একজন মহিলা সারা জীবনে যতগুলি স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পন ব্যবহার করেন, তা সম্পূর্ণ রূপে বিশ্লেষিত হয়ে ফের পরিবেশে ফিরে যেতে সময় লাগে কয়েকশো বছর। তাই ঋতুস্রাবের সময়ে ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পনের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহার। তবে এটি জনপ্রিয় হওয়ার পথে অন্যতম অন্তরায় মেনস্ট্রুয়াল কাপকে ঘিরে নানা ভ্রান্ত ধারণা। কাপ ব্যবহার করলে মেয়েদের ভার্জিনিটি ক্ষুণ্ণ হয়, কাপ পরে রাতে ঘুমোনো যায় না, কাপ লিক করতে পারে... এই জাতীয় নানা ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেকেই ভয় পান মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে। কাপের বিভিন্ন ধরনের মাপ, তা ব্যবহার ও পরিষ্কার করার ঠিক উপায় সম্পর্কে আবার অনেকেরই সম্যক ধারণা নেই। জেনে নেওয়া যাক মেনস্ট্রুয়াল কাপ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ও তা ব্যবহারের সুবিধে-অসুবিধে।
* মেনস্ট্রুয়াল কাপ তৈরি হয় সিলিকন, রাবার বা প্রাকৃতিক ল্যাটেক্স দিয়ে, যা মেডিকেটেড এবং বায়োডিগ্রেডেবল। অর্থাৎ ফেলে দেওয়ার পরে সহজেই প্রকৃতিতে মিশে যেতে পারে।
* এটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এক-একটি কাপ চাইলে দশ বছর পর্যন্তও ব্যবহার করা যায়। শুধু জেনে রাখা দরকার, তা পরিষ্কার করে পুনর্ব্যবহারের উপায়।
* প্রতি মাসে পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে কাপটিকে স্টেরিলাইজ় করে নিতে হবে। শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে নির্দিষ্ট পাউচে রাখবেন। যেহেতু পুনর্ব্যবহার করা হয়, তাই কাপ পরিচ্ছন্ন রাখা খুব জরুরি।
* সাকশনের মাধ্যমে কাপ আটকে থাকে ভ্যাজাইনায়, ফলে সাধারণত মলমূত্র ত্যাগ করার সময়ে তা খুলে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা কম। অনেক সময়ে কাপ ভিতরে আটকে যাওয়ার ভয় পান অনেকে। তবে এটি সহজেই বার করে আনার উপায় আছে।
* রাতে শোওয়ার সময়েও নিশ্চিন্তে কাপ ব্যবহার করতে পারেন। ৮-১২ ঘণ্টা স্বচ্ছন্দে কাপ পরে থাকা যায়। যাঁদের হেভি ব্লিডিং হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে ৬-৮ ঘণ্টা চলতে পারে।
* ভার্জিনিটি খোয়ানোর কথা ভেবে এই কাপ ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না। সাইক্লিং, এক্সারসাইজ় ও আরও নানা কারণে হাইমেন ছিঁড়ে যেতে পারে। তাই কাপ ব্যবহার করার সঙ্গে কুমারিত্ব হারানোর সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই।
একবার ব্যবহার করতে শুরু করলে হাতেনাতে বোঝা যায় মেনস্ট্রুয়াল কাপের সুবিধে। পরোক্ষে রক্ষা পায় পরিবেশও।