Pet Obesity

স্থূলত্ব বাড়ছে কুকুরেরও! বিশ্বে ৪০ শতাংশের বেশি পোষা কুকুরের ওজন বেশি, কী ত্রুটি হচ্ছে যত্নে?

বিশ্ব জুড়ে পোষ্যের ওজন বৃদ্ধির বিষয়টি ক্রমেই উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সমীক্ষা দেখিয়েছে, মানুষ কেবল নয়, স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে পোষা কুকুর ও বিড়ালও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৪
Share:
A survey revealed approximately 40 percent adult dogs globally classified as overweight

পোষা কুকুরের ওজন বাড়ছে কেন, কী ভুল করছেন অভিভাবকেরা? ছবি: ফ্রিপিক।

গোলগাল, নাদুসনুদুস কুকুরশাবক দেখতে বেশ লাগে। আদর করে যখন যা মনে হল খাইয়ে দিলেন। সে-ও আদুরে চাউনি দিয়ে চেটেপুটে খাবার শেষ করে আরও খাবে বলে আপনার পায়ে পায়ে ঘোরাঘুরি শুরু করল। আর আপনিও নিজে যা খেলেন তা-ই ওকে খাইয়ে গেলেন। পরে দেখা গেল, পোষ্য যত বড় হচ্ছে ততই তার ওজন বাড়ছে। সেই সঙ্গে আলস্যও পেয়ে বসছে। ঘরের কোণে গুটিসুটি মেরে থাকতেই সে পছন্দ করে। লাফালাফি, দৌড়োদৌড়ি মোটেই পছন্দ নয় তার। এই বিষয়টিকে সমস্যা বলে মনে না-ও হতে পারে। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে পোষ্যের ওজন বৃদ্ধির বিষয়টি ক্রমেই উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সমীক্ষা দেখিয়েছে, মানুষ কেবল নয়, স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে পোষা কুকুর ও বিড়ালও।

Advertisement

পোষ্যের স্থূলত্ব নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে ‘রয়্যাল ক্যানিন সার্ভে’। ভারত, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, মেক্সিকো-সহ বিশ্বের অনেক দেশেই এই সমীক্ষা চলছে। দেখা গিয়েছে, ভারত-সহ বিশ্বের অন্তত ৮টি দেশের পোষা কুকুরদের ৪০ শতাংশের বেশি স্থূলত্বের শিকার। কেবল তাই নয়, ওজন বৃদ্ধির কারণে তাদের মধ্যে অনেকেরই ডায়াবিটিস, হার্টের রোগও দেখা দিয়েছে।

কেন ওজন বাড়ছে পোষা কুকুরের?

Advertisement

গবেষকেরা কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন—

১) পোষ্যের প্রজাতি ও ওজন দেখেই তার খাওয়াদাওয়া ঠিক করতে হয়। কোন প্রজাতির কুকুরের ডায়েট কেমন, তা না জেনেই খাওয়াতে থাকেন অভিভাবকেরা।

২) কোন বয়সে পোষ্যের ওজন কত হওয়া উচিত, সে নিয়ে ধারণা নেই বেশির ভাগেরই।

ওজন বাড়লে নানা রোগ দেখা দেবে পোষা কুকুরেরও। ছবি: ফ্রিপিক।

৩) দিনভর মোবাইল, ল্যাপটপে ডুবে থেকে এবং শরীরচর্চা না করে পোষ্যের অভিভাবকেরা নিজেরাই স্থূলত্বের শিকার হচ্ছেন। ফলে পোষ্যেরও শরীরচর্চা ঠিকমতো হচ্ছে না।

এই বিষয়ে পশুরোগ চিকিৎসক চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, পোষ্যের ওজন ঠিক রাখতে হলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতেই হবে। যেমন, প্রতি দিন নিয়ম করে পোষা কুকুরকে সকালে ও বিকালে হাঁটাতে নিয়ে যেতে হবে। পোষ্য দৌড়োদৌড়ি করতে পারলে খুব ভাল হয়। এতে তারও ব্যায়াম হবে, আর আপনারও।

দ্বিতীয়ত, প্রতি ২ থেকে ৩ সপ্তাহ অন্তর পোষ্যের নিয়মমাফিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো জরুরি। তা ছাড়া ২ থেকে ৩ মাস অন্তর ওজনও মাপতে হবে। পোষ্যের ওজন খুব বেড়ে গেলে যেমন তা চিন্তার, তেমনই ওজন কমাও ভাল লক্ষণ নয়। এতে বোঝা যাবে পোষ্যের ডায়াবিটিস হচ্ছে কি না।

তৃতীয়ত, ডায়েট ঠিক করতে হবে নিয়ম মেনে। কুকুরের খাবারে বেশি পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার থাকা উচিত। গাজর, ব্রকোলির মতো উচ্চ ফাইবার ও কম ফ্যাটের খাবার দিতে হবে। কোনও রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্যাকেটের খাবার না দেওয়াই ভাল। চকোলেট, মিষ্টি জাতীয় কিছু দেওয়া চলবে না। আপনি নিজে যা খান, তা পোষ্যকে খাওয়াবেন না। মাছ বা চিকেন সেদ্ধ করে দিতে হবে। কোনও রকম তেলেভাজা খাবার পোষ্যকে দেবেন না। আম, আপেল, কলা, তরমুজের মতো ফল খাওয়ানো যেতে পারে পোষ্যকে। তবে ফলে অ্যালার্জি হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। পোষ্যের যদি ডায়াবিটিস ধরা পড়ে, তা হলে ১২ ঘণ্টা অন্তর দু’বার খাওয়াতে হবে।

বল ছোড়াছুড়ি বা ফ্রিসবি খেলতে খুবই পছন্দ করে কুকুরেরা। ফ্লাইং ডিস্ক ছুড়ে ওদের সঙ্গে খেলতে পারেন। তবে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে নয়, আপনাকেও দৌড়তে হবে ওর সঙ্গে। চেষ্টা করবেন, একটু বেশি দূরে ডিস্কটি ছুড়তে, তাতে অনেকটা দৌড়নো হয়ে যাবে। নিয়মিত এমন খেলা খেললে পোষ্য এবং পোষ্যের মালিক, দু’জনেরই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement