বিকিকিনি: পুজোর আগে মেদিনীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোয় চাই অন্য সাজ। রোজকার জিন্স-টপ-কুর্তি-সালোয়ারের বাইরে একেবারে আলাদা কিছু। আর বঙ্গললনার এই সাধ পূরণে শাড়ির জুড়ি মেলা ভার। এ বার পুজো বাজারেও তাই শাড়ির আলাদা কদর, এমনকী জেলা শহরেও।
শারদোৎসবের সময় সব দোকানই রকমারি শাড়ি সম্ভার আনে। আর সেখানে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন খোঁজে আঠারো থেকে আটান্ন। মেদিনীপুরের মতো মফফ্সলের বাজারেও এ বার বুটিক শাড়ির রমরমা। বেশি বিকোচ্ছে লিনেন, পরিসেরা, মসলিন, কোনরদের মতো শাড়ি। মেদিনীপুরের এক বস্ত্র বিপণির কর্ণধার দেবযানী ঘোষ বলেন, “এ বার সব থেকে বেশি চলছে লিনেন, ডাস্ট ফর্মে। পরিসেরা, মসলিনও অনেকের পছন্দের।” দেবযানী ফ্যাশন ডিজাইনার। নিজেই শাড়ির নকশা করেন। তাঁর কথায়, “অনেকেই সাবেকের মধ্যে ফ্যাশন খুঁজছেন। রঙিন সুতোর কাজ চাইছেন। এককথায় শাড়িতে ইউনিক লুক চাইছেন।”
মেদিনীপুরের এক শাড়ি বিক্রেতা মানছেন, “কারও কারও বুটিক বেশ পছন্দ। নতুন প্রজন্মের মেয়েরাও শাড়ি নিয়ে উৎসাহী।’’ পুজোর দিনগুলোয় সকালে অনেকেই পছন্দ করেন হালকা রঙ ও জমির শাড়ি। আর রাতে জমকালো কিছু একটা। অষ্টমীতে তাঁতের শাড়ি এখনও আলাদা কদর। বেনারসি, বালুচরি, ঢাকাই, কাঁথা স্টিচ, মণিপুরী জুট সিল্ক, ঘিচা সিল্কের পাশাপাশি বাজার মাতাচ্ছে সাবেক সুতির শাড়িও। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা মুনমুন দত্ত বলছিলেন, ‘‘শাড়ির ব্যাপারে মেয়েরা বরাবরই খুঁতখুঁতে। বছরের অন্য সময় যে কোনও পোশাক চলতে পারে, তবে পুজোর ক’দিন শাড়িই চাই।”
এ বার হালকা রঙের শাড়িই বেশি বিক্রি হচ্ছে। টিয়া রঙা সবুজ, রয়্যাল ব্লু-র চাহিদা বেশি। শাড়ির পাড়-আঁচলে চেকও চলছে। কদর রয়েছে বাংলার শান্তিপুরি, বেগমপুরি, ধনেখালি, টাঙ্গাইল, অন্ধ্রপ্রদেশের তেলিয়া, ইক্কত, জয়পুরের হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টেড শাড়ি, ঝাড়খণ্ডের তসর ও মটকা, জয়পুর- গুজরাতের ছাপা শাড়ি, চেন্নাইয়ের চেট্টিনাড, কলমকারি ও চান্দেরি শাড়িরও। মেদিনীপুরের এক শাড়ি বিক্রেতার কথায়, “ট্র্যাডিশনাল শাড়ির সঙ্গেই ফ্যাশনে ফিরছে সুতির শাড়ির ইন্টেলেকচুয়াল লুক। সঙ্গে পিঠখোলা বা ডিপ নেক ব্লাউজে থাকছে ফিতের বাঁধন। আর ছোট হাতায় খানিকটা এমব্রয়ডারি।”
বাঙালি কন্যেদের শাড়িতে যে সব থেকে বেশি ঝলমলে দেখায়।