মেঘবরণ কুঞ্চিত কেশ বা ঢেউখেলানো চুল, শ্যাম্পু করার পর চুল শুকিয়ে গেলেই সিংহের কেশরের মতো ফুলে যায়। অবিন্যস্ত চুলেই জট বাঁধে। এই অবিন্যস্ত বা এলোমেলো চুল আঁচড়ালে বাড়ির যত্রতত্র আর চিরুনি ভরে ওঠে কেশদামে। বর্ষাকালে বিপত্তি আরও বেশি।
কখন জট পড়ে?
চুলে রং, দীর্ঘদিন হেয়ার ড্রায়ারের ব্যবহার, কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট, ব্লিচ বা নিয়মিত হেয়ার স্প্রের প্রয়োগ এর অন্যতম কারণ। আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল না পেলে, যত্নের অভাবেও চুল নিষ্প্রাণ হয়। চুলে গরম জল দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া খারাপ আবহাওয়া ও দূষণের সংস্পর্শে এলে চুলে যে চিটচিটে ভাব তৈরি হয়, তার থেকেও জট পাকিয়ে যায়।
অবিন্যস্ত চুল বশে আনতে
• আমন্ড অয়েল ও ডিমের প্যাক ফিরিয়ে আনে চুলের হারানো জেল্লা। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে চল্লিশ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
• নারকেল তেল ও ভিটামিন ই মিশিয়ে মাসাজ করুন মিনিট পনেরো। চল্লিশ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।
• জট কাটাতে পাকা কলা চটকে, মধু ও নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন আধ ঘণ্টা। বৃষ্টিতে ভিজলে চুলের ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে এই প্যাক।
• খানিকটা মেথি রাতে ভিজিয়ে, পরদিন ছেঁকে সেই জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। বাড়তি তৈলাক্ত ভাব পলকে উধাও।
• চুল নষ্ট হওয়ার আগেই নারকেলের দুধ হালকা আঁচে গরম করে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে আধ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
• অবাধ্য অবিন্যস্ত চুলে অ্যালো ভেরা জেল দারুণ কাজ করে। এক টেবিল চামচ অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে নারকেল তেল, অলিভ বা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
• তিন চামচ টক দইয়ের সঙ্গে এক চামচ মধুর মিশ্রণ নিয়মিত লাগালেও জট উধাও।
নিয়মিত যত্ন
• তেলের সঙ্গে চুলের বন্ধুত্ব নিবিড় না হলে জটের সমস্যা থেকে রেহাই নেই। নিয়মিত নারকেল তেলের সঙ্গে আমন্ড অয়েল হালকা গরম করে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ বা উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখুন স্নানের আগে পর্যন্ত।
• শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনারের অল্প সাহচর্যই চুল মসৃণ ও পেলব করে, জটও প্রতিরোধ করে।
• চুল ধোয়ার পরে তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে চুল শুকিয়ে নিন।
• ভেজা চুল নরম থাকে, আঁচড়ালে চুল ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কার থাকে। চুল শুকিয়ে আঁচড়ান।
• জট ছাড়ানোর নিয়ম, চুলের নীচ থেকে শুরু করা।
• চুল শুকিয়ে এলে বড় দাঁতের কাঠের চিরুনির সাহায্যে জট ছাড়ান।
• চুলের আগা নিয়মিত ট্রিম করলে জট কম পড়ে।
• বৃষ্টিতে ভিজলে আবার স্নান।
ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দিন চুলের যত্নে। চুল হবে যেন বিদিশার নিশা।