২০২৪ সালের প্যারালিম্পিক্স-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন গ্ল্যাডিস। ছবি : সংগৃহীত
দুর্ঘটনায় দেহের নিম্নাংশ অসাড় হয়ে গিয়েছে সেই ১৩ বছর বয়সে। কিন্তু মনের জোর, স্বপ্ন দেখার পথ আটকাতে পারেনি বেশি দিন।
ছোট থেকে নৃত্যশিল্পী হওয়ার শখ গ্ল্যাডিস ফোজিয়ার। কিন্তু বিশেষ ধরনের পক্ষাঘাত ‘প্যারাপ্লেজিয়া’-এ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর দেহের নিম্নাংশ অসাড় হয়ে যায়। তবে দেহের উপরিভাগ সচল থাকে। চার দেওয়ালের মধ্যে, চাকা দেওয়া চেয়ারই সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে ওঠে। গ্ল্যাডিস বলেন, ‘‘নাচ আমার কাছে অধরাই থেকে গিয়েছিল। অল্প বয়সের ওই দুর্ঘটনা আমার স্বপ্ন দেখার সাহসটাই কেড়ে নিয়েছিল। নতুন করে নাচ নিয়ে কিছু ভাবার কথা মাথাতেও আসেনি।”
এমন সময়ে গ্ল্যাডিসের জীবনে এক রাশ মুক্ত বাতাস বয়ে আনে প্যারিসের একটি নাচের স্টুডিয়ো। সেখানে একটি জার্মান নাচের দলের সঙ্গে আলাপ হয় গ্ল্যাডিসের। তাঁর মতো আরও অনেকেই সেখানে নাচ শিখতে আসেন এবং সবচেয়ে মজার বিষয় হল, সকলেই চাকা দেওয়া চেয়ারে বসে নাচ করেন। “এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। নাচ আমার জীবনে আবার ফিরে আসবে, এ কথা কোনও দিন কল্পনাও করতে পারিনি। তাও আবার এই চেয়ারে বসে,” বলেন গ্ল্যাডিস।
গ্ল্যাডিসের মনে হতো তাঁর দেহ দু’টি ভাগে বিভক্ত। এক ভাগ সক্ষম। এবং এত দীর্ঘ দিন ধরে এক ভাগ অসাড় থাকায়, ওই অংশের কোনও অস্তিত্বই ছিল না তাঁর কাছে। “কিন্তু এই নাচের মাধ্যমেই আমি আবার আমার দেহের বাকি অংশটুকুর সঙ্গে একাত্ম হতে পারি,” বলেন গ্ল্যাডিস।
২০২৪ সালের প্যারালিম্পিক্স-এর আয়োজক দেশ ফ্রান্স। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্যারিস থেকে নাচের ওই দলটিও অংশ নেবেন। আর সেই বিশ্বমঞ্চে এ বার নাচ দেখাবেন গ্ল্যাডিসও।