সুইমিং পুলের জলে ক্লোরিনের আধিক্য, কী ক্ষতি হচ্ছে চোখের? ছবি: সংগৃহীত।
হাঁসফাঁস গরমে নীল জল দেখলেই মন ভাল হয়ে যায়। গরমের সময়ে সুইমিং পুলে ঘণ্টাখানেক কাটাতে কার না ভাল লাগে। সকালে হোক বা বিকেলে, সুইমিং পুলের ঠান্ডা জলে গা ভাসিয়ে দিয়েই আরাম। কিন্তু এই আরামের মধ্যেও যে বিপদ লুকিয়ে আছে, সে নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। জলে নামার আগে অবশ্যই সাবধানি হতে বলছেন। কারণ সুইমিং পুলের জলে থাকা ক্লোরিন চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ক্লোরিন বেশি পরিমাণে চোখে ঢুকলে রেটিনার ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি এর থেকে নানা রকম অ্যালার্জি হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
জল পরিষ্কার রাখতেই ক্লোরিন ব্যবহার করা হয় সুইমিং পুলে। ক্লোরিন জীবাণুনাশক, কিন্তু তা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ক্লোরিন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে চোখের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সুইমিং পুলের জলে সাঁতার কাটলে, ক্লোরিন চোখে ঢুকে রেটিনার ক্ষতি করতে পারে। এই রাসায়নিক থেকেই অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে। চোখ জ্বালা করা, লাল হয়ে ফুলে ওঠা, অনবরত জল পড়তে থাকা, চোখে ব্যথা হওয়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা এই রোগের লক্ষণ।
ক্লোরিন ঘাম, প্রস্রাব, ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে বেরোনো তেল বা প্রসাধনীর সংস্পর্শে এলেই ক্লোরামাইন নামে এক ধরনের যৌগ তৈরি করে। এমনটাই জানিয়েছেন চক্ষু চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডল। এই ক্লোরামাইনই হল আসল ভিলেন, যা থেকে কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে। কেবল চোখ নয়, ক্লোরামাইন ত্বক ও চুলেরও ক্ষতি করে। এই রাসায়নিক থেকে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
কী ভাবে সাবধানে থাকবেন?
১) জলে নামার আগে অবশ্যই ‘সুইমিং গ্লাস’ পরে নিতে হবে। দোকানে নানা রকম রোদচশমা পাওয়া যায়, যা পরে পুলে নামতে হয়। তেমন কিনে রাখুন।
২) একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুলে থাকবেন না। সাঁতার কাটতে হলে ৩০ মিনিট পরে উঠে এসে ভাল করে চোখ-মুখ ধুয়ে নিন। বিরতি নিয়ে নামুন।
৩) সুইমিং পুলে নামার আগেই শাওয়ারের নীচে ভাল ভাবে স্নান করে নিন। সুইমিং পুল থেকে উঠে আবারও ভাল করে স্নান করুন। এতে ক্লোরিনযুক্ত জল খুব বেশি ক্ষতি করতে পারবে না।
৪) কনট্যাক্ট লেন্স পরে কখনওই পুলে নামবেন না। পুলে থাকা জীবাণু লেন্সে আটকে যাবে। এতে কর্নিয়ার ক্ষতি হবে। চোখে সংক্রমণও হতে পারে।
৫) চোখে জ্বালা বা চুলকানি যদি আগে থেকেই থাকে, তা হলে ভুলেও পুলে নামবেন না।
৬) পুলে নামার পরে যদি চোখে অস্বস্তি হয়, তা হলে চোখ ঘষবেন না। উঠে এসে চোখে জলের ঝাপটা দিতে হবে। এর পরেও চোখ লাল হয়ে উঠলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।