আকাশ দীপ। ছবি: সংগৃহীত।
বছর ঘুরে বাজল আইপিএল-এর বাদ্যি। শুক্রবার চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ‘চেন্নাই সুপার কিংস’-এর সঙ্গে ‘রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু’র ম্যাচের মধ্যে দিয়ে শুরু হতে চলেছে এ বছরের আইপিএল। আইপিএল-এ বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলেন বাংলার পেসার আকাশ দীপ। কিছু দিন আগেই ভারতীয় দলের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে বিহারের ভূমিপুত্রের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের শুরুতেই নজর কেড়ে নিয়েছেন আকাশ। আইপিএল মরসুমের প্রথম ম্যাচ শুরু হতে বাকি আর কয়েক ঘণ্টা। তার আগে ডায়েট রুটিন থেকে সতীর্থ বিরাট কোহলির সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ— নানা বিষয় নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে গল্প করলেন আকাশ।
প্রশ্ন: ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে জীবন কতটা বদলাল আকাশের?
আকাশ দীপ: জীবন বিশেষ বদলায়নি। তবে অনেক বড় একটা স্বপ্নপূরণ হয়েছে। দেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন সব ক্রিকেটারই লালন করেন। আমিও তার ব্যতিক্রম নই।
প্রশ্ন: খেলোয়াড় মানেই তাঁকে ফিট হতে হবে। তার উপর আপনি ফাস্ট বোলার। আপনি কী ফিটনেস রুটিন মেনে চলেন?
আকাশ দীপ: খেলোয়াড় মানে সকলেই এক ধরনের রুটিন মেনে চলেন, তা কিন্তু নয়। শরীরের কতটা প্রয়োজন, সেটা আগে জেনে নেওয়া জরুরি। কী ধরনের ডায়েট, কেমন শরীরচর্চা করলে লাভ হবে, সেটা জানা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। জেনে যাওয়ার পর সেই রুটিন মেনে চলতে হয়। আমিও সেটাই করি। কখনও ইচ্ছা করলে অক্লান্ত পরিশ্রম করি। আবার কখনও একটু বিশ্রাম নিই। তবে ভারসাম্য থাকা জরুরি। না হলে নিজেরই ক্ষতি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের শুরুতেই নজর কেড়ে নিয়েছেন আকাশ দীপ। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: আর খাওয়াদাওয়া?
আকাশ দীপ: সাপ্লিমেন্ট খাওয়া খুব একটা পছন্দ করি না। এমনি খাবারেই ভরসা রাখি। প্রোটিন-ফাইবার আছে, এমন খাবার তাই বেশি করে খাই। যাতে আলাদা করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার কোনও প্রয়োজন না পড়ে।
প্রশ্ন: শরীরচর্চা করেন না?
আকাশ দীপ: না করে উপায় নেই। আমি ফাস্ট বোলার। আমার ফিট থাকা অত্যন্ত জরুরি। আর শারীরিক ভাবে ফিট থাকতে হলে শরীরচর্চা হল একমাত্র পথ। ফিট থাকার জন্য বেশ কিছু ট্রেনিং করতে হয়। ম্যাচ থাক বা না থাক, ফিটনেস ট্রেনিং করতেই হয়। চোট লাগলে তখন আলাদা বিষয়।
প্রশ্ন: অভিনেতা আর খেলোয়াড়েরা সারা দিনে কী কী খান তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। পর্দার এবং বাইশগজের তারকারা অবশ্য বিষয়টি গোপনেই রাখতে চান। আকাশ কি বলবেন?
আকাশ দীপ: না বলার কিছু নেই। আমি খুবই সাধারণ খাবার খাই। ফল, ফলের রস, সেদ্ধ ডিম, দোসা, ইডলি। অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না যে আমি ভাত, ডাল, সব্জিও বেশির ভাগ সময়ে খাই।
আকাশ দীপ পছন্দ করেন ঘরোয়া খাবার। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: কী বলছেন, আপনি ভাত খান! সত্যি?
আকাশ দীপ: হ্যাঁ খাই। আমার ঘরোয়া খাবার পছন্দ। আর তা ছাড়া, কখনও কখনও কার্বোহাইড্রেটেরও দরকার হয় শরীরে। তার জন্য ভাতের কোনও বিকল্প নেই। ব্রাউন রাইস কিংবা ব্ল্যাক রাইসও খাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে। তবে এটা সত্যি যে আমি ভাত খাই।
প্রশ্ন: বিরাট কোহলি ক্রিকেটের অন্যতম ফিটনেস আইকন। বিরাট আপনার সতীর্থও। বিশেষ কোনও পরামর্শ পেয়েছেন তাঁর কাছ থেকে?
আকাশ দীপ: রোনাল্ডো আমার ফিটনেসের অনুপ্রেরণা। কিন্তু বিরাটের থেকেও আমি কম কিছু শিখিনি। ফিট থাকার জন্য যে পরিশ্রম আমি করতে দেখেছি, তা সত্যিই কল্পনার বাইরে। অথচ কোনও ক্লান্তি নেই। সারা সকাল ট্রেনিং করে, জিম করার পরেও বিরাটকে দেখে মনে হবে না যে ও এক ফোঁটাও ক্লান্ত। এক জন খেলোয়াড়ের সারা ক্ষণ চাঙ্গা থাকা জরুরি। আর সেটা ও থাকে।
প্রশ্ন: বিরাট কি আপনার ফিটনেস গুরু?
আকাশ দীপ: বিরাট কোহলির থেকে শিখেছি কী ভাবে ক্লান্ত না হয়ে একটানা ট্রেনিং করে যেতে হয়। বিরাটের মতো পরিশ্রমী মানুষ খুব কম দেখেছি। যা-ই হয়ে যাক, পৃথিবী এ দিক থেকে ও দিকে চলে গেলেও ট্রেনিং মিস্ করতে দেখিনি কখনও।
রোনাল্ডো আকাশ দীপের ফিটনেসের অনুপ্রেরণা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: বিহার থেকে এসে ৭ বছর টানা কলকাতায় ছিলেন। বাংলা বলতে কি তখনই শিখেছেন?
আকাশ দীপ: (হাসি) হ্যাঁ। তবে ঝরঝরে বাংলা আমি বলতে পারি না। আটকে যায়। সব বুঝতে পারি। বাংলায় গালি দিলেও বুঝে যাব কী বলেছে....।
প্রশ্ন: কলকাতার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কী?
আকাশ দীপ: নলেন গুড়ের রসগোল্লা। ভীষণ প্রিয়। মুখে দিলেই মন ভরে যায়।