বাড়িতেই ফলানো যাবে ডালিম। ছবি: সংগৃহীত।
দেখতেও যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন স্বাদু। ডালিম। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবার ও ভিটামিনে ভরপুর। তবে নিজের গাছ থেকে কোনও ফল পেড়ে খাওয়ার মধ্যে আলাদাই আনন্দ থাকে। সেই মজা নিতে হলে বাড়িতেই টবে ফলাতে পারেন ডালিম। সহজ কয়েকটা নিয়ম মানলে বাড়ির বারান্দা থেকেই পেড়ে খেতে পারবেন স্বাদু এই ফলটি।
১. বেঙ্গালুরুর এক উদ্যানপালক লিজি জন বলছেন, ভারতীয় আবহাওয়ায় ডালিম গাছ সহজেই বেড়ে ওঠে। এই গাছের জন্য বেশি জায়গার দরকারও হয় না। শুধু গাছ যাতে ঠিকমতো সূর্যের আলো পায় সে দিকটা নিশ্চিত করতে হবে।
২. বীজের চেয়ে স্বাস্থ্যবান ডালিমের চারা বসানোই ভাল। লিজির কথায়, প্রথম বার যাঁরা টবে বা ছোট জায়গায় ডালিমের চাষ করছেন, তাঁরা বীজের বদলে নার্সারি থেকে ডালিমের চারা বসালে সুবিধা হবে।
ডালিম নিজের গাছের হলে খাওয়ার আনন্দই আলাদা। ছবি: সংগৃহীত
৩. কোন জায়গায় ডালিম গাছ বসাচ্ছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শেকড়গুলিকে ছড়িয়ে পড়ার জন্য জায়গা দিতে হবে। একটা বেশ বড় টব, প্লাস্টিকের ড্রামে বসানো যেতে পারে ডালিমের চারা। দেখতে হবে জল বেরোনোর জন্য নীচে যেন ছিদ্র থাকে।
৪. যে পাত্রে গাছ বসানো হবে, তার অর্ধেকটা মাটি নিতে হবে। তার মধ্যে একমুঠো ‘গার্ডেন লাইম’ মেশাতে হবে। বসিয়ে দিতে হবে ডালিম চারা। পাত্রের বাকি অর্ধেকে থাকবে কোকোপিট, ভার্মিকোপোস্ট ও গোবর সারের মিশ্রন।
৫. যে পাত্রে গাছ বসানো হবে, একদম নীচে থাকবে শুকনো পাতার স্তর। তার পর মেশানো সমস্ত মাটি। ঠিক এই ভাবে তিনটি স্তর ভরতে হবে প্রথমে শুকনো পাতা তার উপর মিশ্রিত মাটি। ডালিমের চারা বসানোর এক সপ্তাহ আগে তা করতে হবে।
৬.যথাযথ সূর্যালোক আসে এমন জায়গায় ডালিমের চারা-সহ পাত্রটি রাখতে হবে। কারণ এই গাছ গরম আবহাওয়াতেই বেড়ে ওঠে। এক দিন অন্তর পরিমাণ মতো জল দিতে হবে।
৭.একটি প্লাস্টিকের বোতলের নীচের অংশটা কেটে নিতে হবে। তার মধ্যে ভরতে হবে আনাজের শুকনো খোসা, দইয়ের ঘোল, সামান্য গুড় ও গোবর সার। নীচের অংশটা নারকেলের খোল দিয়ে আটকে দিতে হবে। সেটা টবের মাটিতে বসিয়ে দিতে হবে। প্লাস্টিকের বোতলের কাটা অংশ মাটির মধ্যে থাকবে। মিশ্রন যত পচবে, গাছ তত ভাল হবে।
৮. পোকামাকড় থেকে বাঁচাতে এক লিটার জলে ৫ মিলিলিটার নিম তেল দিতে হবে। এর সঙ্গে মেশাতে হবে গুঁড়ো সাবান। মিশ্রনটা গাছে পোকা লাগলে স্প্রে করতে হবে।
৯. গাছ কিছুটা বড় হলে অবাঞ্ছিত ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে। এত গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়। সাধারণত চার মাসেই গাছে ফল ধরে। তবে সেটা আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে কম-বেশি হতে পারে।
তার পর গাছের ফল পাকার অপেক্ষা। নিজের হাতে পরিচর্যা করা গাছের ডালিম খাওয়ার আনন্দই আলাদা!