প্রতীকী ছবি।
কথা আটকে যাওয়া, হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হওয়া, মুখ বেঁকে যাওয়া বা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে স্ট্রোক হয়েছে। কিন্তু কোনও লক্ষণ ছাড়া অজান্তেই কি স্ট্রোক হয়ে যাওয়া সম্ভব? হ্যাঁ, শুধু সম্ভবই নয়, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। একে বলে ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’। শরীর কোনও ভাবেই জানান দেয় না এই স্ট্রোকের ব্যাপারে। কোনও লক্ষণ চোখেও পড়ে না। তাই ধরা কঠিন হয়ে যায়, শরীরে এত বড় একটা সমস্যা ঘটেছে।
কেন এমন হয়?
সাধারণত শরীরের রক্ত চলাচল কোনও কারণে যদি ঠিক মতো কাজ না করে এবং রক্ত মস্তিষ্কে না পৌঁছয়, তখনই স্ট্রোক হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ রক্ত পৌঁছচ্ছে না, তা শরীরের অন্য যে অংশ নিয়ন্ত্রণ করে, তখন সেগুলি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু হাত-পা নড়াচা়ড়া করা ছাড়াও শরীরের এমন অনেক অংশ মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে, যা আমরা চোখে দেখতে পাই না। মস্তিষ্কের তেমন কোনও অংশে যদি রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে স্ট্রোক ধরা পড়া সম্ভব হয় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে।
প্রতীকী ছবি।
কী করে বোঝা যায়
সাধারাণত অন্য কোনও কারণে চিকিৎসক যখন এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করতে বলেন, তখনই ধরা পড়ে যে মস্তিষ্কের কোনও অংশে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
সাইলেন্ট স্ট্রোক কতটা বিপজ্জনক
বুঝতে না পরলেও সাইলেন্ট স্ট্রোক হওয়া শরীরের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর। মস্তিষ্কের ছোট্ট অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও কাজে ব্যাঘাত ঘটে। অনেকগুলি সাইলেন্ট স্ট্রোক একসঙ্গে হয়ে গেলে নিউরোলজিক্যাল সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। ভ্যাস্কুলার ডিমেনশিয়া নামে এক ধরনের ডিমেনশিয়াও হয়ে যেতে পারে। এই ধরনের ডিমেনশিয়া হলে চেনা জায়গাও অচেনা লাগে, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়, হাঁটাচলায় বদল আসে, অকারণে হাসি বা কান্না পায়।
সাইলেন্ট স্ট্রোক কী কারণে হতে পারে
১। রক্ত জমাট
২। উচ্চ রক্তচাপ
৩। আর্টারি সরু হয়ে যাওয়া
৪। কোলেস্টেরল বেশি হয়ে যাওয়া
৫। ডায়াবিটিস
কী দেখে সন্দেহ করবেন
সাধারণত সিটি স্ক্যান বা এমআরআই না করলে বোঝা মুশকিল। তবে কিছু লক্ষণ চোখে পড়লে সন্দেহ করতে পারেন।
১। চলাফেরার সময়ে ব্যালান্স করতে অসুবিধা হওয়া
২। বার বার পড়ে যাওয়া
৩। প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ হারানো
৪। ঘন ঘন মনের অবস্থা বদলে যাওয়া
৫। চিন্তাভাবনা করতে অসুবিধা হওয়া