ত্বকের যত্ন নিয়ে তবেই খেলুন দোল। ছবি: শাটারস্টক।
দোলের আনন্দ তখনই সার্বিক সুন্দর হয়ে ওঠে, যখন তাতে রোগভোগের ছোঁয়াচ থাকে না। দোলের সময় সুস্থ থাকার চাবিকাঠি অনেকটাই কিন্তু আপনার হাতে। রং খেলার পর অনেকেরই ত্বকে নানা সংক্রমণ দেখা যায়। কারও বা ত্বক জ্বালা করে। তবে সে সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন আপনিও। দরকার শুধু একটু সচেতনতা।
“একটু নিয়ম মেনে রং খেললেই রং বা আবির থেকে হওয়া ত্বকের সংক্রমণ এড়ানো যায়। কিছু কিছু অসুখ থাকলে সে সব রোগে রং না খেলাই ভাল। আবিরের সময়ও অবলম্বন করতে হয় বাড়তি কিছু সতর্কতা”— জানালেন ত্বক বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ী। র্যাশ, চুলকানি, খেলার পর কোনও অ্যালার্জির উদ্রেক এ সবই রঙে ও আবিরে থাকা রাসায়নিকের জন্য হয়।
আজকাল সিন্থেটিক রঙের প্রতিপত্তি বেশি। আর এ সব রং ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। জানেন কি, কোন কোন প্রাথমিক সচেতনতা অবলম্বন করতেই হবে রং খেলার আগে ও পরে?
আরও পড়ুন: রং খেলার সময় চোখে রং বা আবির ঢুকেছে? জানেন কী করতে হবে?
সারা শরীরে ভাল করে ময়শ্চারাইজার মেখে তবেই রং খেলুন।
খেলার আগে
ক্রিম: বাড়ির খুদে সদস্য হোক বা আপনি নিজে, ময়েশ্চারাইজার না মেখে রং খেলা নয়। সারা শরীরে ভাল করে ময়শ্চারাইজার মেখে তবেই রং খেলুন। স্টেরয়েডধর্মী কোনও ক্রিম ব্যবহার করবেন না। বরং ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে ময়শ্চারাইজার মাখুন কিংবা সাধারণ পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে রঙের ময়দানে যান। এতে শরীরে রং বসবে না আর উঠবেও তাড়াতাড়ি।
পোশাক: ত্বককে রঙের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে পোশাকের বিষয়েও নজর দিতে হবে।গাঢ় রঙের সুতির পোশাক পরুন। নইলে রং শুকোতে দেরি হবে। এতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা যেমন বাড়ে, তেমনই ত্বকও কিছুটা রঙের কবল থেকে বাঁচে। সিন্থেটিক বা অন্য রকমের পোশাকের রং শোষণের ক্ষমতা কম। তাই তার বেশির ভাগটাই চুঁইয়ে ত্বকে পৌঁছে যায়।
ভেষজ রং: বিশ্বস্ত জায়গা থেকে ভেষজ রং কিনুন, এতে ত্বকের ক্ষতি এড়ানো সহজ হয়।
নেলপলিশ: রঙের হাত থেকে নখ ও নখের কোনাগুলিকে রক্ষা করতে দু’হাত-পায়ের নখে মোটা করে গাঢ় রঙের নেলপলিশের কোট লাগিয়ে নিন। ছেলেরা রঙিন নেলপলিশের জায়গায় লাগাতে পারেন ট্রান্সপারেন্ট নেল এনামেল।
আরও পড়ুন: রাসায়নিকের ক্ষতি এড়াতে দোল খেলুন ভেষজ রঙে, কোথায় পাবেন সে সব?
কোনও অয়েল ফ্রি ক্লিনজিং ক্রিম দিয়ে নিজেকে পরিষ্কার করুন।
খেলার পর
রং তুলতে প্রথমেই জল নয়। আগে ভাল কোনও অয়েল ফ্রি ক্লিনজিং ক্রিম দিয়ে নিজেকে পরিষ্কার করুন। এতে কিছুটা রং উঠে যাবে। তার পর গায়ে জল ঢালুন। একটু গরম জলে স্নান করুন, এতে ঠান্ডা লাগার ভয় কমবে। তবে স্নানের সময় কোনও রকম অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করবেন না। অ্যান্টিসেপটিক লোশন বা সাবানের সঙ্গে রঙের রাসায়নিকের বিক্রিয়া ঘটে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই ভরসা রাখুন মৃদু ক্ষারযুক্ত সাবান ও শ্যাম্পুতে। এক দিনে রং ওঠে না। তাই অযথা ঘষাঘষি করবেন না। তাতে সংক্রমণ ও র্যাশ বাড়তে পারে। তাই দিন দুই রং লেগে থাকলেও ঘাবড়াবেন না। নিয়মমাফিক স্নান করতে করতে তা উঠে যাবে। সোরিয়াসিস, এগজিমা ইত্যাদি অসুখের বাড়বাড়ি থাকলে রং খেলবেন না। এতে অসুখ বাড়ে ও ত্বকের ক্ষতি হয়। তবে অল্পস্বল্প অসুখে রং খেলতে বাধা নেই।