ছোলে বাটুরের মূলত উত্তর ভারতীয় খাবার হিসাবে পরিচিতি পেলেও, এই খাবারের জন্ম কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে। ছবিঃ সংগৃহীত
ছুটির সকালে থলে ভর্তি বাজার করে ঘেমেনেয়ে ফেরার পথে কিংবা ছুচোঁয় ডন মারা খিদে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে, পাতে যদি থাকে ছোলে বাটুরে, অমৃতের চেয়ে কম কিছু মনে হয় না। খুব যে আহামরি খাবার, তা কিন্তু নয়। ছোলার তৈরি তরকারি আর সঙ্গে লুচির থেকে একটু বড় সংস্করণের বাটুরে (লুচির সঙ্গে বাটুরের প্রণালীতে খানিক তফাৎ রয়েছে)— ধোঁয়া ওঠা এই খাবারের স্বাদ নিতে ভিড় জমান অনেকেই। খাবার কিংবা সংস্কৃতি— বাঙালি সব কিছুই নিজের মতো করে আপন করে নেয়। ছোলে বাটুরের মূলত উত্তর ভারতীয় খাবার হিসাবে পরিচিতি পেলেও, এই খাবারের জন্ম কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে। প্রথমে এই পদের নাম ছোলে বাটুরে ছিল না। ছোলা দিয়ে তৈরি পদটি পরিবেশন করা পাউরুটির মতো কোনও এক ধরনের খাবারের সঙ্গে। কথিত আছে, মুঘল শাসকরদের হাত ধরে অন্যান্য ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে এই খাবারটি ভারতে প্রবেশ করে। ছোলে বাটুরের ভারত-অভিষেক নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এমন আরও অনেক ইতিহাস। শোনা যায়, পেশোরি লাল লাম্বা নামে এক ব্যক্তি দিল্লির কনট প্লেসে ‘কোয়ালিটি’ নামে একটি রেস্তরাঁ তৈরি করেছিলেন। তিনিই নাকি তাঁর রেস্তরাঁয় প্রথম প্রথম ছোলে বাটুরে বানান।
তবে দিল্লিতে ছোলে বাটুরের জন্ম নিয়ে যে গল্পটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্যতা পায় তা হল, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় সীতা রাম নামে এক পঞ্জাবি ভদ্রলোক পশ্চিম পঞ্জাব থেকে এসে দিল্লির পাহাড়গঞ্জে একটি জায়গায় খাবারের দোকান খোলেন। তিনি এবং তাঁর ছেলে সেই দোকানটি চালাতেন। মশলাদার ছোলার তরকারির সঙ্গে ডোবা তেলে ভাজা বাটুরে বিক্রি করতেন। ছোলে বাটুরের জনপ্রিয়তা ভারতে কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ল, তা নিয়ে বহু গল্পকথা রয়েছে। নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারেননি এর জন্মবৃত্তান্ত। পাড়ার দোকান হোক কিংবা নামকরা ধাবা, ছোলে বাটুরের জনপ্রিয়তা অন্য অনেক খাবারকে পিছনে ফেলে দিতে পারে।