তরমুজের রং এত লাল কেন? ছবি: সংগৃহীত।
তরমুজ কিনতে গেলে এখন অনেকেরই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কিছু দিন আগেও তরমুজ কেনার সময়ে তার টুকটুকে লাল রং দেখে তবেই কিনতেন। বাড়িতে গিয়ে তরমুজ কাটার পর রং যদি ফ্যাকাশে বেরোত, তৎক্ষণাৎ বাজারে তা ফেরৎ দিতে ছুটতেন। ফল বিক্রেতার সঙ্গে রীতিমতো ঝগড়া বেধে যেত কারও কারও। কিন্তু এখন সেই হিসাব বদলে গিয়েছে। তরমুজ কিনতে গিয়ে টুকটুকে লাল রং দেখলে এখন অনেকেই ভুরু কুঁচকে বেশ সন্দেহের দৃষ্টিতেই তার দিকে তাকান। সমাজমাধ্যম, গণমাধ্যমের দৌলতে অনেকের মাথাতেই কিলবিল করতে থাকে নানা রকম প্রশ্ন। তরমুজের এই গাঢ় লাল রং রাসায়নিক বা ক্ষতিকর ডাইয়ের জন্য নয় তো? অসাধু ব্যবসায়ীরা লাভের আশায় ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ দিয়ে সেই রং তরমুজের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে রাখেননি তো? সেই ফল খেলে ক্যানসার হবে না তো?
সাধারণ মানুষের মনে ভয়ের উদ্রেক করে, এমন সব ভিডিয়ো প্রায়শই ঘোরাফেরা করে সমাজমাধ্যমে। ক্রেতাদের চোখে তরমুজকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ফলের মধ্যে না কি ‘ইরিথ্রোসাইন বি’ নামক একটি রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। ‘নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, এই রাসায়নিকটি শরীরে গেলে ডায়েরিয়া, পেটের গোলমাল, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। তবে এখানেই শেষ নয়, এই রাসায়নিকের ফল সুদূরপ্রসারী। গর্ভধারণ, বন্ধ্যাত্ব সংক্রান্ত জটিল সমস্যাও ডেকে আনতে পারে এটি।
খাবার জিনিসে ভেজাল মেশানো, কৃত্রিম রং ব্যবহার করার উদাহরণ রয়েছে ভূরি ভূরি। তবে তরমুজ নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। তেমনটাই জানিয়েছেন কৃশ অশোক। খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা করছেন কৃশ। তিনি নেটপ্রভাবীও বটে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। জানান, টাটকা ফলের গায়ে সুচ বেঁধালে এই গরমে যে কোনও ফল সহজেই পচে যাবে। তিনি বলেন, “বাইরে থেকে ইঞ্জেকশন দিয়ে কৃত্রিম রং প্রবেশ করানো হলেও তা ফলের ভিতর নির্দিষ্ট কিছু অংশে জমে থাকবে। ফলের ভিতর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে না। ফোটোশপ করে তরমুজের ভিতরের হালকা লাল রং গাঢ় করা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়।”