পচে যাওয়া প্যাংক্রিয়াসের অস্ত্রোপচার করতে পুরো অ্যানাস্থেশিয়ার আর প্রয়োজন নেই। আংশিক অ্যানাস্থেশিয়া করেই এই চিকিৎসা সম্ভব। এমনটাই বলছে নয়া চিকিৎসা পদ্ধতি। সম্প্রতি আগরতলা থেকে আসা বছর পঁয়তাল্লিশের রোগী নির্মল নয়টাকে এই পদ্ধতিতেই সুস্থ করে বাড়ি পাঠাল বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতাল। আধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও অনেক চিকিৎসকের কাছেই নতুন। বছর দেড় আগে প্রথম হয়েছিল এ শহরে।
চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত পুরো অ্যানস্থেশিয়া করে রোগীর পেট কেটে এই অস্ত্রোপচার হয়। তাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী অ্যানাস্থেশিয়ার ধকল নিতে না পেরে ভেন্টিলেশনে চলে যান। এমনিতেই এই অসুখে সেপসিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সেখানে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে থাকলে সেই ঝুঁকি আরও বাড়ে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
নতুন পদ্ধতি কী? সিটি স্ক্যান গাইডেন্সের মাধ্যমে ছোট ক্যাথিটার প্যাংক্রিয়াসের পচে যাওয়া অংশে পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্যাথিটারের রাস্তাটা বড় করে সেই পথে ল্যাপারোস্কোপ যন্ত্র ঢুকিয়ে ধুয়ে-কেটে পচা অংশটি বার করা হয়। এ জন্য আংশিক অ্যানাস্থেশিয়ার প্রয়োগ করা হয়। তাতে কয়েক দিন অন্তর বার কয়েক ওটি-র মাধ্যমে পুরো সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
নির্মলবাবুর শল্য চিকিৎসক সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই রোগীর প্যাংক্রিয়াস পচে আলকাতরার মতো হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে অ্যাকিউট সিভিয়র নেক্রোটাইজিং প্যাংক্রিয়াটাইটিস। এ সব ক্ষেত্রে পুরো অ্যানাস্থেশিয়া প্রয়োগ করলে অনেক সময়ে সেই ধকল নিতে পারেন না রোগী।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত দেড় বছরে নতুন এই পদ্ধতিতে এগারো জনের অস্ত্রোপচার করেছি। তাঁদের তিন জনকে বাঁচানো যায়নি, বাকি আট জন সুস্থ রয়েছেন। আগের পদ্ধতিতে সাফল্যের সংখ্যাটা ছিল প্রায় বিপরীত।’’ শল্য চিকিৎসক মাখনলাল সাহা বলছেন, ‘‘লোকাল অ্যানাস্থেশিয়ার মাধ্যমে প্যাক্রিয়াসে ল্যাপারোস্কোপি করার পদ্ধতি প্রথম শুনছি। যদি এমনটা হয়ে থাকে, তবে তা রোগীর পক্ষে খুবই ভাল হবে।’’