দু’জন চিকিত্সকের একজন বিয়ের জন্য ছুটিতে গিয়েছেন। অন্য জন এক সপ্তাহ স্বাস্থ্যকেন্দ্র মুখো হননি। তাই গত এক সপ্তাহে কোনও রোগী ভর্তি নেওয়াই হল না। সাঁকরাইল ব্লকের ১০ শয্যা বিশিষ্ট কুলটিকরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমনই হাল।
মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত চিকিত্সকে হাতের কাছে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। অনিয়মিত উপস্থিতির জন্য ভারপ্রাপ্ত চিকিত্সক গৌরব মুখোপাধ্যায়কে এ দিন প্রায় ঘন্টা তিনেক তালা বন্ধ করে রাখেন তাঁরা। অভিযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুত সংযোগও। পরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের হস্তক্ষেপে ঘেরাও মুক্ত হন ওই চিকিত্সক।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গৌরববাবুর বদলির নির্দেশ এসেছে। কিন্তু ‘রিলিভার’ চিকিত্সক না আসায় তিনি এখনও সেখানে যেতে পারেননি। সে জন্য গৌরববাবু স্বাস্থ্যভবনে ছোটাছুটি করছেন। কুলটিকরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত যেতে পারছেন না। মাস খানেক হল ঝাড়গ্রাম ব্লক থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অস্থায়ী ভাবে সঞ্জয় মাল নামে এক চিকিত্সককে পাঠানো হয়। কয়েক দিন কাজ করার পরেই সঞ্জয়বাবু নিজের বিয়ে উপলক্ষে লম্বা ছুটি নেন।
অন্য দিকে, গৌরববাবুও দিন সাতেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাননি। এর ফলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অচলাবস্থা দেখা দেয়। বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, গৌরববাবু কখনওই নিয়মিত আসতেন না। বদলির নির্দেশ আসার পর আরও অনিয়মিত হয়ে পড়েন।
দুই চিকিত্সকের কেউই না থাকায় নার্সরা রোগীদের ভর্তি নিতে রাজি হননি। আসন্ন প্রসবা মহিলাদের নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েন পরিজনরা। অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের জন্য বিশেষ পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। অথচ চিকিত্সক না থাকায় রোগীরা কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না।
এ দিন বিএমওএইচ বাসববিজয় শীট উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর দুপুর ১টা নাগাদ বিক্ষোভ ওঠে। ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, ‘‘গৌরববাবুর বদলি চিকিত্সক না আসায় তাঁকে রিলিজ করা যায়নি। তিনি এখনও কুলটিকরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন। ছুটিতে থাকা অন্য চিকিত্সকও এ দিন কাজে যোগ দিয়েছেন।’’