ছোলা দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর চাট। ছবি: সংগৃহীত
করোনাকালে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকেই। সেই অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসেও বদল এনেছেন। জলখাবার, দুপুরের খাবার বা রাতের খাবার যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয়, সেই চেষ্টা করছেন বহু মানুষ। তবে চট করে পুরো খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলা কারুর পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই বদল করতে হবে ধীরে ধীরে।
সবচেয়ে ঝামেলায় ফেলে বিকেলের খিদে। কাজের ফাঁকে বিকেলবেলা কী খাওয়া যায় সেই চিন্তা করতে গিয়ে বেশির ভাগ মানুষের মনে উল্টোপাল্টা খাওয়ার ইচ্ছাটাই প্রবল হয়ে পড়ে। চায়ের সঙ্গে পেঁয়াজি হলে কেমন হয়, কিংবা একটু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হলে জমে যাবে, এগরোল পেলেও মন্দ হয় না— এই সব ভাবনা মনে ঘোরে আর শেষমেশ আমরা সেগুলি খেয়েও ফেলি।
কিন্তু তাতে বাকি দিনের স্বাস্থ্যকর খাওয়ার চেষ্টাটাই মাঠে মারা যায়। তাই বিকেলবেলা খিদে পেলে কী খাবেন, তার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রাখতে হবে। তাহলে এতটা সমস্যায় পড়বেন না। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যকর খাবারও অনেক ধরনের হয়। রোজ আপনাকে এক জিনিস খেতে হবে না। জেনে নিন কী খাওয়া যাবে এবং সেগুলি দিয়ে কী কী বানিয়ে খেতে পারবেন।
ছোলা
ছোলায় রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ। আবার সহজেই ছোলা দিয়ে অনেক কিছুই বানিয় নিতে পারেন। ছুটির দিনে অনেকটা ছোলা সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। বাকি সপ্তাহ ধরে স্যালাডে দিয়ে খেতে পারে। ছোলা-মাখা বানিয়ে খেতে পারেন। বাড়িতে তৈরি নানা রকম রোল বা র্যাপে দিতে পারেন। আবার বাড়তি পড়ে থাকলে তরকারিও তৈরি করে ফেলতে পারেন। ছোলা সিদ্ধ করে রাখা ছাড়াও আপনার হাতে বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। যেমন আভেনে রোস্ট করে রাখা। রোস্ট করার সময় সামান্য নুন, চাট মশলা মাখিয়ে রোস্ট করুন। খিদে পেলে মুখ চালানোর জন্য এটি ভাল বিকল্প।
পপকর্ন
পপকর্ন
বিকেলে খাওয়ার জন্য পপকর্ন বা়ড়িতে রাখুন। তবে চিজ বা ক্যারামেল দেওয়া বানানবেন না। এমনি সাধারণ পপকর্ন কিনে তৈরি করার সময় উপর থেকে সামান্য বিটনুন বা চাটমশলা ছড়িয়ে দিতে পারেন।
বেরি দিয়ে দই।
দই
খিদে পেলে শুধু দই খেয়ে পেট ভরে যাবে? বা খুব খিদের মুখে টকদই খেতে ইচ্ছা করবে? এখানেই আপনাকে একটু বুদ্ধি খাটাতে হবে। দইয়ের সঙ্গে ড্রাই ফ্রুট বা বেরি জাতীয় ফল মিশিয়ে খেতে পারেন। দারুণ সুস্বাদু স্ন্যাক এটা। আবার দই দিয়ে নানা রকম রায়তা বানিয়েও খেতে পারেন। শসা, পেঁয়াজ দিয়ে সাধারণ রায়তা থেকে শুরু করে পুদিনা-রায়তা— প্রচুর বিকল্প রয়েছে আপনার হাতে। রায়তা বানানো খুব ঝামেলার মনে হলে দই দিয়ে ঘোল বানিয়ে খান। একটু জিরে, নুন, পুদিনা পাতা দিয়ে বানিয়ে ফেলুন। দইয়ের সঙ্গে আমি মিশিয়ে আম লস্যি বানাতে পারেন। এগুলি খেলে মনও ভরবে, খিদেও মিটবে।
হামাস
হামাস
জনপ্রিয় পশ্চিম এশীয় খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম হামাস। কাবুলি ছোলা, তাহিনি (তিল থেকে তৈরি) দিয়ে তৈরি হামাস বাজারে যেমন কিনতে পারবেন, তেমনই ইউটিউবে প্রচুর রেসিপিও পেয়ে যাবেন। বাড়িতেই ছুটির দিনে অনেকটা একসঙ্গে তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। কয়েকটি উপকরণ এদিক ওদিক করলেই নানা স্বাদের হামাস তৈরি করে ফেলা সম্ভব। সাধারণত পিটা রুটি দিয়ে হামাস খাওয়ার চল রয়েছে। কিন্তু আপনি চাইলি অনেক কিছু দিয়েই খেতে পারেন। অনেক ফলের সঙ্গে হামাস ভাল যায়। তেমনই বিকেলের দিকে যদি গাজর বা শসা খান তা-ও হামাস দিয়ে খেতে পারেন। রুটির মধ্যে হামাস লাগিয়ে তাতে কিছু পেঁয়াজ, শসা, টমেটো দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পারেন স্বাস্থ্যকর রোলও।