রোজের কিছু অভ্যাসেই প্রতি দিন অল্প অল্প করে জল বাঁচানো সম্ভব। ছবি: ফ্রিপিক।
স্নান, শৌচকার্য, রান্না, জামাকাপড় কাচা ও খাওয়ার জন্য যতটুকু জল প্রয়োজন তা খরচের পরেও জল বাঁচানো খুব কষ্টকর কাজ নয়। সাংসারিক ও জৈবিক কাজে যেটুকু জল পর্যাপ্ত, সেটুকুই ব্যবহার করা দরকার। অপ্রয়োজনে ও অতিরিক্ত জল খরচ করা কাজের কথা নয়। দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জলবায়ু বদল এত ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে যে, ভূবিজ্ঞানীরাও সতর্ক করে বলেছেন, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নামছে। পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিতে পারে যে কোনও সময়েই। তাই বাড়তি সতর্কতা জরুরি। শুরুটা হোক নিজের বাড়ি থেকেই। রোজের কিছু অভ্যাসেই প্রতি দিন অল্প অল্প করে জল বাঁচানো সম্ভব।
জল বাঁচাতে কী কী করবেন?
১) জলের লিকেজ যেন না হয়। বাড়ির সব কল, পাইপলাইন ঠিক আছে কি না দেখে নিন। বাথরুম, রান্নাঘরে জলের পাইপ পরীক্ষা করে নিন।
২) স্নানের সময়ে শাওয়ার ব্যবহার না করে বরং বালতি-মগ ব্যবহার করলে ভাল হয়। শাওয়ারে স্নান করার মজা আছে নিঃসন্দেহে, কিন্তু তাতে জলের খরচ বেশি হয়।
৩) ময়লা জামাকাপড় একসঙ্গে জমিয়ে রেখে একদিনে ওয়াশিং মেশিনে যতটা হয় দিয়ে কেচে ফেলুন। রোজ রোজ মেশিন চালালে জলের অপচয় বেশি হবে।
৪) দরকার ছাড়া জলের কল খুলে না রাখাই ভাল। ব্যবহারের পর তা বন্ধ করে দিন। আবার যখন প্রয়োজন তখন খুলে কাজ করবেন।
৫) বাড়ির ট্যাঙ্ক ভরার জন্য পাম্প চালালে তা ঘড়ি দেখে বন্ধ করার অভ্যাস করুন। ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে জলের ধারা যেন বয়ে না যায়।
৬) বালতি বালতি জল বারান্দা বা উঠোনে না ঢেলে, মগ দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। এতে জলের অপচয় কিছুটা হলেও কমবে।
৭) গাড়ি পরিষ্কারের সময়ে বিশেষ খেয়াল রাখুন। হোস পাইপ দিয়ে গাড়ি না ধুইয়ে বরং বালতির জলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে গাড়ি মুছতে পারেন। এতে গাড়ি ভাল পরিষ্কার হবে। জলও বাঁচবে।
জলের পুনর্ব্যবহারও করতে পারেন
বালতি বা গামলায় জল ভরে তাতে সব্জি, ফল বা চাল ধুয়ে নিন। সেই জলই গাছে দিতে পারেন। চাল ধোয়া জল গাছের জন্যও ভাল।
জামাকাপড় কেচে সেই জল ফেলে না দিয়ে বরং বাথরুম বা রান্নাঘর পরিষ্কারের কাজে লাগাতে পারেন। এতে জলের পুনর্ব্যবহারও হবে, অতিরিক্ত খরচও হবে না।
সম্ভব হলে বৃষ্টির জল ধরে রাখুন। যদি ফিল্টার বসিয়ে বৃষ্টির জল হারভেস্ট করা সম্ভব হয় তো খুবই ভাল। সেই জল রান্নার বা বাথরুমের কাজে লাগাতে পারেন। না হলে একটা পাইপ লাগাতে হবে, যাতে বৃষ্টির জল সেই পাইপের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। আর নীচে একটা ছোট জলাধার তৈরি করতে হবে। সেখানে বৃষ্টির জল এসে জমা হবে। বাগানে জল দেওয়া, বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কারের কাজে এই জল কাজে লাগানো যেতে পারে।