মহালয়া এসে গিয়েছে মানেই বাঙালিকে আর পায় কে? উমার মর্তে আসার আনন্দে এখন ১০ দিন ধরে বাংলায় শুধুই উত্সব। বাঙালিরা যখন দুর্গা পুজোয় ব্যস্ত, তখন দেশের অন্য প্রান্তে কী চলে? বাকি দেশ কী ভাবে উদযাপন করে এই ১০ দিন? জেনে নিন।
নবরাত্রি পূজা: গুজরাত, পঞ্জাব ও মাহারাষ্ট্র এই সময় ধুমধামের সঙ্গে নবরাত্রি পালন করে। ৯ দিন ধরে পুজো পাঠের সঙ্গে চলে ডান্ডিয়া, গরবা ও রাস।
কুল্লু দসেরা: হিমাচল প্রদেশের কুলু উপত্যকায় উদযাপিত হয় কুল্লু দসেরা। প্রতি বছর রথ যাত্রার দিন রঘুনাথের মূর্তি স্থাপিত হয়। বিজয়া দশমীর দিন রাবন বধের মাধ্যমে পালিত হয় অশুভ শক্তির নাশ।
মহীশূর দসেরা: মহীশূর ও কর্নাটকের সবচেয়ে জনপ্রিয় উত্সব দসেরা। এই দিন গয়না ও বিশেষ পোশাকে হাতি সাজানো হয়। মহীশূরের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায় সেই হাতি। হাতির মাথায় বসানো থাকে চামুণ্ডি দেবী। চামুন্ডা পাহাড়ের কোলে দেবীর মন্দির। নবরাত্রীর ৯ দিন ধরে চামুন্ডি দেবীর আরাধনার পর দসেরার দিন বের হয় এই শোভাযাত্রা।
বোম্মাই কলু: তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে দসেরার দিন বোম্মাই কলু স্ত্রী আচার পালন করা হয়। ছোট ছোট পুতুল দিয়ে সাজিয়ে গ্রাম্য লোকাচার ও বিবাহের গল্প বলা হয়। থাকে ছোট ছোট দেবতা মূর্তিও। অনেকটা আমাদের ঝুলনের মতো। নবরাত্রির ৯ দিন ধরে মহিলারা নিজেদের বাড়ির চারপাশ প্রদক্ষিণ করেন। ছোলা ও নারকেল দিয়ে তৈরি বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হয় পুজোয়।
আয়ুধ পূজা: তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে নবরাত্রীর নবম দিন আয়ুধ পূজা করা হয়। সন্ধিপুজোয় মা চামু্ণ্ডেশ্বরীর হাতে মহিষাসুর নিধনের পর অস্ত্রের আর কোনও প্রয়োজন নেই। তাই এই দিন সেই অস্ত্রশস্ত্রের উপাসনা করা হয় আয়ুধ পুজোর মাধ্যমে।
বিদ্যারম্ভ: তামিলনাড়ু, কেরল ও কর্নাটকে বিজয়া দশমীর দিন বিদ্যারম্ভ পালিত হয়। এ দিন সকালে পুজোর পর বই, খাতা দেবীকে নিবেদন করে বিদ্যার্থীরা। একে বলা হয় পূজা এদুপ্পু। শিশুদের এ দিন চাল বা বালির উপর দাগ কেটে প্রথম অক্ষর চেনানো হয়। যাকে বলা হয় এজুথিনু এরুথু। ব্যাপারটা আমাদের সরস্বতী পুজোর হাতে খড়ির মতো।
সরস্বতী পূজা: কেরল, কর্নাটক ও তামিল নাড়ুতে দুর্গাষ্টমীর দিন সরস্বতী বা গায়ত্রী দেবীর আরাধনা করা হয়। কেরলে এই উত্সব পুজোবাইপু নামে পরিচিত। ব্রাহ্মণ পরিবারে এই সময় শিক্ষা, জ্ঞান, বুদ্ধির আরাধনা করা হয়। অনেক জায়গায় নবরাত্রী ও দসেরার পুরো দশ দিন ধরেই চলে সরস্বতী বন্দনা।
সীমালঙ্ঘন: মহারাষ্ট্রে দশমীর দিন সীমালঙ্ঘন উত্সব পালন করা হয়। আগে এই দিনে যুদ্ধ জয়ের জন্য কোনও দেশের সীমা লঙ্ঘন করা শুভ মনে করতেন রাজারা। এই দিনেই পাণ্ডবরা শমী গাছের কোটরে নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রেখে এক বছরের অজ্ঞাতবাসে যান। তাই এই দিন অস্ত্র পূজা করেন মরাঠিরা।