Lookback 2022

আমাদের বিচারে ২০২২ সালে বাঙালির লেখা বা বাঙালিকে নিয়ে লেখা ১০টি সেরা বই

বাংলায় লেখা এবং বাঙালির ইতিহাস-সংস্কৃতি-যাপন নিয়ে লেখা ২০২২-এ প্রকাশিত বইগুলির মধ্যে থেকে সেরা ১০টি বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০৮
Share:

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলা ভাষায় এবং বাঙালির ইতিহাস-সংস্কৃতি-যাপন নিয়ে লেখা ২০২২-এ প্রকাশিত বইয়ের ভিড় থেকে সেরা ১০টি বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

১) শেষবেলায়/ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়: নতুন কোনও খাতা পেলেই হাত নিশপিশ করত তাঁর। জীবনের উপান্তে এসে হাতে পেয়েছিলেন দু’টি কালো মলাটের রুলটানা খাতা। অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে অথবা লকডাউনের দিনগুলিতে কখনও লিখে রেখেছিলেন সাহিত্য বা শিল্পভাবনা। কখনও এঁকেছিলেন ছবি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সেই সব আঁকিবুঁকি-লেখালিখি কখনও সাদা-কালোয়, কখনও বা রঙিন। সেই খাতা দু’টির হুবহু প্রতিলিপি এই বই।

২) পুরোনো চাল/ স্বপন চক্রবর্তী: ভূতের বাসা যদি থেকে থাকে, তা হলে ‘ভূতের ভাষা’-ই বা থাকবে না কেন? জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী কেমন করে মিলে যায়? ‘খারাপ কবিতা’র জের কত দূর যেতে পারে? বাংলার মেলাগুলিতে কি এখনও তাঁবু ফেলে ‘ইলেকট্রিক লেডি’-র খেলা দেখানো হয়? এই সব উদ্ভট প্রশ্ন তুলেছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক স্বপন চক্রবর্তী। এই বইয়ের পাতায় পাতায় সুস্বাদু গদ্যে সেই সব বিচিত্র প্রসঙ্গ।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

৩) বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় রচনা সংগ্রহ (প্রথম খণ্ড)/ সম্পাদনা: দেবেশ চট্টোপাধ্যায়: দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর জেগে উঠেছিল তাঁর অন্তরের দৃষ্টি। বিনোদবিহারী কিন্তু কলম চালনাতেও পারদর্শী ছিলেন। আপনকথা লেখার সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ, নন্দলাল বসু, ই বি হ্যাভেল প্রমুখের শিল্পকর্ম নিয়েও প্রবন্ধ লিখেছিলেন তিনি। সেই সব রচনার সঙ্কলন এই বই।

৪) সুরাইয়া/ শিবব্রত বর্মন: কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে প্রবেশের পর নাকি সময়ের ধারণা ওলটপালট হয়ে যায়। ক্রম বলে কিছু থাকে না। একজনের জন্মমূহূর্তেই তার বিয়ে হয়ে যেতে পারে বা কারও ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পরেও সে ঘটাতে পারে সেই হত্যাকাণ্ড, যে জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এমন একটি ভাষাও সম্ভব, যার অস্তিত্ব মাত্র দু’জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে দরকার হতে পারে ভয়াবহ নৃশংসতার। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক শিবব্রত বর্মনের দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘সুরাইয়া’-র এক ডজন গল্প এমনই অস্বস্তির। তাঁর প্রথম বই ‘বানিয়ালুলু’ পাঠকের নজর কেড়েছিল। কোন ঘরানায় এই সব কাহিনিকে ফেলা যায় ভাবতে ভাবতেই পড়া হয়ে যায় রুদ্ধশ্বাস এই বই।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

৫) অদামৃতকথা/ ব্রাত্য বসু: দুই নট। সমসাময়িক। অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি ওরফে ‘অদা’ এবং অমৃতলাল বসুকে নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন নাট্যকার-অভিনেতা-মন্ত্রী ব্রাত্য।

৬) দ্য লিভিং মাউন্টেন/ অমিতাভ ঘোষ: তাঁর নতুন আখ্যানটিকে একটি ‘উপকথা’ই বলতে চেয়েছেন লেখক। যেখানে এক মহাপর্বত জীবন্ত অস্তিত্ব নিয়ে বর্তমান। সে রক্ষা করে তার উপত্যকার বাসিন্দাদের। কিন্তু মানুষের লোভ আর প্রকৃতিজয়ের বাসনা তাকে নিয়ে যায় এক প্রতিশোধের বিন্দুতে। উপকথার চেনা ছাঁদকে ব্যবহার করে অমিতাভ এখানে সরব হয়েছেন অতিমারি পর্বে মানুষের অস্তিত্বসঙ্কট এবং প্রকৃতির উপরে তার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

৭) সং অফ দ্য সেল: অ্যান এক্সপ্লোরেশন অফ মেডিসিন অ্যান্ড নিউ হিউম্যান/ সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়: বাঙালি বলেই কি ক্যানসারের চিকিৎসক সিদ্ধার্থের পেশার ফাঁকে লেখার বাতিক? তাঁর প্রথম বই ‘দি এম্পেরর অফ অল ম্যালাডিজ়: আ বায়োগ্রাফি অফ ক্যানসার’ শুধু জনপ্রিয়ই হয়নি, পেয়েছিল পুলিৎজ়ার। তার পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি লেখক সিদ্ধার্থকে। চতুর্থ বইয়ে কোষতত্ত্বের ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন তিনি।

৮) অ্যান আমেরিকান গার্ল ইন ইন্ডিয়া: লেটার্স অ্যান্ড রিকালেকশনস, ১৯৬৩-১৯৬৪/ ওয়েন্ডি ডনিগার: ১৯৬৩ সালে আমেরিকা থেকে এক ছাত্রী কলকাতায় পৌঁছেছিলেন সংস্কৃত আর বাংলা শিখবেন বলে। পরবর্তী জীবনে সেই শিক্ষাকেই কাজে লাগিয়ে ওয়েন্ডি ডনিগার এখন সম্ভবত সংস্কৃত সাহিত্য আর হিন্দুধর্ম বিষয়ে শেষ কথা। তাঁর প্রথম পাঠ শান্তিনিকেতনের আশ্রমে। তরুণী ওয়েন্ডি সেখান থেকে তাঁর বাবা-মাকে লিখেছিলেন বেশ কিছু চিঠি। সে সব সঙ্কলিত এই বইয়ে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

৯) গুরু টু দ্য ওয়ার্ল্ড: দ্য লাইফ অ্যান্ড লিগ্যাসি অফ বিবেকানন্দ/ রুথ হ্যারিস: ভক্তির বাইরে বেরিয়ে এসে স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে প্রায় কোনও লেখা হয়নি। অক্সফোর্ডের ‘অল সোল্‌স’ কলেজের ফেলো (‌যে কলেজে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হওয়াকে মেধার সেরা স্বীকৃতি বলে মনে করা হয়) রুথের এই বইটির প্রকাশক হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। বইটি বিবেকানন্দ বিষয়ে প্রথম সিরিয়াস অ্যাকাডেমিক উদ্যোগ।

১০) টেগোর’স ইউনিভার্সিটি: আ হিস্ট্রি অফ বিশ্ব-ভারতী ১৯২৬-১৯৬১/ স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়: স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় বিশ্বভারতীর অধ্যাপিকা। বিশ্বভারতী নিয়ে তাঁর ইতিহাস বইটির প্রকাশক কিন্তু অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই তথ্যই সম্ভবত বইটির শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞাপন এবং লেখকের পেশাদারি স্বীকৃতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement