মোবাইল ছাড়া এক মুহূর্ত চলছে না? ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েননি তো? ছবি: সংগৃহীত।
রিল্স হোক বা কার্টুন, খুদেরাও দিব্যি স্মার্টফোনে চালিয়ে ফেলছে ভিডিয়ো। কচিকাঁচা থেকে তরুণ, বয়স্করাও ডুবে থাকছেন মোবাইলে। হবে না-ই বা কেন? মুঠোফোনের এক ক্লিকেই পৌঁছনো যায় রঙিন দুনিয়ায়। গেম্স থেকে রিল্স, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, রকমারি ভিডিয়োর টান এড়ানো বড় কঠিন।
কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইলে বা ইন্টারনেটে বুঁদ হয়ে থাকা কাজের কথা নয়। এতে শারীরিক ক্ষতি তো বটেই, মানসিক ক্ষতিও হচ্ছে। অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ছেন মোবাইল ও ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। বিপদ ঘনিয়ে আসার আগে নিজে থেকেই সাবধান হওয়া দরকার। কী ভাবে বুঝবেন ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েছেন?
১. দিনভর অন্য কাজের চেয়ে মন যদি মোবাইলে বেশি থাকে, তবে সতর্ক হতে হবে। কাজের ফাঁকে টুকটাক মোবাইলে কিছু দেখা এক রকম, কিন্তু যদি সারা দিনে মোবাইল ঘাঁটাঘাটির চেয়ে কাজের কাজটাই কম হয়, তবে নিজেকে সংযত করতে হবে।
২. ক্রমাগত যদি মাথায় চলতে থাকে সমাজমাধ্যমে যে পোস্টটা করেছেন তাতে কত জন লাইক করল, কত জন দেখল, তবে ভেবে দেখুন, আপনার এই সামান্য জিনিস নিয়ে এত বেশি ভাবনা স্বাভাবিক তো? অন্য কোনও কাজেই যদি মন না বসে, ধ্যানজ্ঞানে মোবাইলই থাকে, তা হলে বুঝতে হবে ধীরে ধীরে আসক্তির দিকে বিষয়টা এগোচ্ছে।
৩. বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানোর চেয়েও যদি নেটদুনিয়ার আকর্ষণ বেশি হয়, সেই টান এড়ানো সম্ভব না হয়, তা হলেও বুঝবেন আপনার নেট আসক্তি বাড়ছে।
বিপদ কখন?
নেশার দ্রব্য থেকে মানুষ একটা ভাল লাগা পায়। ঠিক তেমনই ইন্টারনেট আসক্তির ফলে মানুষ ডিজিটাল দুনিয়াতেই ভাল লাগা, আশ্রয় খোঁজেন। সর্ব ক্ষণ তেমন একটি জগতে বিচরণের ফলে বাস্তব জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন। এতেই বিপদ। ইন্টারনেটে আসক্তি মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। পরিবার, সম্পর্কের বাইরেও মোবাইল দুনিয়া বড় হয়ে ওঠে। তা থেকেই একসময় অবসাদ তৈরি হতে পারে।
সাবধান হওয়া দরকার
মোবাইল ও ইন্টারনেট দুনিয়া নিয়ে ভাবনা এমন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, যখন আশপাশের মানুষগুলোর গুরুত্ব কমে যায়। যদি দেখেন, বাড়ির মানুষগুলোর সঙ্গে সময় কাটাতে ইচ্ছে করছে না, সর্ব ক্ষণ ফোন নিয়েই থাকতে মন চাইছে, তখন নিজেকেই বোঝাতে হবে, কাজটা ঠিক হচ্ছে না।
মোবাইল ফোন না পেলে যদি প্রবল রাগ হয়, মনের মধ্যে অশান্তি তৈরি হয়, ১০ মিনিটও ফোনটা ছাড়া থাকতে অসুবিধা হয়, তখন বুঝতে হবে আসক্তি গভীরে প্রবেশ করেছে। এমনটা হলে দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হতে বাধ্য। প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
আসক্তি-মুক্তির পথ
মোবাইল ছাড়া ভাল লাগার অন্য বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যান, সময় কাটান। পরিবারের অন্য মানুষগুলিকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন। দিনে বেশ কিছুটা সময় শরীরচর্চা করুন, তবে মোবাইল দেখে নয়।