কোভিডের সংক্রমণ আবার বাড়ছে হু হু করে৷ টিকায় কতটা আটকাতে পারবে, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না বেশির ভাগেই। কিন্তু টানা এক বছর নানা নিয়ম মেনে চলতে চলতে খানিকটা ক্লান্তি এসেছে। ফলে পুরোটা বাড়ি বসে কাটাতে চান না অনেকেই। সামনে ছুটিও আছে। বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েই যাচ্ছে।
দোল বা গরমের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার ভাবনা থাকলেও তা করতে হবে খুব সাবধানে। এমনকি, এর মধ্যে টিকা নেওয়া হয়ে গিয়ে থাকলেও অসাবধান হলে চলবে না। করোনা-কালে বেড়াতে গেলে তবে কী কী ভাবে সাবধান হতে হবে?
খেয়াল রাখুন—
- শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে বেড়াতে না যাওয়াই ভাল। কোভিডের কোমর্বিডিটি যাঁদের রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আরওই সাবধান হতে হবে। অর্থাৎ, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, হাঁপানি, কিডনির অসুখ থাকলেও আপাতত সাবধানে থাকতে হবে।
- যে সব জায়গায় ভিড় কম হয়, তেমন কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করা ভাল। পাহাড় কিংবা জঙ্গলে গিয়ে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসা যায়। তবে সিমলা, মানালি, মুসৌরী, গ্যাংটক, দার্জিলিং নয়। একটু কম চেনা জায়গায় যাওয়া ভাল। যেখানে কম মানুষ যান। আর সে ভ্রমণও যেন না হয় এক সপ্তাহের বেশি।
- হোটেল ঠিক করার আগে ভাল ভাবে জেনে নিতে হবে ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে। ঘর, খাওয়ার জায়গা, রান্নাঘর, সবই যেন ভাল ভাবে স্যানিটাইজ করা হয়, তার খেয়াল রাখতে হবে।
- বিমানে চলাফেরা করা আপাতত ভাল। বদ্ধ জায়গার বিপদ থাকে ঠিকই, কিন্তু ভিড়ের মধ্যে কম সময় কাটাতে হয়। ট্রেনে গেলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় না যাওয়াই ভাল। বদ্ধ জায়গায় অতটা সময় অনেক মানুষের মধ্যে কাটালে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সঙ্গে রাখুন—
- যথেষ্ট সংখ্যক মাস্ক, স্যানিটাইজার, বিছানার চাদর, বালিশের ঢাকা, তোয়ালে
- সাধারণ ওষুধ৷ সঙ্গে প্যারাসিটামল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, ভিটামিন সি
- থার্মোমিটার এবং অক্সিমিটার
- কিছু শুকনো খাবার ও ফল রাখাও জরুরি
কী ভাবে সাবধান হতে হবে যাত্রাপথ ও হোটেলে?
- ·১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড দিয়ে ট্রেন, বিমান, গাড়ির সিটে বসার আগে স্যানিটাইজ করে নিতে হবে৷ হাত পরিষ্কার করার জন্য ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল দেওয়া স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
- ট্রেন, বাস, বিমান, গাড়িতে সব সময়ে মাস্ক পরে থাকা জরুরি।
- হোটেলকর্মীরা মাস্ক ও গ্লাভস পরেছেন এবং ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ করছেন কি না, দেখে নেওয়া দরকার।
অনেকেরই মনে হবে এ কাজ কঠিন। তবে সময়টাও সহজ নয়। আশপাশে কেউ কেউ কম সাবধান হচ্ছেন মানেই বিপদ কেটে যায়নি বলে মনে করাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী।
এত নিয়ম মানতে গিয়ে যদি কিছুটা কম হয় বেড়ানো, তাতেও চলবে। কিন্তু এখনও অবহেলার সময় আসেনি, তা খেয়াল রাখতেই হবে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে।