয়তো আর ভাগ করে না। কিন্তু সেগুলি আপনার জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। নিজের কথা বলতে দিন ওকে। শোনার সঙ্গেই সংযোগ শুরু হয়। আপনার সন্তানের অনুভূতি বুঝে তার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করুন। এতে আপনাদের নৈকট্য বাড়ার পাশাপাশি সে আপনার উপর নির্ভর করতে শুরু করবে।