অসুখের ভয়ে ডায়েট থেকে বাদ পড়ছে মাটির নিচের সব্জি। ছবি: শাটারস্টক।
আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস এ সবের হাত ধরে মাঝ বয়সেই নানা ক্রনিক অসুখের শিকার হতে হয় অনেককেই। সুগার, কোলেস্টেরলের ভয়ে অনেকেই মাটির নীচের সব্জিতে রাশ টানেন একটা বয়সের পর থেকেই। শীতের নানা মরসুমি সব্জির নানা উপকার জানা সত্ত্বেও এ সবকে পাত থেকে বাদ দিচ্ছেন অনেকেই।
বিট, গাজর, রাঙা আলু, শালগম ইত্যাদিতে খনিজ, ফাইবার, ভিটামিন ইত্যাদি বেশি মাত্রায় আছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ এই সব সব্জির অনেক গুণাগুণও রয়েছে। অহেতুক ভয়ে বা না জেনেই সে সব খাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন না তো?
আমাদের স্বভাব, অসুখ ধরা পড়লেই চার পাশের মানুষের কথায় বা নিজে নিজে বানিয়ে নেওয়া অবৈজ্ঞানিক ডায়েটের কোপে বাদ দিয়ে ফেলছি অনেক সব্জি। আদৌ সে সব বাদ দেওয়ার কোনও যুক্তি আছে কি? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
আরও পড়ুন: আপনি কি বেশি খুঁতখুঁতে? সাবধান না হলে কী বিপদ অপেক্ষা করছে জানেন?
মাটির নীচের সব্জি মানেই একটা বয়সের পর তা ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে, এমনটা মনে করেন না এন্ডেক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, “ডায়াবিটিক হলেই আলু, গাজর, কচু, বিট বাদ দিয়ে দেন অনেকেই। আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র কখনওই সে সবে অনুমোদন দেয় না। বরং শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার দাবি মেটাতে এ সব সব্জিতে ভরসা করতে হয়। তাই আলু-গাজর এ সব খাওয়া যায় ডায়াবিটিসেও, কিন্তু তা অবশ্যই ডায়েটেশিয়ান বা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।”
সুষ্ঠু ও বৈজ্ঞানিক ডায়েটেই রাশ টানুন কোলেস্টেরল-সুগারে।
আর এক ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ সমীর দাশগুপ্তও সুগার, কোলেস্টেরলের চাপে মাটির নীচের সব্জিতে না বলার পক্ষপাতী নন। ‘‘শালগম, মুলো, পিঁয়াজ, রসুন ও আদায় কিন্তু শর্করার পরিমাণ কম। অথচ এরা প্রত্যেকেই মাটির তলার সব্জি। কাজেই মাটির তলার সব্জি মানেই যে তা বিপজ্জনক তা নয়।’’ তবে যাঁদের সুগারের মাত্রা বেশি, তাঁরা কি এ সব সব্জি একেবারে বাদ দেবেন?
আরও পড়ুন: বিয়ের রীতিতে গায়ে হলুদের চল কেন এল জানেন?
চিকিৎসকদের মতে, ‘‘সব্জি সেদ্ধ করে সেই জল ফেলে দিলে তার মধ্যেই অতিরিক্ত শর্করার বেশ কিছুটা বেরিয়ে যায়। সেই সব্জি খেলে ভয় আর থাকে না। মাটির তলার বেশ কিছু সব্জি অ্যান্টিইনফ্লেমটরি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হওয়ায় তা উল্টে শর্করা প্রতিরোধ করতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ও সিদ্ধ করে এ সব সব্জি খেলে ক্রনিক অসুখের ভয় তেমন থাকে না।