চেয়ার যোগ– মার্চিং। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ– মার্চিং
ডায়াবিটিস, হার্টের অসুখ বা রক্তচাপ থাকলে এবং সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকতে মর্নিং বা ইভিনিং ওয়াক অর্থাৎ হাঁটাহাঁটির পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু বেশি বয়সের মানুষদের তো বটেই অন্যদেরও নানা অসুখের কারণে অনেক সময় বাইরে গিয়ে হাঁটার অসুবিধা থাকতে পারে। যদিও খোলা মাঠে বা বাতাসে হাঁটা উচিত, তবু নিরুপায় হলে বিকল্প হিসেবে চেয়ারে বসে হাঁটার এই আসনটি অভ্যাস করা যায়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষজন এবং নানা কারণে যাঁদের বাইরে হাঁটতে যাবার উপায় নেই তাঁদের এই আসনটি অভ্যাস করা দরকার। এই আসন অভ্যাস করলে নিতম্ব ও ঊরুর পেশী উজ্জীবিত হয়ে সামগ্রিক জড়তা কেটে যাবে।
কী ভাবে করব
পদ্ধতি ১: শিরদাঁড়া সোজা করে মাটিতে দুই পা চেপে রেখে চেয়ারে বসুন।মাথা ও ঘাড় সোজা থাকবে। দুহাত আলগা করে রাখুন ঊরুর ওপর। চোখ বন্ধ রাখুন। এই হল আসন শুরুর অবস্থান।
• দুই হাত দিয়ে চেয়ারের পাশ আলগা করে ধরুন। এ বারে শ্বাস নিতে নিতে বাঁ পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে মাটি থেকে ৩–৪ ইঞ্চি উপরে তুলুন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পা নামিয়ে নিন।
• একই ভাবে শ্বাস নিতে নিতে ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে উপরে তুলুন ও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নামিয়ে নিন।
• এই ভাবে ১০ বার করে এক একটি পায়ে অভ্যাস করতে হবে। বেশি স্ট্রেস নেবেন না, যেটুকু সম্ভব হবে সেটুকুই অভ্যাস করবেন।
আরও পড়ুন: ৮৩তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
পদ্ধতি ২: স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস নিতে নিতে পর্যায়ক্রমে দুই পা মাটি থেকে ২- ৩ ইঞ্চি তুলুন ও নামান হাঁটার ভঙ্গিতে।
• দুই হাত কনুই থেকে ভাঁজ করে শরীরের দুই পাশে রেখে সামনে পিছনে করুন পায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। হাঁটা বা জগিং এর সময় যে ভাবে দুই হাত আগুপিছু করে সেই ছন্দেই অভ্যাস করতে হবে।
• ২–৩ মিনিট স্ট্যাটিক জগিং অভ্যাস করতে হবে।
• জোর করে অভ্যাস করার দরকার নেই, কষ্ট হলে অভ্যাস করা থামিয়ে দিতে হবে। শুরুতে অল্পস্বল্প অভ্যাস করতে পারেন।
• আসন অভ্যাস শেষ হলে শুরুর অবস্থানে ফিরে আরাম করে বসুন। চোখ বন্ধ করে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন। লক্ষ্য করবেন, এই সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। জোরে হাঁটলে যেমন আমরা দ্রুত শ্বাস নিই, অনেকটা সেই রকম। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হলে চোখ খুলুন।
• যাঁরা দীর্ঘক্ষণ ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাঁরা কাজের ফাঁকে এই আসনটি অভ্যাস করতে পারেন। পায়ে রক্ত চলাচল বাড়বে ফলে নাগাড়ে বসে থাকার কারণে পা ধরে যাবে না।
আরও পড়ুন: ৮২তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
স্ট্রোক বা অন্যান্য কারণে হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হলে বা নার্ভের অসুখে চলাফেরার সমস্যা হলে সকালে উঠে মার্চিং অর্থাৎ বসে বসে হাঁটার ভঙ্গি অভ্যাস করলে পা, নিতম্ব ও কোমরের জড়তা কেটে যাবে। দু’টি পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে অভ্যাস করতে হবে। এই আসনটিতে কিছুটা কার্ডিও এক্সারসাইজের ফল পাওয়া যায়।